প্রথমে শুনুন একটি সাংস্কৃতিক খবর।
চীনের ইয়ুন নান ডেইলি প্রেস গ্রুপ ও ভারতের দ্য পাইওনিয়ারের যৌথ উদ্যোগে 'চীন-ইয়ুন নান ম্যাগাজিন' সহযোগিতামূলক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান ২ নভেম্বর চীনের খুন মিং শহরে অনুষ্ঠিত হয়। চীনা সংবাদমাধ্যমের ভারতে প্রকাশের প্রথম সংবাদমাধ্যম হলো 'চীন-ইয়ুন নান ম্যাগাজিন' ।
ভারতে দ্য পাইওনিয়ার ১৮৬৫ সালে চালু হয়, যা দেশটির সবচেয়ে প্রাচীন প্রধান সংবাদপত্রের অন্যতম। সারা দেশে এ সংবাদপত্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে।
নভেম্বর থেকে প্রতি সপ্তাহে দ্য পাইওনিয়ারে এক পৃষ্টার 'চীন-ইয়ুন নান' পর্ব প্রকাশিত হবে। এ পর্বে চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সর্বশেষ খবর তুলে ধরা হবে।
ভারতের ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় চীনের সবচেয়ে নিকটতম প্রদেশ হিসেবে, দেশটির সঙ্গে সহযোগিতা ও বিনিময়ে ইয়ুন নান প্রদেশের গুরুত্ব অনেক। ইয়ুন নান ডেইলি প্রেস গ্রুপের পার্টির সম্পাদক স্যু থি ই বলেন, বর্তমানে ইয়ুন নান প্রদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা ও বিনিময় জোরদার করছে চীন। আশা করি ইয়ুন নান একটি সেতু হিসেবে দু'পক্ষের আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উন্নয়ন করবে।
আমি জানি, ভারতের কয়েকটি প্রধান সংবাদপত্রের মধ্যে রয়েছে, দৈনিক জাগরণ, দৈনিক ভাস্কর, হিন্দুস্তান টাইমসসহ আরো অনেক। এ তিনটি সংবাদপত্র হিন্দু ভাষায় প্রকাশিত হয়, তবে হিন্দুস্তান টাইমস ইংরেজি ভাষায়ও প্রকাশিত হয়। আলাদা আলাদাভাবে পত্রিকা তিনটি ১ কোটি ৬ লাখ, ১ কোটি ৪ লাখ ও ১ কোটি ২ লাখ প্রচার সংখ্যা নিয়ে দেশটির সংবাদপত্রগুলোর প্রথম সারির দিকে অবস্থান করছে। তা ছাড়া, ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদপত্রের মধ্যে আছে 'দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া' ও 'হিন্দুস্তান টাইমস'।
আসলে আমাদের বাংলা বিভাগ (সিআরআই বাংলা) থেকে বাংলা ভাষায় একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। নাম 'পূবের জানালা'। পত্রিকাটি বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয়। এতে পর্যটন, গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক খবর, চীনের সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের পরিচয় তুলে ধরা হয়। শ্রোতাবন্ধুদের সমর্থনে আমাদের পত্রিকাটি আরো বৈচিত্র্যময় হবে বলে বিশ্বাস করি।
এবার শুনুন 'তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের উন্নয়ন ফোরাম' শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।
'তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের উন্নয়ন ফোরাম' ৩ নভেম্বর বেইজিংয়ে সমাপ্ত হয়। ফোরামে ২০১৭ সালের তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের ৪১টি বিনিময় প্রকল্প প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রধান বিষয় হিসেবে রয়েছে যুবকদের বিনিময় প্রকল্প।
জাতীয় তাইওয়ান গবেষণালয়ের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট চৌ জি হুয়াই ফোরামে এক ভাষণে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ান প্রণালীর দু'পারের যুবকযুবতীদের দায়িত্ববোধ, মিশনবোধ ও অনুরাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রণালীর দু'পারের যুবকযুবতীদের মধ্যে আরো ঘনিষ্ঠ বিনিময় বজায় রাখা হবে, এতে গভীর মৈত্রী প্রতিষ্ঠিত হবে। তা চীনের ভবিষ্যত আরো উজ্জ্বল করবে।
আসলে চীনের অভ্যন্তরীণ যুব-বিনিময় ছাড়াও, অন্যদেশের যুব-বিনিময়ের ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে চীন। প্রায় প্রতি বছর চীনের বিনিয়োগে বাংলাদেশের যুব-প্রতিনিধিদল চীন সফর করেন। যেমন চলতি অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদল চীন আন্তর্জাতিক বেতার সফর করেন।
বন্ধুরা, এখন শুনুন একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।
চীনের জাতীয় গণকংগ্রেসের তিব্বত প্রতিনিধিদল গত ২ ও ৩ নভেম্বর শ্রীলংকা সফর করেন। সফরে দলটি আলাদাভাবে কলম্বোর ডেপুটি স্পিকার ও লংকান বৌদ্ধধর্মবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
প্রতিনিধিদলের প্রধান ও তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নতুন ও পুরাতন তিব্বতের অবস্থা শ্রীলংকার কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেন। বিশেষ করে তিব্বত মুক্ত হওয়ার পর, রাজনৈতিক অবস্থা, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং অবাধ ধর্মীয় স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে লক্ষণীয় সাফল্যের কথা তুলে ধরেন তারা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া তিব্বতের বর্তমান সুখী ও সুন্দর জীবন সম্ভব হত না। তিব্বতের বিভিন্ন জাতির মানুষ এজন্য সিপিসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে। সেই সঙ্গে তিব্বত সমস্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাও ব্যাখ্যা করেন প্রতিনিধিদল।
বৈঠকে চীনের তিব্বতের অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করেন লংকান কর্তৃপক্ষ। আর্থ-বাণিজ্য ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন-শ্রীলংকা যোগাযোগ জোরদার করতে কলম্বোর আগ্রহের কথাও জানান তারা।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আরেকটি সাংস্কৃতিক খবর শুনবো।
চীনা আন্তর্জাতিক বাদ্যযন্ত্র এসোসিয়েশনের উদ্যোগে ২০১৬ চীন আন্তর্জাতিক বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শনী সম্প্রতি শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বেলজিয়াম, চেক, ফ্রান্স ও চীনসহ ১০টি দেশ ও অঞ্চলের বাদ্যযন্ত্রীদল প্রদর্শনীতে অংশ নেন। মোট ৩০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ১৯'শ দেশি-বিদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠান তাদের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নেয়।
পিয়ানো প্রদর্শনীস্টলে ক্রিস্টাল পিয়ানো, বসেনদরফার পিয়ানোসহ বিশ্বের বিভিন্ন সেরা পিয়ানো প্রদর্শন করা হয়। বলতে হবে, এবার এ প্রদর্শনীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো পিয়ানো স্টল।
প্রদর্শনীকালে জার্মানির শীর্ষ পিয়ানো ব্র্যান্ড জিইবিআর.শুলজের নতুন দ্রব্য প্রকাশিত হয়েছে। জার্মানির স্টেরিনবার্গ পিয়ানো কোম্পানি ও স্টেফিজ অ্যান্ড শুলজ জিএমবি পিয়ানো কোম্পানির কৌশলগত বিনিয়োগ সহযোগিতা ভবিষ্যতে পিয়ানো বাজারে নতুন শক্তি বয়ে আনবে।
পিয়ানো কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তি ফ্রেডেরিক স্টেফিস বলেন, জার্মানিতে পিয়ানো তৈরি করা হলো একটি শিল্প, তা একটি লাইফস্টাইল, যেখানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য স্টাইলের মিশ্রণে পিয়ানোর মাধ্যমে জীবনের সৌন্দর্য দেখা যায়। চীনে পিয়ানো ব্র্যান্ড জিইবিআর.শুলজের উন্নয়ন ও ভবিষ্যত নিয়ে কোম্পানির প্রেসিডেন্টের আস্থা আছে। তিনি বলেন, চীনের নির্মিত জিইবিআর.শুলজ পিয়ানো জার্মানির প্রযুক্তি ও নির্মাণ উপাত্ত ব্যবহার করছে। জার্মান কারিগরী ব্যক্তিরা নির্মাণ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করছেন।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com।
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। অনুষ্ঠান শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান (জিনিয়া/টুটুল)