1008minyue
|
প্রিয় শ্রোতা, আজকের কু জেং চীনের হান রাজবংশ আমলে প্রচলিত হয়। আজকের কু জেং-এর ১৬, ১৮ অথবা ২১টি তাল আছে।
আগে চীনের উত্তর ও দক্ষিণে দু'ভাবে কু জেং বাজানো হতো। এখন বিভিন্ন অঞ্চলে বাজানোর নিজস্ব পদ্ধতি আছে।
আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের কু জেং-এর ৫টি সুর শোনাবো। প্রথমটা হল 'ছাই থৌ ফেং'।
'ছাই থৌ ফেং' সুরটি সুং রাজবংশের বিখ্যাত কবি লু ইয়ৌ-এর প্রেমের গল্পের জন্য রচিত। কবি লু ইয়ৌ এবং তার স্ত্রী থাং ওয়ান পরস্পরকে খুব ভালবাসতেন। দু'জনেই সাহিত্যিক মানুষ; একসঙ্গে কবিতা লিখতেন এবং সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করতেন। কিন্তু কবি'র মা পুত্রবধূকে পছন্দ করতেন না এবং বউকে পরিত্যাগ করতে কবির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। কবি অনেক চেষ্টা করার পরও কোনো উপায় না-দেখে স্ত্রী থাং ওয়ানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান। এরপর থাং ওয়ান আরেকটি পুরুষকে বিয়ে করেন। কয়েক বছর পর, কবি লু ইয়ৌ একদিন পার্কে বেড়ানোর সময় দেখতে পান থাং ওয়ানকে। থাং ওয়ান তার স্বামীকে নিয়ে পার্কে এসেছিলেন। কবির তখন অতীতের কথা মনে পড়ে যায় এবং তাঁর মনে দুঃখবোধ সৃষ্টি হয়। তিনি লিখে ফেলেন 'ছাই থৌ ফেং' শীর্ষক একটি কবিতা। থাং ওয়ান এ কবিতা শুনে নিজেও স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তখন তিনি নিজেও লিখে ফেললেন একটি কবিতা। এই গল্পটির ভিত্তিতেই রচিত হয়েছে 'ছাং থৌ ফেং' সুরটি। এখন শুনুন সুরটি।
'তা পেই চৌ' হল বৌদ্ধ ধর্মের একটি মন্ত্রের ভিত্তিতে রচিত সুর। শুনুন সুরটি।
'কাও শান লিউ শুই' একটি সুপ্রাচীন ও সুবিখ্যাত কুছিন সুর। প্রাচীনকালে একজন খুব বিখ্যাত কুছিন শিল্পী ছিলেন, যার নাম ইয়ু পো ইয়া। তার একজন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল, যার নাম জুং জি ছি। ইয়ু পো ইয়া মনে করতেন এ পৃথিবীতে শুধু জুং জি ছি তার কুছিনের বাজনা পুরোপুরি বুঝতে পারেন। তাই জুং জি ছি মারা যাওয়ার পর, ইয়ু পো ইয়া আর কোনোদিন কুছিন বাজাননি। তার রচিত 'কাও শান লিউ শুই' সুরে পাহাড়ের বিভিন্ন ঝর্ণা ও নদনদীর আওয়াজ পাওয়া যায়। ১৯৭৭ সালে মার্কিন মহাশূন্যযান 'ভয়েজার-১' মহাকাশে যে সঙ্গীতের সিডি নিয়ে গিয়েছিল, সেই সিডির মধ্যে কুছিনের এ সুরটি ছিল। শুনুন সুরটি।
'খুং ছুয়ে তুং নান ফেই' প্রাচীনকালের একটি কবিতা। এ কবিতায়ও স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে। শুনুন সুরটি।
'মেই হুয়া সান নং' চীনের দশটি বিখ্যাত প্রাচীন সুরের মধ্যে একটি। 'মেই হুয়া' হল এক ধরনের বরই-ফুল। চীনে 'মেই হুয়া' শীতকালে ফোটে। কঠিন শীত ও বিরূপ পরিবেশের মধ্যে 'মেই হুয়া' ফোটে বলে চীনারা এর উচ্চ প্রশংসা করে। এ সুরটি রচিত হয়েছে 'মে হুয়া'র জন্য। শুনুন সুরটি।
সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের 'সুরের ধারায়' এখানেই শেষ হচ্ছে। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (স্বর্ণা/আলিম)