২১ শতাব্দীর চীনা ফোরাম—'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের নির্মাণে চীন-ইতালি সাংস্কৃতিক বিনিময় রোমে অনুষ্ঠিত
  2017-10-10 15:07:39  cri
সুপ্রিয় বন্ধুরা, আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠান 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি'। আর এ অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু ওয়াং ছুই ইয়াং জিনিয়া।

আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীন-ইতালি এবং চীন-গ্রীস সাংস্কৃতিক বিনিময় সমন্ধে দু'টি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ শুনবো। প্রথমে "২১ শতাব্দীর চীনা ফোরাম—'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের নির্মাণে চীন-ইতালি সাংস্কৃতিক বিনিময় রোমে অনুষ্ঠিত" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন শুনবো।

বিদেশে চীনা ছাত্রদের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন'র ১৫তম ২১শতাব্দীর চীনা ফোরাম সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় গণ কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ছেন চু'র নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ফোরামে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন ছেন। ইতালিতে চীনের রাষ্ট্রদূত লি রুই ইয়ু, চীনে ইতালির সাবেক রাষ্ট্রদূত আলবার্তো ব্রডিনিনি, মিলান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের ইতালি পক্ষের পরিচালক অ্যালেসান্ড্রা ল্যাভিনিনো ফোরামে আলাদা ভাষণ দিয়েছেন। ইতালি-চীন তহবিলের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিবর্গ, ইতালিতে চীনা বিনিয়োগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বৃন্দ, ইতালিতে চীনা দূতাবাসের সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ইতালির বিভিন্ন মহলের বন্ধুভাবাপন্ন ব্যক্তিসহ এক'শরও বেশী মানুষ এবার ফোরামে অংশ নেয়।

এবারের ফোরামের প্রতিবাদ্য হলো "'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণে চীন-ইতালি সাংস্কৃতিক বিনিময়"। এর লক্ষ্য হলো আরো ব্যাপকভাবে চীন-ইতালি সম্পর্ক উন্নয়ন করা, দু'দেশের জনগণের মৈত্রী গভীর করা, যাতে চীন-ইতালি সাংস্কৃতিক বিনিময় ও দু'দেশের জনগণের মৈত্রী আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

ভাষণে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ছেন চু বলেন, দু'হাজার বছরের আগে, প্রাচীন রেশম পথ পূর্ব ও পশ্চিমকে যোগ করে, এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করেছিল। তা প্রাচীন সমাজের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। শান্তি, সহযোগিতা উভয়ের জন্য কল্যাণকর রেশম পথ আধুনিক বিশ্বের জন্য আরো প্রয়োজনীয়। সেজন্য চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে রেশম পথ বরাবর দেশ ও অঞ্চলের ইতিবাচক অংশগ্রহণ ও ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। উদ্যোগটি চীন এবং ইতালির আরো ব্যাপক, গভীর ও উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতার উপযোগিতা সৃষ্টি করেছে।

দু'টি রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে রাষ্ট্র দু'টির জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ অনুভূতি। আর, এ ধরনের অনুভূতির ভিত্তি হচ্ছে পারস্পরিক বোঝাপড়া। সেজন্য চীন ও ইতালির উচিত সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা গভীর করা, দু'দেশের জনগণের মৈত্রী আরো উন্নয়ন করা।

পরিচালক ছেন আশা করেন ইতালির আরো বেশী সংস্থা বা ব্যক্তি ইতিবাচকভাবে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে অংশ নিবে ও সমর্থন করবে। দু'দেশের বন্ধুত্বের দূতে পরিণত হবে।

বন্ধুরা, "২১ শতাব্দীর চীনা ফোরাম—'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের নির্মাণে চীন-ইতালি সাংস্কৃতিক বিনিময় রোমে অনুষ্ঠিত" শিরোনামে প্রতিবেদনটি এখানে শেষ, এখন শুনুন 'ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক ফোরাম নিং বো শহরে অনুষ্ঠিত' শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।

পঞ্চদশ এশীয় সাংস্কৃতিক দিবসের প্রধান একটি কর্মকাণ্ড হিসেবে ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক ফোরাম সেপ্টেম্বর মাসের শেষে চীনের চিয়ে চিয়াং প্রদেশের নিং বো শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

চীনের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী লুও সু কাং, থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী তানসাক প্যাটিমাপোগোন, লাওসের শিল্প ও সংস্কৃতি বিভাগের রাষ্ট্রীয় সচিব বোসেঙখাম ভংদালাসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা নিয়ে ভাষণ দেন।

ভাষণে মন্ত্রী লুও বলেন, সার্বিকভাবে ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা গভীর করা এশিয়ার ভাগ্য নির্মাণের প্রবণতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং তা এশীয় সভ্যতার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কল্যাণকর। ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা নিয়ে মন্ত্রী লুও ৩টি প্রস্তাব দেন। প্রথমত, ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আসিয়ানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নির্মাণ করতে হবে। তৃতীয়ত, দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক সহযোগিতা কার্যকরভাবে পরিকল্পনা করতে হবে।

উল্লেখ্য, ফোরামে 'ল্যানক্যাং নদী-মেকং নদী সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিং বো ঘোষণা' গৃহীত হয়।

বন্ধুরা, মহসীনের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব শোনার আগে 'গ্রীসের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া মন্ত্রীর চীন সফর' শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক খবর শুনবো।

'গ্রীস-চীন সাংস্কৃতিক বিনিময় ও ক্রিয়েটিভ শিল্প সহযোগিতা বত্সর ২০১৭'র কাঠামোতে, গ্রীসের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া মন্ত্রী ম্যাডাম লিডিয়া কোনিওরডো ১৮ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর চীনে আনুষ্ঠানিক সফর করেছেন। ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত 'সপ্তম চীন আন্তর্জাতিক দ্বি-বার্ষিক আর্ট উৎসব বেইজিং'-এ 'রেশম পথ এবং বিশ্বের সভ্যতা' প্রতিবাদ্য নিয়ে একটি ভাষণ দিয়েছেন ম্যাডাম লিডিয়া। ভাষণে তিনি বলেন, এবারের প্রদর্শনী বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চ দিয়েছে। তাছাড়া, সাংস্কৃতিক জগতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে সমর্থন করার একটি সুযোগ দিয়েছে এই প্রদর্শনী। তিনি আরো বলেন,

"২০০৪ সালে আমি প্রথমবারের মত চীন সফর করি। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি চীন আমার সামনে উপস্থিত। চীনের দ্রুত উন্নয়ন আমার মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। চীনের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে অংশ নিতে পেরে অনেক খুশি গ্রীস সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিভাগ। চীন ও গ্রীসের সংস্কৃতির আধুনিক সমাজের ওপর গভীর প্রভাব রয়েছে। সেজন্য দু'দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের সহযোগিতা আরো শক্তিশালী হবে, দু'দেশ এমনকি সারা বিশ্বের ওপর গভীর সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলবে।"

জানা গেছে, এবার 'সপ্তম চীন আন্তর্জাতিক দ্বি-বার্ষিক আর্ট উৎসব বেইজিং' ১৫ অক্টোবর শেষ হবে। প্রদর্শনীতে ১০২টি দেশের প্রায় ৬'শ শিল্পীর ৬০১টি শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হচ্ছে।

প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া ছাড়াও ম্যাডাম লিডিয়া কোনিওরডো চীনের সাংস্কৃতিক বিভাগের মন্ত্রী লুও সু কাং'র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্মেলন আয়োজন করে চীন-গ্রীস সাংস্কৃতিক বছর স্মারক স্বাক্ষর করবেন এবং 'দ্বিতীয় রেশম পথ আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক মেলা—তুন হুয়াং'-এ অংশ নেবেন।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চীন-গ্রীস সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সাংস্কৃতিক শিল্পের সহযোগিতা বছর শুরু হয়েছে। দু'দেশের নেতারা চুক্তি স্বাক্ষর করে বই-অনুবাদ, চলচ্চিত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করবে। তাছাড়া দু'পক্ষ সঙ্গীত ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে। তুন হুয়াংয়ে সফরের কারণে ম্যাডাম লিডিয়া কোনিওরডো সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ সুরক্ষা ক্ষেত্রে চীনের আরো ঘনিষ্ঠ বিনিময় ও সহযোগিতার আশা প্রকাশ করেছেন।

বন্ধুরা, বিশ্বের সাংস্কৃতিক পর্ব এখানে শেষ। এখন শুনুন আমার সহকর্মী মহসীনের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।

প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com

চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান।

(জিনিয়া/মহসীন)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040