চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির উনিশতম জাতীয় কংগ্রেস সংক্রান্ত বিশেষ সাক্ষাৎকার-ডঃ মোস্তাক আহমেদ গালিব
  2017-09-29 09:41:57  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, সাপ্তাহিক 'খোলামেলা' অনুষ্ঠানে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, আমি ইয়াং ওয়েই মিং-স্বর্ণা। স্বর্ণ শরত্কালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। এ অধিবেশনে চীনের নতুন নেতৃগ্রুপ গঠিত হবে। এবারের অধিবেশন চীন আর বিশ্বের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।

গত পাঁচ বছরে কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চীনে চোখে পড়ার মতো কী কী পরিবর্তন সাধিত হয়েছে? বিশ্বে চীনের ভূমিকা কিভাবে মূল্যায়ন করা যায়? সব বিষয় নিয়ে কথা বলছি চীনের উহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলাজির 'এক অঞ্চল, এক পথ গবেষণা কেন্দ্রে'র গবেষক ডঃ মোস্তাক আহমেদ গালিবের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে উহান ইউনিভার্সিটিতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' বিষয়ে পোস্ট ডক্টরাল কোর্সে অধ্যয়নরত।

নিচে ড. মোস্তাক আহমেদ গালিবের সাক্ষত্কারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো-

১। ডঃ গালিব, আপনাকে আমাদের "খোলামেলা" অনুষ্ঠানে স্বাগতম। কদিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির উনিশতম জাতীয় কংগ্রেস। এবারের অধিবেশন চীন এবং সমগ্র বিশ্বের ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। চীনের উন্নয়নের একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে এবারের অধিবেশনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো কি শ্রোতাদের জানাবেন?

ধন্যবাদ, আপনাকে।আগামী ১৮ই অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির উনিশতম জাতীয় কংগ্রেস। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে চীনের উন্নয়ন ও স্থিতি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। এসব দিক মাথায় রেখেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ কংগ্রেস। এবারের অধিবেশন চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শি জিন পিং এর দ্বিতীয় মেয়াদের কার্যক্রমের একটি সাধারণ নির্দেশিকা, যেখানে পার্টির মূল ভাবনাটি থাকবে চীনা ধাঁচের সমাজতন্ত্রের আলোকে একটি সামাজিক কাঠামো গঠন(xiǎokāngshèhuì) যেখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণী বিশেষ গুরুত্ব পাবে ও যার মাধ্যমে শতাব্দীর যুগল লক্ষ্য (兩個一百年)পূরণে এগিয়ে যাবে চীন।এখন এই লক্ষ্য অর্জনের পথটি কি হবে, কিভাবে দ্রুততম সময়ে ও স্বল্প উপযোগের মাধ্যমে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে সে বিষয়ে কম্যুনিস্ট পার্টির একটি নিজস্ব মতাদর্শ রয়েছে- এই মতাদর্শের সমন্বিত যোগফলই হল "চীনা স্বপ্ন"। মোটাদাগে বলতে গেলে এবারের কংগ্রেসে এই বিষয়গুলোই আলোচনার কেন্দ্রে থাকবে- কারণ পার্টির বর্তমান স্বপ্নটি আসলে "কম্যুনিস্ট আন্দোলন মানে সবাই মিলে গরীব হয়ে যাওয়া নয়, বরং সবাই মিলে বড়লোক হওয়া", মহামতি কমরেড দেং শিয়াও পিং এর স্বপ্ন দেখার সেই "দুঃসাহসের" ওপর দাঁড়িয়েই কমরেড শি জিন পিং এর হাত ধরে আজকের চীনের হাওয়ায় উড়ছে "চীনা স্বপ্ন"।

২। আপনি জানেন যে ,চীনের নেতৃবৃন্দের দেশন্নয়ন ও পরিচালনা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা বা অভিজ্ঞতা চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এবারের উনিশতম অধিবেশনেও পার্টির সংবিধান সংশোধনের পরিকল্পনা আছে। গত পাঁচ বছরে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টি দেশ পরিচালনায় বা নীতি নির্ধারণে কোন কোন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলে আপনি মনে করেন ?

আজকের চীন যে একটি শক্ত ও মজবুত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে তার পেছনে রয়েছে অনেক রক্ত,শ্রম ও ঘামের ইতিহাস। রক্ত, শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে অর্জিত এই অভিজ্ঞতাগুলো কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরীতে পাওয়া যায় না কিংবা পাওয়া যায় না কোনও সমাজবিজ্ঞানি বা দার্শনিকের তত্ত্বে । এইযে বলা হচ্ছে "চীনা ধাঁচের সমাজতন্ত্রের" কথা , এই সমাজতন্ত্র আর মার্কসের তত্ত্বের মধ্যেও রয়েছে খুব সূক্ষ্ম কিছু পার্থক্য । রুশদের জন্য যে পদ্ধতি ফলপ্রসূ তা হয়তো চীনাদের ক্ষেত্রে ভালো ফল নাও দিতে পারে, সেই কারনে কোনও সার্বিক,সাধারন তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে নয় বরং বিগত বছরগুলোর সঞ্চিত অভিজ্ঞতার আলোকে নেয়া হয়েছে চীনের উন্নয়নমূলক সমস্ত সিদ্ধান্ত।

পার্টির নীতি নির্ধারনী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও এর বাইরে নয়। বিগত বছরগুলোতে সারা পৃথিবীজুড়েই ছিল বৈশ্বিক মন্দা। মন্দার কোপানল থেকে বাঁচতে গেলে যেকোনো দেশের সরকারকে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনার পথে হাঁটতেই হবে। এক্ষেত্রে আমরা দেখেছি ব্রাজিল,রাশিয়া প্রভৃতি দেশ মন্দা মোকাবিলায় প্রণোদনার পথে হেঁটেও সাফল্য পায়নি। আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে কমরেড শি জিন পিং সরকারের প্রথম মেয়াদের সাফল্য। কিভাবে? সরকার এখানে শুধু প্রণোদনা দিয়েই বসে থাকেনি, অর্থনৈতিক সাফল্যের লক্ষ্যে প্রণোদনার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরনের উদ্দেশ্যে চালিয়েছে সর্বস্তরে দুর্নীতি দমনের বিশেষ অভিযান। শ্রীযুক্ত নরেন্দ্র মোদী সরকার বিস্তর ঘি ঢেলে কাঁড়ি কাঁড়ি নোট বাজেয়াপ্ত করে যা করতে পারেনি চীন সরকার নিশ্চিতভাবেই তা করে দেখিয়েছে অত্যন্ত সফল দূর্নীতি দমন অভিযানের মাধ্যমে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে " জিরো টলারেন্স" নীতি অনেক দেশই অনুসরণ করে থাকে তবে এইক্ষেত্রে চীন সরকারের অর্জন দৃষ্টান্তমূলক। উন্নয়নশীল দেশমাত্রই অবগত যে দুর্নীতি উন্নয়নকে কুরেকুরে খায়, কিন্তু তাঁরা অনেকেই এই মারণব্যাধির সামনে অসহায়,এক্ষেত্রে চীন অতি অবশ্যই একটি ব্যাতিক্রম। তদুপরি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও চীনা সরকারের ছিল বেশকিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য। বিশেষত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চীন সরকারের কূটনীতিক সাফল্য উল্লেখযোগ্য ।

৩। চীনের সমাজতন্ত্রের একটা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে; সেই সাথে আছে এ-বৈশিষ্ট্যের ছায়ায় গড়ে ওঠা একটি অনন্য সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল। চীন যে পদ্ধতিতে বিগত কয়েক দশকে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে , সে পদ্ধতি তথা "চীনা পদ্ধতি" নিয়ে বিশ্বব্যাপী আগ্রহের কমতি নেই। এ ব্যাপারে আপনার পর্যবেক্ষণ কি ?

সমাজতন্ত্রের সঙ্গে সাংস্কৃতিক যোগ একটি বহুল চর্চিত মতবাদ। আমি একটু আগেই উল্লেখ করেছি "চীনা ধাঁচের সমাজতন্ত্রের" কথা, এই বিষয়টি কিন্তু চীনা সমাজতন্ত্রের সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অণুঘটকের ভূমিকা রেখেছে।সোভিয়েত সমাজতন্ত্র যেখানে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছিল, চীনা নেতৃবৃন্দ কিন্তু ঠিক সেই জায়গাটাতে গিয়ে সঠিকভাবে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন ।মূল উদ্দেশ্য ঠিক রেখে ; চীনা সমাজ, কৃষ্টি ও দর্শনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে এই মতবাদ। যেহেতু প্রতিটা দেশ আলাদা, প্রতিটা সমাজ আলাদা, প্রতিটা জাতি আলাদা, প্রতিটা মানুষ আলাদা কাজেই তাদের মধ্যে ভিন্নতা ও বৈচিত্র্য রইবেই। এখন তাঁদের জন্য কোনও "রেডী-মেড " শাসনতন্ত্র যদি চালিয়ে দেয়া হয় তাহলে তা অনেকসময়ই লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি করে। এখানেই "চীনা ধাঁচের সমাজতন্ত্রের" গুরুত্ব নিহিত, যার ওপর ভিত্তি করে রচিত হয়েছে বহুল আলোচিত উন্নয়নের "চীনা মডেল" ।যদিও চীনা মডেল কোনও একক ধারনা নয় , এটি আসলে যুগ যুগ ধরে চীনাদের উন্নয়ন ভাবনার সঞ্চয় যার শুরু হয়েছিলো চীনা জনগনের মহান নেতা কমরেড মাও জে দং এর হাত ধরে, তিনি বলেছিলেন "চীনা সমাজতন্ত্র এখনও সমাজতন্ত্রের প্রাথমিক স্তরে", তাঁর এ কথা পরবর্তীতে প্রতিধ্বনিত হয়েছে পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃবৃন্দের মধ্যেও। যার ফলে মূল উন্নয়ন নীতিমালাগুলো কখনোই বিশেষ বাঁধাগ্রস্ত হয়নি। যদিও অনেক পশ্চিমা অর্থনীতিবিদই অতীতে এই চীনা মডেলের সাফল্য নিয়ে সন্দিহান ছিলেন কিন্তু উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের সাফল্য (বিশেষত বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় সাফল্য) তাঁদেরকে এই মডেল সম্পর্কে আবার ভাবতে বাধ্য করেছে।

এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের চিন্তা চেতনা জুড়ে আছে চীনা জনগনের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের তাগিদ। যেহেতু সাংবিধানিক ভাবে প্রজাতন্ত্রের সমস্ত ক্ষমতার মালিক জনগণ, কাজেই তাঁদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন প্রকারান্তরে গোটা প্রজাতন্ত্রেরই উন্নয়ন। বর্তমানে চীনে বহুল প্রচলিত একটি উন্নয়ন টার্ম হল " ফু শিঙ"- যার বাংলা করলে দাড়ায় "জীবনের গাঙে জোয়ার ডাকানো", অর্থাৎ চীনা জনগনের জীবনকে আনন্দ,সুখ ও সমৃদ্ধির জোয়ারে ভাসিয়ে তোলা । চীন সরকার কিন্তু বেশ সাবলীল ভাবেই এ লক্ষ্যর দিকে এগিয়ে চলছে ।

৪ । চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরন প্রক্রিয়া বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় অতিক্রম করছে। চীনের লক্ষ্য হচ্ছে ভারসাম্যপূর্ণ, সমন্বিত ও টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে ২০২০ সাল নাগাদ চীনের জিডিপি ও মাথাপিছু আয় ২০১০ সালের দ্বিগুণ করা। আগামী পাঁচ বছরে কম্যুনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে আরও এগিয়ে যাবার জন্য চীনের সামনে চ্যালেঞ্জগুলো কি কি? কোন কোন ক্ষেত্র চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবার যোগ্য বলে আপনি মনে করেন?

বর্তমান সরকার তাঁদের দায়িত্বভার নেবার একেবারে শুরুর দিকে শতাব্দীর যুগল লক্ষ্য (兩個一百年)ঘোষণা করেছিলো। ২০২০ সাল নাগাদ চীনের জিডিপি ও মাথাপিছু আয় ২০১০ সালের দ্বিগুণ করা ছিল তার মধ্যে অন্যতম। চ্যালেঞ্জের কথা যদি বলতেই হয় তাহলে বলতে হয় বৈশ্বিক অর্থনীতির এই টালমাটাল অবস্থায় এই লক্ষ্যটি মোটেও সহজ ছিল না, তার ওপর ছিল দুর্নীতির প্রকোপ। আমরা বলতে পারি বর্তমান সরকারের সফল দুর্নীতি বিরোধী অভিযান ও সঠিক বৈশ্বিক নীতির ফলে চীনা অর্থনীতি এখনও বেশ সবল। যেহেতু দুর্নীতি কোনও কৃষ্টি নয় ,এটি একটি সামাজিক ব্যাধি,তাই এর সম্পূর্ণ নিরাময়ে পর্যাপ্ত সময়ের প্রয়োজন। দুর্নীতি দমনে বর্তমান সরকারের চোখ ধাঁধানো সাফল্য থাকলেও, কিছু তৃণমূল পর্যায়ে এখনও হয়তো ছিটেফোঁটা দুর্নীতি রয়ে গেছে। সরকারী উন্নয়নের সুফল সাধারণ চীনাদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে গেলে এই তৃণমূল দুর্নীতি দমনের বিকল্প নেই। দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতি বজায় রাখা, চীনা পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ, উচ্চমান সম্পন্ন ও হাই-টেক পণ্য উৎপাদনে প্রণোদনা প্রদান , জ্বালানী নিরাপত্তা বিধান ইত্যাদি বিষয় বিশেষ অগ্রাধিকারের দাবী রাখে।

৫। ডঃ গালিব আপনি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের একজন পর্যবেক্ষক বটে, আপনার মতে বিগত পাঁচ বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীন সরকারের সাফল্য কেমন ছিল? ভবিষ্যতে চীন সরকারের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নীতি নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কি?

বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে আমরা চীনা বিদেশনীতির সফল প্রয়োগ দেখতে পাই। বিশেষত আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যু এবং চীন-ভুটান সীমান্ত ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীন সরকারের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল উন্নয়ন সহযোগিতামূলক "এক অঞ্চল এক পথ" ( one belt one road) নীতির সফল বাস্তবায়ন। চীন নিজে একটি বৃহৎ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ায় তাঁর পক্ষে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সমস্যা উপলব্ধি করার বিশেষ সুযোগ রয়েছে, তাছাড়া "এক অঞ্চল এক পথ" নীতির আওতায় ঋণগ্রহীতা দেশকে অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীর মতো কঠিন শর্তের চক্করেও পড়তে হয় না। কাজেই আমরা বিগত বছরগুলোতে দেখতে পেয়েছি অনেক দেশই "এক অঞ্চল এক পথ" নীতির ছাতার তলায় যুক্ত হয়েছে পারস্পরিক উন্নয়ন ভাবনা নিয়ে। এক্ষেত্রে আশা করা যায় আগামী দিনগুলোতেও এ সাফল্যের ধারা বজায় থাকবে। তবে এই ক্ষেত্রে উল্লেখ করা উচিৎ যে আগামী দিনের পথচলা হয়তো একটু কঠিনই হবে, বিশেষত ভারত-জাপান কর্তৃক প্রস্তাবিত "এশিয়া আফ্রিকা গ্রোথ করিডোর" নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেই পা ফেলা উচিৎ হবে। আমি মনে করি ভবিষ্যতে "এক অঞ্চল এক পথ" নীতির সক্রিয় দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করা উচিৎ, পাশাপাশি চীন সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে একটি আলাদা সচিবালয় কিংবা নির্বাহী বিভাগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।

আঞ্চলিক বিভিন্ন বাণিজ্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেও বিগত বছরগুলো ছিল উজ্জ্বল। ব্রিকস ব্যাংক গঠন, আসিয়ান শক্তিশালীকরন ছিল উল্লেখযোগ্য। আমি মনে করে চীন সরকার আগামিতেও অঞ্চল ভিত্তিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার Regional Comprehensive Economic Partnership (RCEP) পথেই হাঁটবে, কেননা উৎপাদনমুখী চীনা শিল্পগুলোর এখন বিকাশের সময়। তবে হ্যাঁ, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের ও তৈরি হয়ে নিতে হবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযুক্ত হয়ে আর তাহলেই মিলবে কাংখিত ফলাফল। (স্বর্ণা/মহসীন)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040