সংগীত
আকাশ: বন্ধুরা, ২০১৯ সালের নারী ভলিবল বিশ্বকাপ ১৪ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর জাপানে আয়োজিত হয়। এতে চীনা দলটি একটানা ১১টি ম্যাচে জয় লাভ করে এবং সাফল্যের সাথে আবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। আমরা প্রথমে ভাইবোনদের সাথে সে সম্পর্কে কিছু খবর শেয়ার করবো, কেমন?
টুটুল: চীনের নারী ভলিবল দল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় প্রেসিডেন্ট সি'র অভিনন্দন
সেপ্টেম্বর ২৯: চীনের নারী ভলিবল দল ২০১৯ সালের ভলিবল বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন সিপিসি'র সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং। তিনি চীনের নারী ভলিবল দলটির সব খেলোয়াড় ও কোচকে উষ্ণ অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
সি চিন পিং বলেন, ২০১৯ সালের নারী ভলিবল বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় তোমরা ১১টি ম্যাচে জয় লাভ করেছো এবং আবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছো। তোমরা মাতৃভূমি ও জনগণের জন্য সম্মান অর্জন করেছো। প্রতিযোগিতায় তোমরা তোমাদের মান ও ঐক্য এবং অধ্যবসায়ের চেতনা প্রদর্শন করেছো। আমি তোমাদেরকে উষ্ণ অভিনন্দন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, এ বছর হচ্ছে নয়াচীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। সিপিসি'র সব সদস্য ও দেশের সব জাতির জনগণের ঐক্য এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নয়াচীন প্রতিষ্ঠার পর মহান অর্জন অর্জিত হয়। তোমরা অব্যাহতভাবে তোমাদের স্পিরিট ধরে রেখে আরো সুফলাফল অর্জন করবে বলে আমি আশা করি।
উল্লেখ্য যে, ২০১৯ সালের নারী ভলিবল বিশ্বকাপ ১৪ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর জাপানে আয়োজিত হয়। এতে চীনা দলটি একটানা ১১টি ম্যাচে জয় লাভ করে এবং এবং সাফল্যের সাথে আবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়।
বন্ধুরা, চীনের নারী ভলিবল দল ১৯৮১ সাল প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। চীনের বর্তমান নারী ভলিবল দলের কোচ লাং ফিং তখন ওই দলটির খেলোয়াড় ছিলেন। এবার তার দলটি একটানা ১১টি ম্যাচে জয়লাভ করে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়। এ সাফল্যের আনন্দে তিনি চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন না। খেলা শেষে সাংবাদিকদেরকে দেয়া সাক্ষাতকারের সময় তিনি বলেন, "আসলে সত্যি অনেক কঠিন"। এরপর তিনি আর কথা বলতে পারবেন না। কিছুক্ষণ পর, তিনি আবার শান্ত হওয়ার পর, ৫৮ বছর বয়সী লাং ফিং সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছেন। ১৯৮১ সালে চীনা নারী ভলিবল দল তৃতীয় নারী ভলিবল বিশ্বকাপে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়। তখনকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন,
আকাশ:তখন আমার বয়স মাত্র ২০ বছর। ৩৮ বছর পার হয়েছে, আমি তা চিন্তা করি নি যে আমি এখনও এখানে আছি। বলতে পারি যে ওসাকা হচ্ছে একটি সৌভাগ্যের জায়গা।
এ বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনা নারী ভলিবল দলের একসাথে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ৭ মাসের প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার পর, দলটি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে একটি অসাধারণ ফলাফল অর্জন করে।
লাং ফিং আরো জানান, এ বছরের প্রশিক্ষণ শেষে, চীনা নারী ভলিবল দল অগ্রগতি অর্জন করে, কিন্তু আগামী বছরের অলিম্পিক গেমসের প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী হবে, চীনা দলটিকে আরো সুষ্ঠুভাবে প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নিতে হবে।
বন্ধুরা, আমরা কোচ লাং ফিং ও দলটির খেলোয়াড়দের খেলার পর তখনকার আরো কিছু সাক্ষাতকার শুনবো, কেমন?
লাং ফিং বলেন,
আকাশ: আমি ভাবি যে-কোনো প্রতিযোগিতায় "চীন" লেখা জার্সি পড়ার অর্থ হচ্ছে দেশের পক্ষে প্রতিযোগিতা করা, আমার দায়িত্ব হচ্ছে দেশের জন্য গৌরব অর্জন করা। আমরা এ দায়িত্ব পালন করায় অনেক সম্মান বোধ করি।প্রতিটি প্রতিযোগিতায় আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা এবং জাতীয় সঙ্গীত বাজানো। জাতীয় পতাকা হচ্ছে মাতৃভূমির প্রতীক। আমরা উপলব্ধি করেছি যে এত স্বদেশীরা আমাদের সমর্থন করেন। । আমরা তা থেকে অনেক শক্তি পাই।
টুটুল: দলটির খেলোয়াড় ইউয়ান সিন উই 'চীনা নারী ভলিবল দলের স্পিরিট' সম্পর্কে বলেন,
আকাশ: আমরা আগের প্রজন্মের কাছ থেকে অবশ্যই চীনা নারী ভলিবল দলের স্পিরিট উত্তরাধিকার করবো এবং আমরা প্রাণোচ্ছল স্পিরিট প্রদর্শন করবো। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে প্রতিযোগিতায় নিজের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করার চেষ্টা করবো।
টুটল: আরেকজন খেলোয়াড় লিউ ইয়ান হান বলেন,
আকাশ: আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব সম্পন্ন করবো। অবশ্য প্রতিটি প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করা অসম্ভব, কিন্তু নিজেদের মধ্যে এ স্পিরিট থাকলে অনেক কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হলেও আরো বেশি শক্তি পেতে পারবো, সামনের দিকে যেতে পারবো।
টুটুল: বন্ধুরা, চীনা নারী ভলিবল সংক্রান্ত আরেকটি মজার খবর আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
কিছু দিন আগে, পয়লা অক্টোবর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে বেইজিংয়ের থিয়ান আন মেন মহাচত্বরে উদযাপনী অনুষ্ঠান, কুচকাওয়াজ ও শোভাযাত্রা আয়োজন করা হয়। চীনা নারী ভলিবল দলটির কোচ ও খেলোয়াড়রাও বিশেষ করে একটি বড় রঙ্গিন যানে দাঁড়িয়ে থিয়ান আন মেন মহাচত্বরের সামনের ছাং আন সড়ক অতিক্রম করেন। এ সময় একটি মজার ঘটনা ঘটে। তারা সড়ক অতিক্রম করার সময় সড়কের পাশে কুচকাওয়াজে অংশ নেয়া সেনারা তাদের দিকে তাকিয়ে চিত্কার করে বলতে থাকে,
আকাশ: চীনা নারী ভলিবল দল, বিশ্বের শীর্ষস্থান অর্জনকারী।
টুটুল: জবাবে চীনা নারী ভলিবল দলটির খেলোয়াড়রাও সেনাদেরকে চিত্কার করে বলতে থাকে,
আকাশ: তোমরা সবচেয়ে সুদর্শন!
উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর, নারী খেলোয়াড়রা সাংবাদিকদের কাছে তাদের অনুভূতি শেয়ার করেন।
খেলোয়াড় চু থিং বলেন,
আকাশ: গতকাল আমরা জাতীয় দিবসের উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার খবর পেয়ে আনন্দে অনেক উত্তেজিত হই। আমরা আজ যা দেখেছি তা হচ্ছে মাতৃভূমির সমৃদ্ধি। একজন চীনা হিসেবে আমি অনেক গৌরব বোধ করি। ভবিষ্যতে আমি আরো পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নেব, মাতৃভূমির জন্য আরো সম্মান অর্জন করার চেষ্টা করবো।
খেলোয়াড় ইয়ান সিন ইউ বলেন,
আকাশ: আমরা এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আরো পরিশ্রম করে পরবর্তী লক্ষ্য বা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
খেলোয়াড় চাং ছাং নিং বলেন,
আকাশ: আমরা উদযাপনী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সময়, সড়কের পাশে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং গণমুক্তি ফৌজের সেনারা আমাদেরকে চিত্কার করে বলতে থাকে, চীনা নারী ভলিবল দল, বিশ্বের শীর্ষস্থান অর্জনকারী দল। আমার অনেক মুগ্ধ, আমরা সবাই মাতৃভূমিকে ভালোবাসি এবং মাতৃভূমির জন্য গৌরব বোধ করি।
খেলোয়াড় ওয়াং মেং চেই বলেন,
আকাশ: আমরা সড়ক দিয়ে আসার সময় পাশে কিছু সেনা আমাদেরকে সেলুট করেন। তখন আমরা অনেক মুগ্ধ। তখন আমরা এত বেশি উত্তেজিত যে, আবেগে চোখ থেকে পানি পড়েছে। তখন ভাবি, আরো পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নেব, মাতৃভূমির জন্য গৌরব অর্জন করবো।
খেলোয়াড় জেং ছুন লেই বলেন,
আকাশ: আমার জন্ম বেইজিংয়ে, নয়াচীন প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে তখন বেইজিংয়ের পরিবেশ উপলব্ধি করতে পেরেছি। কিন্তু আজকের অভিজ্ঞতা ভিন্ন, আজ মন অনেক উত্তেজনাপূর্ণ এবং অনেক গর্বিত।
আকাশ: ভাই, তাদের খবর ও সাক্ষাতকার শুনে তোমার কেমন লাগছে?
টুটুল:...
আকাশ: বন্ধুরা, আমি আসলে চীনের নারী ভলিবল দলের খেলোয়াড় বিশেষ করে তাদের কোচ লাং পিং'র অধ্যবসায়ের স্পিরিট দেখে অনেক মুগ্ধ, উত্সাহিত এবং অনুপ্রাণিত। তারা আমাদের মধ্যেও স্পিরিট তৈরি করেছেন। তাদের এ স্পিরিট আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার।
টুটুল: