নভেম্বর ২০: চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত শনিবার ঢাকা সফরে স্থানীয় গণমাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।
ওয়াং ই বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা হলো মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যা বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ সময়োচিত পদক্ষেপ নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে ও রোহিঙ্গাদের মানবিক ত্রাণ দিয়েছে। বাংলাদেশের চেষ্টা ও অবদানের প্রশংসা করে চীন। চীন প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশকে জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়েছে এবং বাংলাদেশের বাস্তব চাহিদা অনুযায়ী আরো বেশি সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ই চীনের প্রতিবেশী ও ভালো বন্ধু। দু'দেশ হচ্ছে হাতের এপিঠ-ওপিঠ। এ সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানে দুই দেশকে সহায়তা দিতে ইচ্ছুক চীন। সহিংসতার পর আমরা বহুবার মিয়ানমারকে দ্রুত অস্ত্রবিরতির তাগিদ দিয়েছি, যাতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ না করে, এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করে। আমরা দেখেছি, এখন সহিংসতা বন্ধ হয়েছে, সেখানে পরিস্থিতি প্রশমিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বহু দফা আলোচনা পর প্রত্যাবর্তন চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। চীন একে স্বাগত জানায়।"
ওয়াং ই বলেন, চীন সবসময় মনে করে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উচিত সুষ্ঠুভাবে এ সমস্যা সমাধান করা। কারণ সংশ্লিষ্ট দু'পক্ষ গ্রহণযোগ্য চুক্তি ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করতে পারে এবং তা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সমঝোতা পাবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদসহ আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুবিধাজনক শর্ত ও সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করা।
ওয়াং ই বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক সমাজের সমর্থন ও সহায়তায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতির প্রশমন করবে। দু'পক্ষ চাইলে চীন এতে সহায়তা দেবে।'
ওয়াং আরো বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘকালের। এর সাথে ইতিহাস, জাতি ও ধর্ম জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বর্তমান সমস্যা সমাধান করতে চাইলে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করা দরকার। বর্তমান লক্ষ্য আর দীর্ঘকালীন লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, 'দারিদ্র্য হচ্ছে দাঙ্গাহাঙ্গামা ও সংঘর্ষের গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত স্থানীয় দারিদ্র্য বিমোচন ও উন্নয়নের ওপর নজর রাখা এবং সাহায্য করা। দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে উন্নয়ন জোরদার করা এবং উন্নয়নের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পদ্ধতিতে এ সমস্যা সমাধান করা যায়। চীন সংশ্লিষ্ট দেশের চাহিদা অনুসারে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেবে এবং প্রচেষ্টা চালাবে।"
(ইয়ু/তৌহিদ)