বেইজিংয়ে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নীলপত্র প্রকাশিত
  2017-06-28 15:12:53  cri

'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাব উত্থাপিত হবার পর বিগত তিন বছরে চীনের সাথে সংশ্লিষ্ট দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর শতাধিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরই মধ্যে গত ২৭ জুন চীনের সমাজ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি 'এক অঞ্চল, এক পথ' নীলপত্র: 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়ন প্রতিবেদন' প্রকাশ করে।

এটি 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগসংশ্লিষ্ট দ্বিতীয় নীলপত্র। নীলপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, রেশমপথ অর্থনৈতিক অঞ্চলসংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়নে অংশগ্রহণের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। প্রাথমিকভাবে এ উদ্যোগের সফলতাও দৃষ্টিগোচর হচ্ছে।

চীনের সমাজ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ ও মধ্য-এশিয়া গবেষণালয়ের পরিচালক লি ইয়োং ছুয়ান বলেন, "আমাদের এই নীলপত্র প্রকাশের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সবাইকে আরো সঠিকভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' সম্পর্কে ধারণা দেওয়া। নীলপত্রে তিনটি অংশ আছে: এক. 'এক অঞ্চল, এক পথ' সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনা; দুই. এ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রকল্প সহযোগিতা; এবং তিন. চীনের অভ্যন্তরীণ অবস্থা।"

নীলপত্রে বলা হয়েছে, 'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনা বেড়েছে এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উন্নয়ন-কৌশল ও পরিকল্পনাও পরস্পরের সাথে সমন্বিত হবার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২০১৬ সালে বিভিন্ন ধরনের দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উত্পাদন খাতের সহযোগিতা তহবিলের পরিমাণ ১০,০০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' প্রস্তাব অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এর প্রধান দিক হলো আন্তঃযোগাযোগ ও আন্তঃসংযোগ, বাণিজ্যের সহজায়ন, এবং উত্পাদন খাতে সহযোগিতা। তা ছাড়া, নীতিগত যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় জোরদার করার কথাও এতে বলা হয়েছে।

নীলপত্রে আরও বলা হয়েছে, তিন বছরে অর্জিত প্রাথমিক সাফল্য দেখে বিভিন্ন মহল এ প্রস্তাবের প্রতি আস্থা দেখাচ্ছেন। তারা এ প্রস্তাবের আওতায় বিভিন্ন পক্ষের সহযোগিতায় অর্জিত সাফল্যকেও উপলব্ধি করতে পারছেন।

সমাজ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণাকেন্দ্রের গবেষক ওয়েই মিন মনে করেন, গত এক বছরে চীনের সাথে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আন্তঃসংযোগ ও আন্তঃযোগাযোগ এবং উত্পাদন খাতের সহযোগিতাসহ নানা ক্ষেত্রের সহযোগিতা দ্রুত উন্নত হয়েছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে চীনের সহযোগিতায় বহু ক্ষেত্রে বাস্তব সফলতাও অর্জিত হয়েছে।

ওয়েই মিন বলেন, 'চীন-মধ্যপ্রাচ্য সহযোগিতা আরও বিস্তৃত হয়েছে; দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও পারস্পরিক বিনিয়োগও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঙ্কারা থেকে ইসলামাবাদগামী দ্রুতগতির রেলপথ সুষ্ঠুভাবে চালু হয়েছে। এটা চীনের দ্রুতগতির রেলপথ প্রযুক্তি রফতানির প্রথম প্রকল্প। বেইদো উপগ্রহব্যবস্থা সৌদি আরবে স্থাপিত হয়েছে। তা ছাড়া, অর্থ ও পর্যটন খাতে সহযোগিতাও সম্প্রসারিত হয়েছে।'

নীলপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ বাস্তবায়নে আইনগত ঝুঁকিও রয়েছে। কারণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, আইন ব্যবস্থা, এবং সামাজিক রীতিনীতি ভিন্ন। ফলে শ্রমিক, পরিবেশ, কর আদায়, বিদেশি পুঁজির প্রবেশ, নির্মাণকাজের অনুমোদনসহ নানা ক্ষেত্রেই ঝুঁকি রয়েছে।

নীলপত্র অনুসারে, 'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর আইনগত ভিত্তি গড়ে তুলতে বিভিন্ন পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা দরকার। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনার কাজ আরও জোরদার করতে হবে। সরকার সক্রিয়ভাবে সহযোগিতার প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আইনগত ঝুঁকি মোকাবিলার সঠিক উপায় অন্বেষণ করবে বলেও নীলপত্রে উল্লেখ করা হয়। (ইয়ু/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040