0915jignji
|
১. চলতি বছর বিদেশের সঙ্গে চীনের অনলাইন বাণিজ্যের পরিমাণ ৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বা ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। চায়না ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দিয়েছে।
ফুচিয়ান প্রদেশের সিয়ামেনে কুড়িতম চায়না ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার ফর ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড (সিআইএফআইটি)-এ প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে চীনের সঙ্গে অনলাইন বাণিজ্যে শীর্ষস্থানে থাকা ১০টি দেশ ও অঞ্চল হচ্ছে: জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নিউ জিল্যান্ড, হল্যান্ড, ফ্রান্স, ব্রিটেন, এবং চীনের হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল।
বিদেশের সঙ্গে অনলাইন বাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে চীনের কুয়াংতুং প্রদেশ। এর পরেই আছে চেচিয়াং, শানতুং, ও হ্যনান।
চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী থং সিয়াওমিন বলেন, প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে সরকার বিদেশের সঙ্গে অনলাইন বাণিজ্যকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে, বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ ও নির্বিচারে অ্যান্টি-মনোপলি তদন্ত কার্যক্রম বিদেশের সঙ্গে চীনের অনলাইন বাণিজ্যের উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করছে।
২. চীনের বেসরকারি কোম্পানিগুলো আফ্রিকায় বিনিযোগের ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান হারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সম্প্রতি হাংচৌতে অনুষ্ঠিত বেসরকারি খাতে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা শীর্ষসম্মেলনে এ-তথ্য উঠে এসেছে। সম্মেলনে চীন ও আফ্রিকার বিভিন্ন সরকার এবং বেসরকারি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের তিন শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৭ সালে আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ১৭০০০ কোটি মার্কিন ডলার। চীনের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী ছিয়ান খ্যমিং অগাস্টের শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আফ্রিকায় চীনের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়ছে।
আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুসারে, আফ্রিকায় চীনের বিনিয়োগকৃত কোম্পানির সংখ্যা ১০ হাজার অতিক্রম করেছে। এসব কোম্পানির ৮০ শতাংশের বেশি বেসরকারি।
এদিকে, হাংচৌভিত্তিক ফুথং গ্রুপের চেয়াম্যান ওয়াং চিয়ানই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে আফ্রিকায় দেড় লাখ কিলোমিটারের বেশি অপটিকেল ফাইবার বসানো হবে। এর জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। এই খাতে বিনিয়োগের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে তার কোম্পানির। তিনি বলেন, আফ্রিকা যাদুকরী জায়গা। এখানে সুযোগ অবারিত।
৩. আলিবাবা'র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জ্যাক মা বলেছেন, তিনি আগামী বছর কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিতে যাচ্ছেন। তখন কোম্পানির বর্তমান সিইও ড্যানিয়েল চাং বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। চীনের শিক্ষক দিবসে প্রকাশিত তার একটি ছোট্ট চিঠিতে তিনি তার এ-সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আলিবাবা'র ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তিনি পদত্যাগ করবেন।
৪. বৈশ্বিক জিডিপি'তে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অবদান দিন দিন বাড়ছে। ২০০০ সালে বৈশ্বিক জিডিপি'তে এতদঞ্চলের অবদান যেখানে ছিল ৩০.১ শতাংশ, সেখানে ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২.৬ শতাংশে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ-তথ্য জানায়।
এডিবি'র প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুইয়ুকি সোয়াদা বলেন, পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দারিদ্র্যবিমোচন, সামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং বৈশ্বিক উৎপাদন নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে, এতদঞ্চলে উন্নয়নের অনেক সুযোগ রয়ে গেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
৫. বাংলাদেশে আরও ২৭ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে চীনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)। পৌর এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থার উন্নয়নে এই ঋণ দেবে ব্যাংকটি। আগামী ডিসেম্বরে এআইআইবি'র বোর্ডে এই ঋণ অনুমোদন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি এআইআইবি'র একজন পরিচালক বাংলাদেশের ধামরাইয়ের সুয়াপুর ও কুটির চর গ্রাম পরিদর্শন করেন। সেখানে এআইআইবি'র অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎসংযোগ পাওয়া সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি এবং বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের ঘোষণা দেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষের উপকার হয়েছে। এটা খুশির ব্যাপার। এ অবস্থায় ব্যাংক সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাষণে অর্থায়ন করার চিন্তাভাবনা করছে। এ খাতে আনুমানিক ২৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
এআইআইবি'র অর্থায়নে বাস্তবায়িত প্রকল্প থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মাধ্যমে গত দুই বছরে ২৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎসংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এআইআইবি দিয়েছে ৮০০ কোটি টাকার সমমূল্যের ১০ কোটি ডলার। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত তিনটি প্রকল্পে প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এআইআইবি।
উল্লেখ্য, এআইআইবির অর্থায়নে বিভিন্ন দেশে মোট ২৮টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসব প্রকল্পে এআইআইবি দিয়েছে ৫৩৪ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে চীনের বেইজিংভিত্তিক এআইআইবি'র যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশসহ এআইআইবি'র বর্তমান পূর্ণ সদস্য ৬৭। বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতাসদস্য।
৬. বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আমদানি-রফতানির নতুন প্রস্তাব করেছে ব্রুনেই। সম্প্রতি ব্রুনেইয়ের একটি বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে গিয়ে এই প্রস্তাব দেয়।
প্রতিনিধিদলের সদস্য রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গানিম ইন্টারন্যাশনালের সিইও নূর রহমান বলেন, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জাপান ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে সামুদ্রিক খাবার রফতানি করে ব্রুনেই। বাংলাদেশ চাইলে এসব হালাল ট্রেডমার্কের খাবার আমদানি করতে পারে। এ ছাড়া, ব্রুনেইয়ের গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম বাংলাদেশ আমদানি করতে পারে। ব্রুনেইয়ে মাংস ও চালের চাহিদার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ থেকে তা আমদানির আগ্রহও দেখান তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রুনেইয়ে বাংলাদেশের রফতানিপণ্য হচ্ছে কৃষিজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক সামগ্রি এবং নিটওয়্যার। আর ব্রুনেই থেকে মূলত কেমিকেল পণ্য এবং ইথিলিন পলিমার আমদানি করে বাংলাদেশ।
৭. বাংলাদেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীকে দুই সপ্তাহের শিক্ষাসফরে চীনে নিয়ে গেছে হুয়াওয়ে। শিক্ষার্থীরা গত আট সেপ্টেম্বর থেকে হুয়াওয়ের প্রধান কার্যালয়ে প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা গ্রহণ করছেন।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) চাং চেংচুন জানান, চীনে বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থীরা নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে ও সর্বশেষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারবে। হুয়াওয়ে বরাবরের মতোই বাংলাদেশের আইসিটি ও টেলিকম খাতের উন্নয়নে অবদান রাখবে বলেও তিনি জানান।
৮. চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরশেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৮.২৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, আগামী ছয় মাসের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি)-র অর্থ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হিসাবে চলে গেছে। টাকার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না। তাই প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
মন্ত্রী আরও বলেন, ক্রয়ক্ষমতা সমতার দিক থেকে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি-পিপিপি) ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিংগাপুর, ইরাক, কলম্বিয়ার মতো দেশগুলোকে পেছনে ফেলে অর্থনৈতিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
৯. ২০১৬ সালের জুন থেকে গেল জুন পর্যন্ত মোট দুই বছরে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো এক লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে। আর এ সময়ে ব্যাংকগুলো দুই লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এর মানে, উক্ত সময়কালে সংগৃহীত আমানতের চেয়ে ৬৬ হাজার কোটি টাকা বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছে।
(আলিমুল হক)