শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর ও চীনের 'দুই অধিবেশনে' সিপিপিসিসি'র নারী সদস্যদের প্রস্তাব ও পরামর্শ
  2018-04-02 15:01:27  cri

 


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন? সুদূর বেইজিং থেকে আপনাদেরকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও টুটুল। বন্ধুরা, সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীনের ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি) ও গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)-র প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। তো, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর জানানোর পাশাপাশি এবারের 'দুই অধিবেশনের' কিছু বিষয় তুলে ধরবো।

১. বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের চীন সরকারের বৃত্তির আবেদন ২০১৮-২০১৯ শুরু

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চীনের সরকারি বৃত্তির প্রকল্প মার্চ মাসে শুরু হয়েছে। এ বছর ৯৯ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যারা চীনে লেখাপড়া করতে চান তারা বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা চীনের সরকারি বৃত্তি তহবিলের ওয়েবসাইটে সংশ্লিষ্ট তথ্য খুঁজতে পারবেন। আবেদনকারীদেরকে পয়লা এপ্রিলের আগে অনলাইনে আবেদনপত্র করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঠিকানা:

www.shed.gov.bd/site/view/scholarship/Scholarship-Notification

চীন সরকারের বৃত্তির ওয়েবসাইট ঠিকানা:

www.campuschina.opg;

www.csc.edu.cn/studyinchina

২. বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১০টি শ্রেষ্ঠ বিষয় তালিকায় চীনের ছিংহুয়া ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত

সম্প্রতি 'কিউএস' ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেষ্ঠ বিষয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এ তালিকায় মোট ৪৮টি প্রধান বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তালিকাটি বিশ্বের ১৫১টি দেশের ১১০০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা করে তৈরি করা হয়।

উল্লেখ্য, কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং সারা পৃথিবীতে খুবই সম্মানজনক একটি তালিকা। কিউএস বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সার্বিকভাবে মূল্যায়ন করা ছাড়াও বিষয়, ফ্যাকাল্টি এবং অঞ্চলভিত্তিতেও র‍্যাঙ্কিং করে থাকে। লন্ডন হতে প্রকাশিত এই তালিকার প্রথম দিকে জায়গা করে নিতে বিশ্বের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একরকম প্রতিযোগিতাই করে থাকে।

চীনের ১০৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০৭টি বিষয় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিষয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে চীনের মুল ভূভাগের বিশ্ববিদ্যালয় ৭৪টি, চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের ৯টি, চীনের তাইওয়ান প্রদেশের ১৯টি ও চীনের ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের ২টি।

গত ৬ বছর ধরে বিশ্বের প্রভাবশালী বিশেষজ্ঞদের সার্বিক পর্যালোচনা ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের কর্মসংস্থানের প্রতিযোগিতামূলক শক্তি বিবেচনা করার পর এ তালিকা তৈরি করা হয়।

মোদ্দা কথা বললে বিশ্বের মধ্যে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের মান একটু নেশার পথে ফিরে গেছে, তবে হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি বিষয় বিশ্বের শীর্ষ স্থানে আছে, আর এমআইটির আছে ১২টি বিষয়।

ইউরোপে যদিও ব্রেক্সিটের কারণে অস্থিতিশীলতা দেখা গেছে, তবে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদানের মান চমত্কার। তাদের ১০টি বিষয় বিশ্বের শীর্ষ স্থানে আছে।

চীনের হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টিস্ট বিষয় একটানা তিন বছর ধরে বিশ্বের শীর্ষ স্থান দখল করে রেখেছে। চীনের ম্যাকাও পর্যটন ইন্সটিটিউটের হোটেল প্রশাসন বিষয় বিশ্বের ৩০তম এবং চীনের তাইওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের নার্সিং বিষয় ২২তম অবস্থান দখল করেছে।

চীনের মুল ভূভাগে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পঞ্চম, বৈদ্যুতিক প্রকৌশল অষ্টম এবং পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ষষ্ঠ এবং ভাষা বিদ্যা দশম স্থান অর্জন করেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ২০টি বিষয়ের মধ্যে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদাভাবে ১০টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

তাছাড়া, চীনের মুল ভূভাগের ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮টি বিষয় বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৫০ টি বিষয়ের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ২০১৬ সালের তুলনায় এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৩ শতাংশ বেড়েছে। এদের মধ্যে ছিংহুয়া ও পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া, শাংহাই চিয়াওথুং বিশ্ববিদ্যালয়, ফুতান বিশ্ববিদ্যালয়, চেচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়, থুংচি বিশ্ববিদ্যালয়, উহান বিশ্ববিদ্যালয়, নানচিং বিশ্ববিদ্যালয় ও পিপলস বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।

বিশ্বের ১০০টি শ্রেষ্ঠ বিষয়ের নামতালিকার মধ্যে চীনের মুল ভূভাগের ২৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮১টি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে, সেন্ট্রাল একাডেমি অব ফাইন আর্টস, বেইজিং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চীন বনবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয়, চুংশান বিশ্ববিদ্যালয়, থিয়ানচিন বিশ্ববিদ্যালয়, হার্বিন ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি, দক্ষিণ চীন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।

কিউএস গ্রুপের চীনের শাখা অফিসের পরিচালক ড. চাং বিশ্লেষণ করে বলেন, চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার চালু করার ৪০ বছরের মধ্যে শিক্ষার সংস্কার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ বিষয় সৃষ্টিতে সহায়ক হয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের ৫০টি শ্রেষ্ঠ বিষয় তালিকার মধ্যে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৪৩ শতাংশ বেড়েছে এবং তা অতুলনীয় সাফল্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ভবিষ্যতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক তত্ত্ব ও ব্যবস্থা তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ ও পর্যালোচনা ব্যবস্থা দ্রুত তৈরি করা হবে এবং সার্বিকভাবে চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যায়ন নির্মাণ ও বিদেশের সামনে নিজেকে তুলে ধরার মান উন্নীত করা হবে,যাতে বিশ্বের সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতায় নিজের অবদান রাখা যায় এবং নতুন শৃঙ্খলা তৈরি করা যায়।

৩. বহু ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়ন নিশ্চিত করবে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়

সম্প্রতি চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৮০ শতাংশেরও বেশি জেলায় মোটামুটিভাবে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে। ভবিষ্যতে চীনের গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাদান জোরদার করা, স্কুলের মানদণ্ডসহ নির্মাণ বাস্তবায়ন আর শিক্ষকদের মধ্যে ভারসাম্যতা তৈরি করার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হবে। এখন শুনুন এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন।

২০১৩ সাল থেকে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্যতা তৈরি করার ব্যাপারে বিভিন্ন জেলা, শহর ও এলাকার তত্ত্বাবধান ও পর্যালোচনা কর্ম শুরু করে চীন সরকার, যেন এর মাধ্যমে শিক্ষা সম্পদের যুক্তিযুক্ত বরাদ্দ বাস্তবায়ন করা যায়, সার্বিকভাবে শিক্ষকদের মান উন্নীত করা যায় এবং স্কুল, শহর ও গ্রাম এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক শিক্ষাদানের মানের ব্যবধান কমিয়ে দেওয়া যায়।

এ সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের শিক্ষা বিষয়ক তত্ত্বাবধায়ক কমিটির কার্যালয়ের পরিচালক, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধায়ক ব্যুরোর প্রধান হো সিউ ছাও বলেন, এ পর্যন্ত চীনের ৮০ শতাংশেরও বেশি জেলা বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়ন পর্যালোচনায় পাস করেছে। তিনি বলেন,

'এ পর্যন্ত চীনের ২৩৭৯টি জেলায় বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়ন মোটামুটি বাস্তবায়িত হয়েছে, যা দেশের মোট জেলার ৮১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বেইজিং, শাংহাই, থিয়ানচিন ও চিয়াংসুসহ ১১টি প্রদেশ ও শহর পুরোপুরি পর্যালোচনায় পাস করেছে।'

গত ৫ বছরে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়নে ব্যাপক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চীনের বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের স্কুলে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। এ সম্পর্কে হো সিউ ছাও বলেন,

'২০১৩ সাল থেকে নতুন নির্মিত বা মেরামতকৃত স্কুলের সংখ্যা ২ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি, বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার বেড়েছে এবং শিক্ষকের সংখ্যা ১৭.২ লাখ পার্সনটাইমস। গত ৫ বছরে চীনের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল ও অফিস ভবনসহ ৪৫ কোটি বর্গমিটার আয়তনের আবাসিক এলাকা নির্মাণ করা হয়েছে। ৩৪ কোটি বর্গমিটার আয়তনের খেলার মাঠ ও স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে এবং ১৪৪ কোটি নতুন গ্রন্থ সংগ্রহ করা হয়েছে।'

হো সিউ ছাও বলেন, চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানে ভারসাম্য উন্নয়নের পর্যালোচনায় ৫০০টিরও বেশি জেলা উত্তীর্ণ হতে পারে নি। এগুলোর মধ্যে অনেক জেলাই চীনের দূরদূরান্ত, পশুপালন, প্রচণ্ড শীত ও উঁচু মালভূমিতে অবস্থিত। সেখানকার শিক্ষাদানে দারিদ্রমুক্ত কর্তব্য আরো জটিল। এতদাঞ্চলের শিক্ষাদানের ব্যাপারে চলতি বছরে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তিনি বলেন,

'প্রথমত, আঞ্চলিক অর্থায়ন জোরদার করতে হবে, বিশেষ করে দুর্বল স্কুলের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। তারপর দায়িত্ব নিয়ে কঠিন সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় স্থানীয় অঞ্চলের নাগরিকদের সবচেয়ে মনোযোগী স্কুল বাছাই করতে হবে ও লেখাপড়ার চাপ কমাতে হবে।

দ্বিতীয়ত, গ্রামাঞ্চলের শিক্ষাদান উন্নত করতে হবে, ভারসাম্য উন্নয়নের দুর্বলতা পূরণ করতে হবে। গ্রামাঞ্চলের স্কুলের মানদণ্ড বাস্তবায়ন করতে হবে, গ্রামে বোর্ডিং স্কুল ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্কুল নির্মাণ জোরদার করতে হবে।

তৃতীয়ত, শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে বাদ পরার সমস্যা এড়াতে হবে। চতুর্থত, সার্বিকভাবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ মান উন্নীত করতে হবে এবং তাদের মধ্যে গর্বের অনুভূতি ও আবেগ তৈরি করতে হবে।'

৪.চীনের জাতীয় গণকংগ্রেস (এনপিসি) ও চীনের গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলন (সিপিপিসিসি)-র প্রতিনিধি ও সদস্যদের মধ্যে অনেক নারী সদস্য আছেন। তাঁরা এ দুই অধিবেশনে অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে সরকারের কাছে নিজেদের পরামর্শ ও প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এখন আমরা সিপিপিসিসি'র ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার সদস্যদের বিভিন্ন প্রস্তাব ও পরামর্শ নিয়ে প্রতিবেদন শোনাবো।

ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক এলাকার সিপিপিসিসি'র সদস্য, ম্যাকাও নারী ফেডারেশনের মহাপরিচালক হো তিং ই বলেন, একজন নারী সদস্য হিসেবে চীনের রাজনীতিতে অংশ নেওয়া ও পরামর্শ দেওয়া অনেক গৌরবের ব্যাপার। তা থেকে বোঝা যায়, নারীদের ওপর অনেক গুরুত্ব দেয় চীন সরকার। তাই নিজের দায়িত্ব ভালভাবে পালন করতে হবে এবং নিজের কর্মও সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে। চলতি বছর সিপিপিসিসি'র কর্ম নিয়ে বিশেষ করে নারী কর্ম সম্পর্কে তিনি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

তিনি সিআরআইয়ের সাংবাদিককে জানান, বর্তমানে বাড়িতে বা সমাজে চীনা নারীরা ব্যাপক ভূমিকা পালন করছেন। পরিবারের কেন্দ্র হিসেবে পারিবারিক পরিবেশে বাচ্চাদের প্রশিক্ষণে তাঁরা ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছেন। বিভিন্ন পরিবার সুষম হলে সমাজও সুষম হবে। কোটি কোটি পরিবার সুন্দর জীবন কাটালে আমাদের রাষ্ট্রও সমৃদ্ধ হবে। নারীর সামাজিক অবস্থান ও শিক্ষাদানের মান উন্নীত করতে হবে। নারীরা রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ও চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানে প্রচেষ্টা চালাতে আগ্রহী। তাই নারীর অবসরের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হলে তাঁরা আরো বেশি ভূমিকা পালন করতে পারবে, আর এভাবে তাঁরা সমাজে আরো বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।

সিপিপিসিসি'র ম্যাকাও অঞ্চলের সদস্য, কাও চিংহু হাসপাতাল দাতব্য সমিতির মহাসচিব ম্যাডাম উ পেই চুয়ান বলেন, চলতি বছর চীনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংয়ের সরকারি কার্যবিবরণীতে অনেক বাস্তব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, তবে চিকিত্সা সংস্কার ও কৃষক ইস্যু তাঁর সবচেয়ে মনোযোগী বিষয়। তাই এবার তাঁর প্রস্তাবে পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে আবর্জনার শ্রেণীকরণের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছরের শুরুতে এ দু'টি খবর শুনে তিনি খুব আনন্দিত। পয়লা জানুয়ারি থেকে চীনে বিদেশ থেকে আবর্জনা আমাদানি বন্ধ হয়েছে এবং গ্রামের আবাসিক এলাকার পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে তিন বছর মেয়াদি কার্যক্রম প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানসম্মতভাবে আবর্জনা ভাগাভাগি ও প্রশাসন করা, বসবাসের পরিবেশ উন্নত করা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য খুব তাত্পর্যপূর্ণ। তাই আবর্জনার শ্রেণীকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ব্যাপার। এ সম্পর্কে ম্যাডাম উ বলেন, সবুজ পাহাড় ও নদী হবে আমাদের সোনার ও রুপার সম্পত্তি। এ পরিবেশ সংরক্ষণ তত্ত্ব চীনা প্রজন্মদের সুখী জীবনের সাথে জড়িত। তাই সবার যৌথ প্রয়াসে চীনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবাসিক পরিস্থিতি আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।

সিপিপিসিসি'র ম্যাকাও অঞ্চলের আরেকজন সদস্য, ম্যাকাও শিক্ষা ও যুব ব্যুরোর প্রধান ম্যাডাম লিয়াং লি বলেন, একজন শিক্ষক হিসেবে তাঁর প্রস্তাব শিক্ষাদানের সাথে জড়িত। বর্তমানে ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক এলাকায় ১৩ থেকে ২৯ বছর বয়সী যুবকের সংখ্যা ম্যাকাওয়ের মোট জনসংখ্যার ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে সংবিধান ও মৌলিক আইনের প্রশিক্ষণ জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে সঠিকভাবে চীনের সংবিধান ও মৌলিক আইনের সাথে সম্পর্ক এবং এক রাষ্ট্রের দুই সামাজিক ব্যবস্থার ভিত্তি জানা অতি গুরুত্বপূর্ণ।

এভাবে ম্যাকাওয়ের শিক্ষার্থীরা চীনের উন্নয়নের প্রক্রিয়া বুঝতে পারবে এবং 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ ও চীনা স্বপ্ন বাস্তবায়নে সফল হবেন বলে আশা করেন তিনি।

সুপ্রিয় শ্রোতা,এতক্ষণ আপনারা শিক্ষাসম্পর্কিত কয়েকটি খবর ও চীনের দুই অধিবেশনে বিভিন্ন সদস্যদের প্রস্তাব ও উদ্যোগ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন শুনলেন।

প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn

(সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040