0519china
|
আসলে চপস্টিকস ব্যবহার করা খুব সহজ। খাবার গ্রহণের সময় চপস্টিকসের দু'টি কাঠির একটি হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী ও মধ্যমাঙ্গুলি দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এ কাঠিটি উপরে থাকে এবং খাবার তোলার সময় নড়াচড়া করে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় কাঠিটি বৃদ্ধাঙ্গুলি ও অনামিকার মধ্যে স্থির থাকে।
চপস্টিকস চীনাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য উপাদান। তারা একে অপরকে চপস্টিকস উপহারও দিয়ে থাকেন। চীনের 'তাও' ধর্মদর্শনের সাথে চপস্টিকসের দুই কাঠির সম্পর্ক আছে। 'তাও' ধর্মে বিশ্বাস করা হয়, পৃথিবীতে দুই ধরনের শক্তি আছে: 'ইন' ও 'ইয়াং'। এ দুই শক্তিই পৃথিবী সৃষ্টি করেছে। 'খুয়াই যি'-র দু'টি কাঠির একটি 'ইন' এবং অন্যটি 'ইয়াং'।
চপস্টিকসের একদিক গোলাকার এবং অন্যদিক চতুর্ভুজাকৃতির। প্রাচীনকালে চীনের মানুষ বিশ্বাস করত যে, আকাশ গোলাকার এবং পৃথিবী চতুর্ভুজাকৃতির। 'খুয়াই যি'র একদিক আকাশ এবং অন্যদিক পৃথিবীর প্রতীক।
চীনারা খুয়াই যি বা চপস্টিকস ব্যবহার করার সময় বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলেন। তারা সাধারণত বাটিতে ভাত খান। খাওয়ার সময় যদি কোনো কারণে 'খুয়াই যি' ব্যবহার না-করেন, তখন তারা ভাতের মধ্যে কাঠি দুটি দাঁড় করিয়ে রাখেন না। কারণ, প্রাচীনকালে পূর্বপুরুষ বা ঈশ্বরের স্মরণে ধুপকাঠি জ্বালিয়ে তা বাটিতে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। তাই, এভাবে না-করে চীনা মানুষ 'খুয়াই যি' কাপ বা বাটির পাশে শুইয়ে রাখেন।
চীনারা 'খুয়াই যি' বাটিতে বা কাপে ঢুকিয়ে শব্দ সৃষ্টি করেন না। কারণ, আগের দিনে চীনের ভিক্ষুকরা 'খুয়াই যি' বাটিতে ঠুকিয়ে আওয়াজ করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করত। আপনি যদি এমন করেন, তবে চীনা মানুষ আপনাকে ভুল বুঝতে পারে।
খাওয়ার সময় কোন খাবারটি তুলবেন, তা নিশ্চিত না-হয়ে চীনা মানুষ কখনোই 'খুয়াই যি' বিভিন্ন খাবারের ওপর ঘোরাবেন না। এটাকে তারা অভদ্রতা হিসেবে দেখেন। চপস্টিকস্ মুখ দিয়ে কামড়ে ধরা বা চপস্টিকস্ দিয়ে অন্যের দিকে নির্দেশ করাকেও চীনা মানুষ অভদ্রতা জ্ঞান করে। চপস্টিকস্ দিয়ে একবার খাবার তুলে তা আবার প্লেটে রাখাও পছন্দ করেন না তারা।
চীনারা বিশ্বাস করেন, চপস্টিকস্ দিয়ে খাওয়া সবচে ভাল অভ্যাস। তারা মনে করেন, প্রতিদিন চপস্টিকস ব্যবহার করলে মানুষের হাত আরও স্মার্ট হয়, মস্তিষ্কও অধিক সচল থাকে। আপনি চপস্টিকস ব্যবহার করতে পারেন না? একটু চেষ্টা করুন। দেখবেন ঠিক পারবেন।