ছেংদু যুবকদের ম্যাগাজিন স্বপ্ন
  2017-02-04 10:23:37  cri
চাং চিয়েনলান হলেন ছেংদু শহরের একটি মেয়ে। দুই বছর আগে তিনি তার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জনকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাগাজিন 'কে ই' প্রতিষ্ঠা করেন। ছেংদু শহরের গল্প সারা চীনের পাঠকদের জানাতে এ উদ্যোগ হাতে নেন তিনি। সে সময় তিনি অনেক বন্ধুর সহায়তা পান।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় চাং চিয়েনলানের বিষয় ছিল ভিজ্যুয়াল ডিজাইন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষে তার ব্যবসা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তিনি মনে করতেন ব্যবসায় তার অভিজ্ঞতা কম। তাই প্রথমে তিনি বেইজিংয়ে একটি ৪এ বিজ্ঞাপন কোম্পানিতে কাজ নেন। তিন বছর কাজ করার পর তিনি নিজে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'বেইজিংয়ে তিন বছরে আমি বহু নাটক দেখেছি। আমি অনেক বিদেশি ম্যাগাজিন পড়েছি। আমি এ ধরণের ম্যাগাজিন পড়তে পছন্দ করি। তখন আমি নিজস্ব ম্যাগাজিন প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা করি।'

একবার তিনি ছেংদুতে ফিরে গিয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ও ঘনিষ্ঠ বন্ধু স্যুয়ে রংকে ম্যাগাজিন প্রকাশের কথা জানান। দু'জন এভাবে 'কে ই' ম্যাগাজিন প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেন।

'কে ই' ম্যাগাজিনে সুন্দর ও সাবলীলভাবে সাধারণ মানুষের কাছে ছেংদু'র গল্প তুলে ধরা হয়। চাং চিয়েনলান বলেন, তিনি ও স্যুয়ে রং আশা করেন, এ ম্যাগাজিনটি হবে সাধারণ মানুষের জন্য। তিনি বলেন, 'আমরা ম্যাগাজিনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আমরা মনে করি, বর্তমান চীনে অধিকাংশ ম্যাগাজিনে সাধারণ মানুষের জীবন উঠে আসেনা। আমরা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে লিখতে চাই। আমরা কাজ করা, খাওয়া, ঘুমানো ছাড়াও আরও মজার ও সুন্দর বিষয় তুলে ধরতে চাই।'

নতুন গণমাধ্যমের দ্রুত উন্নয়নের যুগে ম্যাগাজিনের প্রকাশ ও বিকাশ বেশ কঠিন। স্যুয়ে রং বলেন, তারা দু'জন ডিজাইনের কাজ করার বেতন দিয়ে এ ম্যাগাজিন প্রকাশ করেন। কিন্তু তারা দু'জন আসলে একা নন, কারণ তাদের অনেক বন্ধু রয়েছে, যারা তাদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছেন। স্যুয়ে রং বলেন, 'আমি এবং চাং চিয়েনলান হলেন ফুল টাইম, অন্য কয়েকজন হলেন পার্ট টাইম। আমরা একসঙ্গে ছবি তুলি এবং প্রবন্ধ লিখি।'

'কে ই' ম্যাগাজিন পরিবারের একজন সদস্য হলেন একজন লেখক। তিনি চাং চিয়েনলান ও স্যুয়ে রংয়ের ধারণার প্রশংসা করেন। সেজন্য তিনি 'কে ই' ম্যাগাজিনের সদস্য হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'যদি তারা কোনো বিষয়ে মজা পান, তাহলে সে বিষয়ে তারা লেখার চেষ্টা করেন। যেমন পাহাড়ি অঞ্চল ও কোনো দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সাক্ষাত্কার নেন তারা। আমি তাদের ধারণার প্রশংসা করি।'

চাং ছি হলেন একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ডিজাইনার। আলোকচিত্রে তার বেশি আগ্রহ রয়েছে। বন্ধুদের আমন্ত্রণে তিনি 'কে ই' ম্যাগাজিনের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। আসলে ম্যাগাজিনটির ভবিষ্যত উন্নয়নের বিষয়ে তার সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশায় তিনি অব্যাহতভাবে এ দলে থাকবেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমাদের আসলে তেমন কোনো বেতন নেই। কিন্তু আমাদের একটি স্বপ্ন ও ধারণা রয়েছে। আমরা আশা করি, আমাদের স্বপ্নটি এ ম্যাগাজিনের সঙ্গে বড় হয়ে উঠবে।'

এ পর্যন্ত 'কে ই' ম্যাগাজিনের তিনটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে চতুর্থ ও পঞ্চম সংস্করণের কাজ চলছে। নির্দিষ্ট কর্মসূচি অনুযায়ী এক বছরে চারটি সংস্করণ বের হবার কথা। কিন্তু ম্যাগাজিনের অর্থ ও অন্যান্য কারণে দুই বার কম প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু চাং চিয়েনলানের দল কখনো ম্যাগাজিন পরিবার ছেড়ে যায়নি।

ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার লি আইইয়ৌ বলেন, এ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে তিনি ভিন্ন ছেংদু দেখেছেন। এ ম্যাগাজিন পরিবারে অংশ নিয়ে তার জীবন আরও সমৃদ্ধ হবে বলে তিনি মনে করেন। "আমি দ্বিতীয় সংস্করণের একটি প্রবন্ধে এ ম্যাগাজিন পরিবারে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছি। আমি ম্যাগাজিন পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে গর্ব বোধ করি। আমি প্রবন্ধটির শেষে লিখেছি, আমি আশা করি, 'কে ই'র সঙ্গে আরও বেশি সময় থাকতে পারি।"

চাং চিয়েনলান বলেন, 'কে ই'তে শুধু ছেংদু শহরের গল্প লেখা হলেও তা সারা চীনে প্রকাশিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে তা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ভবিষ্যতে 'কে ই' ছেংদু ছাড়া ছংছিং শহর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দৃষ্টি দেবে।

'কে ই' প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরবর্তী দুই বছর বেশ কঠিন ছিল। যদিও কোনো কোনো বিষয়ে সদস্যদের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়, তবুও কোনো সদস্য এখান থেকে চলে যেতে চায়নি। চাং চিয়েনলান বলেন, গত এপ্রিলে 'কে ই' ম্যাগাজিন সিঙ্গাপুরের শিল্প ও বই মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানে পাঠকদের প্রশংসা তাদের কাজে আরও বেশি উত্সাহ দিয়েছে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040