বিদেশি সাংবাদিকদের চোখে চীনের সিনচিয়াংয়ের আসল দৃশ্য আর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ত্রাসদমন সাফল্য
  2019-09-09 14:17:11  cri

 


গত ১৭ থেকে ২৩ অগাস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, ভারত, রাশিয়া, তুরস্ক ও জাপানসহ বিশ্বের ১৬টি দেশের ২০ জন সাংবাদিক চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সফর করেন। তারা বিভিন্ন সেমিনার ও নিজেদের পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় অঞ্চলের সামাজিক উন্নয়নের দৃশ্য অনুভব করেন এবং ছাংচি, আকসু ও কাশিসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের সাক্ষাত্কার নেন। আজকের অনুষ্ঠানে বিদেশি সাংবাদিকদের চোখে চীনের সিনচিয়াংয়ের আসল দৃশ্য আর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সন্ত্রাসদমন সাফল্য সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

বিদেশি সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদল চীনের সিনচিয়াংয়ের আকসু কোকোয়া সবুজায়ন জাদুঘর, ওয়েনসু জেলার প্রাকৃতিক বাগান আর আকসু জাতীয় জলাভূমি পার্কসহ বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তারা আকসু শহরের ইকানচি জেলার ইকানচি গ্রামে স্থানীয় পর্যটন শিল্পের অবস্থা সম্পর্কেও অভিজ্ঞতা লাভ করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের 'ঘোষণা' পত্রিকার বৈদেশিক বিভাগের পরিচালক জনাব আকরাম মনে করেন, মরুভূমির মরূদ্যানে পরিণত হওয়ার প্রকল্প অতি বিস্ময়কর। গত ৩০ বছরের মধ্যে মরুভূমিকে ফলের বাগানে রূপান্তর করেছে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তার মাধ্যমে আমি গ্রামবাসীদের প্রচেষ্টা অনুভব করেছি আর স্থানীয় বাসিন্দাদের আয় বৃদ্ধিতে সরকারের উদ্যোগও দেখেছি। প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারের সাথে সাথে জীবনযাপনের উন্নয়নও বাস্তবায়িত হয়েছে, তা খুবই চমত্কার দৃষ্টান্ত।

কাজাখস্তানের টেঙ্গে পর্যবেক্ষক পত্রিকার উপ-সাধারণ সম্পাদক ও 'উরকার' ম্যাগাজিনের সম্পাদক সালতানাত গায়েচিন বলেন, গত শতাব্দীর ৮০ দশকে আকসুর প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিলো অনেক দুর্বল। তখন এখানে সহজেই বালুঝড় দেখা দিতো, আর নানান জায়গা ছিলো মরুভূমিতে পরিপূর্ণ। তবে বর্তমানে আশেপাশে সবজায়গা সবুজ হয়ে উঠেছে। আমি ফল বাগানে আঙ্গুর ও বিভিন্ন ফল গাছ দেখেছি, তা সুশৃঙ্খলভাবে চাষ করা হয়। স্থানীয় অঞ্চলের গ্রামবাসীদের যৌথ প্রয়াসে মরূদ্যান সৃষ্টি হয়েছে। চীনের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন অতুলনীয়, আর এ দৃশ্য দেখা অনেক উত্সাহব্যাঞ্জক ও আশ্চর্যজনক বলে মনে করেন তিনি।

জাপানি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের চীন ব্যুরোর প্রধান যোকোশিমা দাইসুকে বলেন, প্রাকৃতিক সভ্যতার উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণে কেউ চীনের সমালোচনা করতে সক্ষম নয়। চীনের এমন কাজ অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে বলে কামনা করেন তিনি।

সাংবাদিক প্রতিনিধিদলটি কাশি শহরের পুরনো নগর ও আওয়াতি জেলা পরিদর্শন করেন। স্থানীয় দু'জন কৃষকের বাড়িতে গিয়ে সিনচিয়াংয়ের গ্রামাঞ্চলের জীবনযাপনের ব্যাপক উন্নয়নের সাক্ষী হন তারা। কাশি শহরের পুরনো বাড়িঘর মেরামত-বিষয়ক জাদুঘর পরিদর্শন করার পর 'আফগান টাইমস পত্রিকা'র সাধারণ সম্পাদক মনসুর ফায়েজ বলেন, স্থানীয় পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন, গ্রামাঞ্চলের কৃষকদের বাড়িঘর মেরামত এবং জাতীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ সবই চীন সরকারের সমর্থন ও সংরক্ষিত ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে।

বাংলাদেশের দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, 'আমি কাশি শহরের আধুনিকায়ন ও প্রাচীনকালের পুরনো নগরের সুষম সংমিশ্রণ দেখেছি, এমন সফল রূপান্তর বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। স্থানীয় দরিদ্র মানুষ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে সক্ষম। যদি সারা বিশ্বে এমন পদ্ধতিতে দরিদ্র মানুষের জীবনে সহায়তা দেওয়া হয়, তাহলে দরিদ্র মানুষের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত এমন ব্যবস্থা চালু করা। দরিদ্র লোকদের সহায়তায় চীন সরকার নানান ব্যবস্থা নিয়েছে। কমিউনিটির সহায়তা ছাড়াও আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্যও দেওয়া হয়। এমন সমর্থন অতি প্রয়োজনীয়। চীনের শ্রেষ্ঠ নীতি ও অভিজ্ঞতা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হওয়া উচিত, অন্য দেশের কাছে তুলে ধরা উচিত'।

সাংবাদিকদেরকে গত কয়েক বছরে সিনচিয়াংয়ে সংঘটিত হিংসাত্মক হামলার প্রদর্শনীও দেখানো হয়। এই প্রদর্শনী ও পরিসংখ্যানের মাধ্যমে তারা সিনচিয়াংয়ের গুরুতর ও ধারাবাহিক হিংসাত্মক ঘটনা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে জানতে পারেন। স্টেডিয়ামে বিস্ফোরকের ধ্বংসাবশেষ ও সংগৃহীত বিস্ফোরক জিনিস বিদেশি সাংবাদিকদের মনে গভীর দাগ কাটে।

পাকিস্তানের কলাম লেখক নাভিদ আমান খান বলেন, এবার হিংসাত্মক হামলার প্রদর্শনী দেখে অতীতকালে সিনচিয়াংয়ের হিংসাত্মক তত্পরতার ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছি এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাক্ষাত্কার নেওয়ার সময় চীন সরকারের বিভিন্ন ব্যবস্থা ও উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। স্থানীয় সরকার ও জনগণের যৌথভাবে সন্ত্রাসদমন ও চরমপন্থাবাদ নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ খুবই কার্যকর।

এবার সফরকালে বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিতদের 'চীনের সম্মুখীন সন্ত্রাসী হুমকি ও চ্যালেঞ্জ বিশ্লেষণ' নামে সেমিনার আয়োজিত হয়। সেমিনার শেষে বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা চীনা বিশেষজ্ঞদের সাথে ব্যাপক আলোচনা করেন। তারা বিদেশি সন্ত্রাসী পন্থীদের কৌশল, চরমপন্থী চিন্তাধারার সম্প্রচার, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সাথে সম্পর্ক এবং চীনে সন্ত্রাসদমনের অভিজ্ঞা নিয়ে মতবিনিময় করেন।

প্রতিনিধিদলটি সিনচিয়াংয়ের ওয়েনসু জেলা ও কাশি শহরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তারা কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের ক্লাস এবং শিক্ষার্থীদের হোস্টেল, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া কার্যক্রমে অংশ নেন। কেন্দ্রের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেন তারা। ওয়েনসু জেলার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সিনেমা হল, গ্রন্থাগার, চা ক্লাসরুম, শিল্প প্রশিক্ষণ রুম আর মানসিক কাউন্সেলিং রুম স্থাপিত হয়েছে। কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের চমত্কার জীবনযাপন সাংবাদিকদের ব্যাপক আকৃষ্ট করে। শিক্ষার্থীরা নৃত্য চর্চা করেন, তারা বিদেশি সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে একসাথে নৃত্য করেন, সবাই আনন্দময় সময় অতিবাহিত করেন।

পাকিস্তানের লেখক নাভিদ আমান খান বলেন, এখানকার শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারিগরি কোর্স বাছাই করেন, এমন কোর্সের মাধ্যমে তারা সমাজে সুন্দর জীবনযাপন কাটাতে সক্ষম বলে বিশ্বাস করি। এখানে তাদের মধ্যে কোনো বৈষম্য নেই। তারা সুন্দর জীবন কাটাচ্ছেন।

কাতারের সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সায়িদ কুভালি বলেন, চীনে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা মানুষদের চরমপন্থী চিন্তাভাবনা নির্মূলে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ দীর্ঘকাল ধরে আয়োজন করা হবে বলে আশা করি, যাতে সন্ত্রাস দমনে আরো বেশি সাফল্য অর্জন করতে পারে চীন।

বিদেশি সাংবাদিকরা মনে করেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক সহযোগিতা ও যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। সন্ত্রাস ও চরমপন্থাবাদ নির্মূল করতেই হবে।

রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার রাজনৈতিক পর্যালোচক, চীন বিষয়ক পণ্ডিত ইয়েভগেনিয়েভি কেসেলেভ বলেন, সিনচিয়াংয়ে আসার আগে পাশ্চাত্য গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সিনচিয়াংয়ে তথাকথিত উইগুর জাতির লোকদের গ্রেফতার বা বন্দী-শিবির রয়েছে, তবে স্বচোখে দেখে বোঝা যায়, তা সন্ত্রাসদমনের এক চমত্কার পদ্ধতি। এখানে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সবার সুন্দর জীবন সৃষ্টি করা হয়।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসী হামলার হুমকির সম্মুখীন, তাই সবাই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। চীনের এ নতুন পদ্ধতি অর্থাত্ স্কুলের মাধ্যমে চরমপন্থাবাদ নির্মূল করা সম্ভব।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের 'ঘোষণা' পত্রিকার বৈদেশিক বিভাগের পরিচালক আকরাম বলেন, সিনচিয়াংয়ে পৌঁছানোর পর আমার আগের অনেক ধারণা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। এখন আমি অজানা অনেক বিষয় জানতে পেরেছি। অর্থনীতির উন্নয়ন ও সন্ত্রাস দমনে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা দেখেছি, তা খুবই চমত্কার ব্যাপার।

আইন অনুসরণ করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কাজ চালিয়ে নেওয়া হলো সন্ত্রাসবাদ নির্মূল আর সিনচিয়াংয়ের স্থিতিশীলতা রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

সম্প্রতি 'সিনচিয়াং কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্ম' বিষয়ক শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়। তাতে সিনচিয়াংয়ের কারিগরি প্রশিক্ষণ কাজের বিস্তারিত পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে। বিদেশিরা এ শ্বেতপত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা একে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থাবাদ নির্মূলের কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা সিনচিয়াংয়ের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক একাডেমির প্রাচ্য-বিষয়ক গবেষণাগারের পরিচালক আলেক্সার মাসলভ বলেন, গত কয়েক বছরে চীন সরকার ধারাবাহিকভাবে সিনচিয়াং কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খবর প্রকাশ করেছে, যা কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের জন্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও রাষ্ট্রীয় নীতি তুলে ধরার মাধ্যমে তাদের মানসিক প্রশিক্ষণ চালু করা হয়। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের চরমপন্থী সংস্থায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া এড়ানো সক্ষম।

রুশ বিজ্ঞান একাডেমির বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গবেষণাগারের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের শীর্ষ গবেষক আলেক্সান্দার রোমানো মনে করেন, সিনচিয়াংয়ের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে স্থাপিত কোর্স রাষ্ট্রীয় ভাষা, আইন ও কারিগরি দক্ষতার লেখাপড়ায় শিক্ষার্থীদের চরমপন্থাবাদ নির্মূল করা হয় এবং তাদের ধর্মীয় চরমপন্থাবাদের শিকার হওয়া এড়ানো যায়।

মার্কিন হিউস্টন 'আন্তর্জাতিক ফোকাস' ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক ভার থমসন কয়েক মাস আগে সিনচিয়াংয়ের কাশি ও আথুশি শহরের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তার নিবন্ধে বলা হয়েছে, কাশি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সুশৃঙ্খলভাবে চালু হয়, এখানকার যুবকদের জীবনযাপন ও খাবারদাবার সবই ভালো। অতীতকালে তারা সম্ভবত চরমপন্থা চিন্তাধারার অধিকারী ছিলো, তবে বর্তমানে কারিগরি কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ভবিষ্যত জীবনের জন্য নতুন দক্ষতা অর্জন করেছে।

ইন্দোনেশিয়ার এশীয় সৃজনশীল গবেষণাগারের চেয়ারম্যান বানপাং সুলয়োনো বলেন, সিনচিয়াংয়ে প্রতিষ্ঠিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চীনের রাষ্ট্রীয় অবস্থা ও বাস্তবতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা সিনচিয়াংয়ের দীর্ঘস্থায়ী নিরাপত্তা ও স্থানীয় জনগণের স্বার্থের সাথে জড়িত, যা মূল দিক থেকে সন্ত্রাসদমন সমস্যা সমাধান করেছে। গত ৩ বছরে সিনচিয়াংয়ে কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেনি। তা থেকে বোঝা যায়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন অনেক কার্যকর।

থাইল্যান্ডের কই তাই ব্যাংকের উপ-মহাপরিচালক ছাই ওয়ে ছাই বলেন, সিনচিয়াংয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে চীন সরকারের সন্ত্রাসদমনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রতিফলিত হয়েছে। এ পদক্ষেপ সিনচিয়াংয়ের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক এবং অন্যান্য দেশকে সন্ত্রাসবাদ দমনে চমত্কার প্রস্তাব প্রদান করেছে।

শ্রীলংকার পথাবিষকারক তহবিলের নির্বাহী পরিচালক লাক্সমান সিরিভাদেনা বলেন, শ্বেতপত্রে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় চরমপন্থাবাদের বিরুদ্ধে আঘাত হানার নতুন পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন ও সন্ত্রাসদমনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ কাজের তাত্পর্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যা শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মরক্কোর আফ্রিকা-চীন সহযোগিতা ও উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসের বুশিবা বলেন, কিছু কিছু দেশ চরমপন্থী ঘটনা ঘটার পর ব্যবস্থা নেয়, তা মূল দিক থেকে সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম নয়। চীনের এ পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা এবং সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থাবাদ নির্মূলে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে।

রুয়ান্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক-বিষয়ক সিনিয়র শিক্ষক ইসমের বুচিনকান মনে করেন, চীন সরকারের এ দায়িত্বশীল ও চমত্কার পদক্ষেপ হিংসাত্মক চরমপন্থাবাদ নির্মূলে অনেক কার্যকর, সাথে সাথে আইন প্রশাসনে মানবাধিকার ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখা যায়।

কেনিয়ার আন্তর্জাতিক বিষয়ক পণ্ডিত এদহোলে কাভেনস সিনচিয়াংয়ের কারিগরি প্রশিক্ষণ কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন। যুবকরা কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা, জ্ঞান ও সঠিক মূল্যবোধ পেতে সক্ষম, যা সক্রিয়ভাবে সমাজের উন্নয়নে যুক্ত করতে পারে, তা সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থাবাদ মোকাবিলার টেকসই পদ্ধতি এবং আফ্রিকান দেশগুলোকে উত্সাহ দেয়।

কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক ধর্মীয় সংলাপ কেন্দ্রের গবেষক নাবিয়ে শালাবি মনে করেন, সিনচিয়াংয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণ ও আইন শিক্ষাদানের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়, যা এতদাঞ্চলের নাগরিকদের সাংস্কৃতিক গুণ উন্নতকরণে সহায়ক এবং স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নেও কল্যাণকর। এ পদক্ষেপ মূল দিক থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করেছে এবং বিশ্বের জন্য অবদান রেখেছে।

পাকিস্তানের মানবসম্পদ প্রশাসনিক গবেষণাগারের প্রধান নাইম বুহারি বলেন, সিনচিয়াংয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে, ধর্মীয় চরমপন্থাবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দ্বারা প্রভাবিত লোকদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য সহায়তা দিয়েছে, যা যুক্তিযুক্ত ও প্রয়োজনীয়।

প্রিয় শ্রোতা, সময় দ্রুত চলে যায়। আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও এখানেই শেষ করতে হবে। এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না। আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn,caoyanhua@cri.com.cn

সময় মতো আমাদের অনুষ্ঠান শুনতে না পারলে বা শুনতে মিস করলে আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ঠিকানা: www.bengali.cri.cn

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, থাকুন সুন্দর ও আনন্দে। আগামী সপ্তাহের একই দিনে একই সময়ে আবারো কথা হবে। যাই চিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল/মুক্তা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040