বাংলাদেশের সাংবাদিকের চোখে ব্রিক্সঃ অভ্যন্তরিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়ানো উচিত
  2017-09-02 18:17:48  cri

 


'ব্রিক্স' বর্তমান বিশ্বের একটি সুপরিচিত অর্থনৈতিক জোট। এ জোটের সদস্যরাষ্ট্রগুলো হচ্ছে: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এ পাঁচটি উদীয়মান দেশের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এই ব্রিক্সের নবম শীর্ষসম্মেলন ৩ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর চীনের ফুচিয়েন প্রদেশের সিয়ামেন শহরে অনুষ্ঠিত হবে। এবারের শীর্ষসম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: 'ব্রিক্স অংশীদারি সম্পর্ক জোরদার করে উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা চালানো'।

আজকের 'খোলামেলা' আসরে ব্রিক্সের নবম শীর্ষসম্মেলন নিয়ে কথা বলছি বাংলাদেশের ফাইন্যানসিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার সাংবাদিক জোবায়ের হাসানের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে চীনে অবস্থান করছেন এবং নিজেই সিয়ামেন গিয়ে এবারের ব্রিক্স শীর্ষ সম্মেলনে কাভার করছেন।

নিচে জনাব জোবায়ের হাসানের সাক্ষত্কারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-

বর্তমানে বিশ্বের নানা জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় অনেক উন্নত দেশ উন্নয়নে চালিকাশক্তির অভাব বোধ করছে। ব্রিক্স জোটে সহযোগিতায় অংশীদারি সম্পর্ক এবং মূলনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এই অবস্থায় ব্রিক্স দেশগুলোর নেতৃত্বের উচিত্ সকল উন্নয়নশীল দেশগুলোর হাতে হাত ধরে অভিন্ন উন্নয়ন সন্ধান করা। তাঁর বিশ্বাস, ব্রিক্স সহযোগিতার পরবর্তী দশক বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

সিয়ামেনে অনুষ্ঠিত ব্রিক্সের শিল্প ও বাণিজ্য ফোরামে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের বক্তৃতায় ব্রিক্সের ভবিষ্যত নিয়ে আস্থাশীল জনগণ। বিগত দশ বছরে বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে ব্রিক্সের ভূমিকা প্রশংসনীয় এবং ভবিষ্যতে বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে ব্রিক্স আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তাঁরা মনে করেন।

ব্রিক্সভূক্ত দেশগুলোর অভ্যন্তরিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরো বাড়ানো উচিত বলে উল্লেখ করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, ত বে ব্রিকসের অভ্যন্তরিন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহযোগিতার আরো অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১৬ সালে পাঁচটি দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগ ১৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, কিন্তু এর মধ্যে ব্রিকস সদস্য দেশের মধ্যে বিনিয়োগ মাত্র ৫.৭ শতাংশ। বিশ্ব জিডিপিতে ব্রিকসের অবদান ২৩ শতাংশ, বৈশ্বিক বাণিজ্যে ব্রিক্সের অবদান ১৬ শতাংশ, কিন্তু ব্রিক্সের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্যের পরিমাণ মোট বাণিজ্যের মাত্র ৬ শতাংশ। ব্রিকস দেশগুলোকে এই বিষয়ে গুরুত্বের সাথে মনোযোগ দিতে হবে এবং একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে, যাতে জনগণের টেকসই উন্নয়নের জন্য নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়।

একই সঙ্গে ব্রিক্সের নতুন উন্নয়ন ব্যাংক (এনডিবি), যা সাধারণভাবে ব্রিকস ব্যাং নামে পরিচিত, তাকে আরও সক্রীয় ভূমিকা পালন করার জন্য চীন সরকার অতিরিক্ত ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পুঁজি দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকটি এ পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে, যা পরিবেশগত সুরক্ষা, কার্বন হ্রাস, নতুন শক্তি এবং জনগণের জীবনমান উন্নতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তাছাড়া ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা বাড়ানোও খুব জরুরী। যদিও তাদের পরিস্থিতি ভিন্ন, কিন্তু সবাই বিশ্ব অর্থনীতি ও প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তা এক দিকে ব্রিক্সভুক্ত দেশের নেতৃবৃন্দের স্বদিচ্ছার ওপরে নির্ভর করে, আরেক দিকে পারস্পরিক উদ্বেগ, কল্যাণ ও দাবির ওপরে যথেষ্ট সহানুভূতি বোধ করতে পারে কিনা তারও ওপরে নির্ভর করে। পরবর্তী দশ বছরে ব্রিক্সদেশগুলো আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করি।

(স্বর্ণা/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040