0818china
|
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আদিতে কিন্তু 'শান জি' শরীরে বাতাস দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হ'ত না। পৃথিবীতে প্রথম হাতপাখা ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে চীন অন্যতম। চীনের 'শান জি' আদিতে ছিল খুব বড় এবং বনমোরগের রঙিন পালক দিয়ে তৈরি। সাধারণত সম্রাট যখন ভ্রমণে বের হতেন, তখন তাকে রোদ ও ধুলাবালি থেকে রক্ষা করতে ওই বিশাল শান জি ব্যবহার করা হতো।
প্রাচীনকালে বিভিন্ন ধরনের শান জি প্রচলিত ছিল। হাড়, মূল্যবান পাথর বা হাতির দাঁত দিয়ে তৈরি হতো 'থুয়ান পাখা'-র হাতল। হাতলের নিচে ঝুলানো থাকত চাঁদ আকৃতির ঝালর, যা ছিল শুভ কামনার প্রতীক। 'থুয়ান পাখা'-কে তাই 'হ্য হুয়ান পাখা' তথা 'আনন্দমিশ্রিত পাখা' বলেও ডাকা হতো। প্রাচীন চীনের নারীরা এ ধরনের হাতপাখা খুব পছন্দ করতেন। এ ধরনের পাখার ইতিহাস হাজার বছরের।
প্রাচীন চীনে শিক্ষিত মানুষের পছন্দ ছিল 'জ্য শান' বা ভাঁজ-করা-পাখা। ভাঁজ-করা-পাখার উপর ফুটিয়ে তোলা হয়নানা ধরনের নকশা, লেখা হয় কবিতা। শিক্ষিত মানুষের হাতে এ ধরনের পাখা ভদ্রতার আমেজ সৃষ্টি করত। আধুনিক চীনেও ভাঁজ-করা-পাখা বেশ জনপ্রিয়। খুব সুন্দর-করে-আঁকা-ছবির উপর কোনো বিখ্যাত শিল্পীর স্বাক্ষর থাকলে সেটি পায় আলাদা মাত্রা; দামও যায় বেড়ে।
আজকাল হস্তশিল্প হিসাবে 'শান জি' গুরুত্ব পায়। এ ছাড়া, নৃত্য, নাটক ও মার্শাল আর্টেও হাতপাখা ব্যবহৃত হয়। কখনও সুযোগ পেলে 'হাতপাখা নৃত্য' বা 'হাতপাখা মার্শাল আর্ট' দেখতে ভুলবেন না যেন!