অক্টোবর ১৯: চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান সি চিন পিং গতকাল (শুক্রবার) উ হান শহরে সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও বাহিনীর নেতৃবৃন্দ ও সিআইএসএম কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত্ করেন। তিনি চীন সরকার, জনগণ ও বাহিনীর পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও বাহিনীর নেতৃবৃন্দদেরকে, আন্তর্জাতিক মিলিটারি স্পোর্টস কাউন্সিল (সিআইএসএম)-র কর্মকর্তাদেরকে ও বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দেরকে উষ্ণ স্বাগত জানান।
সি চিন পিং বলেন, আজ, আমরা উ হানে সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস আয়োজন করছি। শতাধিক দেশের প্রায় দশ সহস্রাধিক সেনা একসাথে উহানে মিলিত হয়েছেন। তারা একসাথে আদান-প্রদানের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করছেন। খেলাধুলা হচ্ছে সমাজের উন্নয়ন ও মানবজাতির অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক ও জনগণের মধ্যে আদান-প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খেলাধুলার সাথে সেনাদের একটা সংযোগ রয়েছে। শুটিং, ম্যারাথনসহ অনেক খেলাধুলার ইভেন্ট সামরিক খাত থেকে শুরু হয়েছে।
সামরিক খেলাধুলার মাধ্যমে সেনারা শরীর চর্চা করতে পারেন, স্পিরিট তৈরি করতে পারেন, ঐক্য জোরদার কতে পারেন, সেনাদের ভাবমূর্তি প্রদর্শন করতে পারেন এবং বিভিন্ন দেশের বাহিনীর মধ্যে আদান-প্রদান জোরদার করতে পারেন। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ খেলাধুলার উপর গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরো বলেন, চীন বরাবরই সামরিক খেলাধুলাকে গুরুত্ব দেয়, ব্যাপকভাবে সামরিক খেলাধুলার কার্যক্রম আয়োজন করে এবং ইতিবাচকভাবে আন্তর্জাতিক সামরিক খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিশেষ করে ১৯৭৮ সালে চীন আন্তর্জাতিক মিলিটারি স্পোর্টস কাউন্সিলে (সিআইএসএম) অংশ নেয়ার পর, বিভিন্ন সদস্যদেশগুলোর সাথে একসাথে খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়, সামরিক খেলাধুলার কার্যক্রম আয়োজন করে, সহযোগিতা ও আদান-প্রদান করে এবং আন্তর্জাতিক সামরিক খেলাধুলার ইতিবাচক অংশগ্রহণকারী, নির্মাণকারী ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারীতে পরিণত হয়।
সি চিন পিং জানান, শান্তির জন্ম স্মরণ করার জন্য বিশ্ব মিলিটারি গেমসের জন্ম হয়। বন্ধুত্ব সম্প্রচারের জন্য তা উন্নয়ন হয়। তা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রদর্শন, বন্ধুত্ব জোরদার ও প্রভাব সম্প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। ২০১৫ সালের মে মাসে, সাফল্যের সাথে সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমসের বিডিং জয় করার পর, 'সবুজ, শেয়ারিং, উন্মুক্ত, স্বচ্ছতা' এই ধারণা অনুসারে উচ্চ মাণ ও উচ্চ গুণগতমাণসম্পন্ন গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করেছে চীন সরকার ও বাহিনী। এবারের গেমসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'সেনাদের গৌরব সৃষ্টি করা, বিশ্বের শান্তি নির্মাণ করা'। যাতে গেমসে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়রা অধ্যবসায়ের খেলাধুলার স্পিরিট প্রদর্শন করবে, খেলাধুলার সূর্যালোকের মাধ্যমে যুদ্ধের কুয়াশা দূর করতে পারবে, বন্ধুত্বের মাধ্যমে সভ্যতার যোগাযোগ এগিয়ে নেবে, মনের যোগাযোগ ও সংযোগের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ শক্তি যোগাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা এ বারের বিশ্ব মিলিটারি গেমসকে বিভিন্ন দেশের সানাদের একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার শান্তিপূর্ণ সম্মিলনী এবং বিভিন্ন দেশের সামরিক সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের একটি আন্তর্জাতিক সম্মিলনী হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করবো।
সি চিন পিং আরো বলেন, এবারের বিশ্ব মিলিটারি গেমসের মাধ্যমে চীনা বাহিনী অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে, বিভিন্ন দেশের বাহিনীদের সাথে আদান-প্রদান জোরদার করতে, কার্যকরভাবে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব গ্রহণ করে হাতে হাত ধরে অভিন্ন নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ ও হুমকি মোকাবিলা করতে, বিশ্বের শান্তি রক্ষা ও মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনকে এগিয়ে নেয়ার খাতে আরো বড় অবদান রাখতে ইচ্ছুক।
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরো জানান, সবাই এ বারের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন যুগে চীন ও চীনা বাহিনীর সম্পর্কে আরো জানতে পারবেন, চীনা জনগণের উষ্ণতা ও আন্তরিকতা উপলব্ধি করতে পারবেন বলে আমি আশা করি। কামনা করি এবারের বিশ্ব মিলিটারি গেমস সাফল্যমণ্ডিত হবে, বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি দল ভালো পারফর্মেন্স করতে পারবেন এবং বন্ধুত্ব উন্নয়ন করতে পারবেন। (আকাশ/টুটুল)