চীনের 'আন্ডারওয়াটার' প্রত্নতাত্ত্বিক দলের সৌদী আরবে যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্পে অংশ গ্রহণ
  2018-04-03 19:22:08  cri
স্থানীয় সময় ২৪ মার্চ চীনের বিখ্যাত বেহালাবাদক ভান ইয়েন লিন সিডনি সঙ্গীত একাডেমীতে তাঁর একক যন্ত্র সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করেন।

সেদিন সন্ধ্যায় শিল্পী ভান তাঁর বিখ্যাত কর্ম 'ইয়াং কুয়াং চাও ইয়াও থা সি খু এর কান'সহ বিভিন্ন বিখ্যাত সঙ্গীত বাজিয়ে শুনিয়েছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার চীনা সঙ্গীতজ্ঞ সমিতির শিল্পীদের সঙ্গে সহযোগিতা করে 'আমার দেশ'সহ বিভিন্ন দেশপ্রেমিক সঙ্গীতকর্ম বাজিয়ে শুনিয়েছেন। অনুষ্ঠানটি দেশি-বিদেশী দর্শকদের তুমুল প্রশংসা কুড়িয়েছে।

ভান হলেন বিশ্ববিখ্যাত বেহালাবাদক। বিংশ শতাব্দীর আশির দশক থেকে এখন পর্যন্ত জাপানের ইয়োমিরি অর্কেস্ট্রা, অস্ট্রেলিয় গান এবং নৃত্য থিয়েটার এবং জাপানের টোকিও সিম্ফনি অর্কেস্ট্রাসহ বিভিন্ন বিখ্যাত অর্কেস্ট্রার প্রধান বেহালাবাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

চীন-তুরস্ক পর্যটন বছর ২০১৮ উপলক্ষে 'চীনের রেশম, সূচি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী' মার্চ মাসের শেষে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তানবুলে শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইস্তানবুলে চীনের ভাইস কন্সুলার জেনারেল ছেন সু, তুরস্ক-চীন মৈত্রী তহবিলের ইস্তানবুল শাখার দায়িত্বশীল ব্যক্তি সেজকিন উপস্থিত ছিলেন।

ভাইস কন্সুলার জেনারেল ছেন সু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে বলেন, তুরস্ক-চীন মৈত্রী তহবিলের উদ্যোগে আয়োজিত এবারের 'চীনের রেশম, সূচি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী' একটি শুভ সূচনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু'দেশের সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। এবার শিল্প-প্রদর্শনীর মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক বিনিময়, দু'দেশ ও জনগণের পারস্পরিক সমঝোতা এবং মৈত্রী আরো জোরদার হবে, উন্নয়ন হবে।

মিস্টার সেজকিন বলেন, চীনের রেশম, সূচিকর্মের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এ ব্যাপারে চীনের সঙ্গে বিনিময়ে আগ্রহী তাঁর দেশ। এবারের শিল্প-প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুরস্ক ও চীনের যোগাযোগ আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে তাঁর প্রত্যাশা।

উল্লেখ্য, তুর্কি শিল্পী এবং সে দেশে চীনের ছাত্র-ছাত্রীরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলাদা আলাদাভাবে নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যগত সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

চীনে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আবদুল কাদের এমিন অনেন সম্প্রতি বেইজিংয়ে বলেছেন, চলতি বছর চীনে 'তুর্কি পর্যটন বছর' কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিমান পরিবহণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সেবা উন্নয়ন করে আরো বেশী চীনা পর্যটকদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করবে তাঁর দেশ।

রাষ্ট্রদূত অনেন এদিন সিং হুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট স্কলারস' কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত 'রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সংলাপ' অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত অনেন বলেন, বিমান পরিবহণ ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সেবা উন্নয়ন করবে তাঁর দেশ। তাঁর দেশের আশা, চলতি বছর ৫লাখ চীনা পর্যটক তুরস্কে ভ্রমণ করবে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এক মিলিয়ন চীনা পর্যটকের তাঁর দেশ ভ্রমণের লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।

উপরে লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য দু'দেশের বিমান পরিবহণ সংস্থার মধ্যে আরো বেশী ফ্লাইট খোলার চেষ্টা করবে তুর্কি সরকার। তাছাড়া, দু'দেশের বিমান পরিবহণ সংস্থার মধ্যে ইতোমধ্যে সহযোগিতা থাকলেও ফ্লাইট সংখ্যা আরো বাড়িয়ে দেওয়া হবে যাতে দু'দেশের জনগণ একে অপরের দেশ ভ্রমণে আরও সুবিধা ভোগ করতে পারে।

রাষ্ট্রদূত অনেন জোর দিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামাজিক নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করেছে তুরস্ক। ইস্তাম্বুলসহ তাঁর দেশের প্রধান প্রধান শহরে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চীনা পর্যটকরা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন বলে তিনি জানান।

বন্ধুরা, এবারে শুনুন চীনের 'আন্ডারওয়াটার' প্রত্নতাত্ত্বিক দলের সৌদী আরবে যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্পে অংশ গ্রহণের খবর।

'চীন-সৌদী আরব আল সেরিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিক প্রকল্প' সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। চীনা জাতীয় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিদর্শন ব্যুরোর আন্ডারওয়াটার সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি সংরক্ষণ কেন্দ্রের একটি চীনা প্রত্নতাত্ত্বিক দল ২৬ মার্চ সৌদী আরবে গিয়েছে। দু'দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক দল 'চীন-সৌদী আরব যৌথ প্রত্নতাত্ত্বিক দল' গঠন করেছে।

এবারের প্রত্নতাত্ত্বিক কাজে চীনা দলের দায়িত্বশীল ব্যক্তি হলেন জাতীয় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিদর্শন ব্যুরোর আন্ডারওয়াটার সাংস্কৃতিক ঐতিয্য সংরক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক চিয়াং পো পো। চিয়াং বলেন,

"আল সেরিয়ানে আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক কাজ ২৬ মার্চ শুরু হয়েছে, ১৪ এপ্রিল তা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এবারে আমরা সৌদী আরবের জাতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করে কাজ করবো। এই যৌথ দলে চীনা ৫ জন এবং সৌদী আরবের ৬ জন সদস্য আছে।"

আল সেরিয়ান আরব উপদ্বীপের পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। আরব সাহিত্য ইতিহাস থেকে জানা গেছে, নবম থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত আল সেরিয়ান সবচেয়ে সমৃদ্ধ একটি সময়কাল অতিক্রম করেছে। ভারত, ওমান ও ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশের তীর্থযাত্রী ও ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এখানে আসতেন। চিয়াং আরো বলেন,

"আল সেরিয়ান-এর লোহিত সাগর উপকূল হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তীর্থ ও ব্যবসা বন্দর। চীনের সংশ্লিষ্ট সাহিত্য ইতিহাসে লিপিবদ্ধ আছে যে, চীনের মিং রাজবংশীয় আমলে বিখ্যাত সমুদ্রচারী জেং হে-এর জাহাজ বহরের শাখা এখানে ছিলো। আরব সাহিত্যেও এ বন্দরের বিস্তারিত অবস্থার বর্ণনা রয়েছে। আমরা জায়গাটি ভ্রমণ করেছি। সেখানে ঐতিহাসিক অংশের পৃষ্ঠায় আরবি মৃৎপাত্র, ফার্সি উজ্জ্বল বাসন কোসন এবং চীনা চীনামাটির বাসন দেখা যায়। সেজন্য আল সেরিয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ, মূল্যবান, তাত্পর্যপূর্ণ একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।"

জানা গেছে, চীন ও সৌদী আরবের মধ্যে 'চীন- আল সেরিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিক সহযোগিতা চুক্তি' স্বাক্ষরিত হয়েছে। এবার আল সেরিয়ান প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান কাজের ৫ বছর পূর্ণ হবে। প্রকল্পটি চীনা প্রত্নতাত্ত্বিক দলের প্রথমবারের মত সৌদী আরবে গিয়ে কাজ করার একটি ঘটনা। এটা চীনের জন্যও সামুদ্রিক রেশম পথ অন্বেষণ করার নতুন অধ্যায়।

বন্ধুরা, বিশ্বের সাংস্কৃতিক পর্ব এখানে শেষ। এখন শুনুন আমার সহকর্মী মহসীনের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।

প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com

চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।

বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/মহসীন)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040