ছয় দিনব্যাপী 'দ্বিতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা' গতকাল (রোববার) সফলভাবে শেষ হয়েছে। পরিসংখ্যানে বলা হয়, এবারের মেলায় ৭১.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লেনদেন হয়েছে; যা গতবারের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। অংশগ্রহণকারী বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে 'তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায়' অংশগ্রহণের আবেদন করেছে। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।
'দ্বিতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা' গত ১০ নভেম্বর শেষ হয়। বিশ্বের ১৮১টি দেশ, অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এতে অংশগ্রহণ করে। মেলায় ৩ হাজার ৮ শ'রও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বুথ ছিল। চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক সুন ছেং হাই বলেন, প্রথমবারের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলার চেয়ে এবারের মেলায় ক্রেতাদের আন্তর্জাতিকীকরণের মান ও পেশাগত মান ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ক্রমশ বিভিন্ন খাতের নতুন পণ্য, নতুন প্রযুক্তি এবং পণ্য বিনিময়ের প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'এবারের মেলায় নিবন্ধিত পেশাদার দর্শকদের সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছেন ৭ সহস্রাধিক বিদেশি ক্রেতা। যা প্রথমবারের চেয়ে অনেক বেশি। প্রাথমিক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বিশ্ব ও চীনের মূলভূভাগে নতুন প্রকাশিত পণ্য, নতুন প্রযুক্তি ও সেবাগত পণ্যের সংখ্যা ৩৯১টি। এর মূল্য ৭১.১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা গতবারের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি'।
জার্মান গাড়ি কোম্পানি ওয়েবাস্তো'র চীনা শাখার প্রচার বিভাগের ব্যবস্থাপক সু ওয়েই বলেন, এবারের মেলায় অংশগ্রহণকারী দর্শকদের সংখ্যা গতবারের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
'এবারের মেলায় ক্রেতাদের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গভীর মতবিনিময় করেছি আমরা। আমাদের পণ্যের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করেছে সরকার। আমাদের সর্বশেষ পণ্যের ওপর দৃষ্টি রেখেছে অনেক সংবাদমাধ্যম। আমাদের নবত্যাপ্রবর্তনমূলক পণ্য অধিক থেকে অধিকতর জনপ্রিয় হয়েছে'।
প্রথম চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে নিজস্ব সেবার মানও উন্নত করছে শাংহাই। শাংহাই পৌর ব্যবসায়িক কমিটির মহাপরিচালক হুয়াং ইউয়ান বলেন
'প্রধান স্থলবন্দরে আমদানি মেলার সেবাগত জানালা ও বিশেষ চ্যানেলের সংখ্যা ১২৫টি। তাদের দায়িত্ব সারা দিন আমদানি মেলার কর্মী এবং পণ্যের ভিতর ও বাইরে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সেবা প্রদান করা। এর কার্যকারিতা প্রথমবারের চেয়ে ৬২.৫ শতাংশ উন্নত হয়েছে। সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ভিতর ও বাইরে পণ্য যাওয়া বা আসায় সময় লাগে মাত্র ১৫ সেকেন্ড। প্রথমবারের মতো এবারের মেলায় ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।'
চেক প্রজাতন্ত্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মনে করেন, উন্মুক্তকরণ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গড়ে তোলা, বাণিজ্যিক সংরক্ষণবাদ প্রতিরোধ এবং বৈশ্বিক অংশীদারি সম্পর্ক সৃষ্টি করায় ক্ষেত্রে আমদানি মেলার গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
'বাজার উন্মুক্তকরণে চীন যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা চেক প্রজাতন্ত্রের জন্য বিশাল সুযোগ। আমাদের বাজার রপ্তানি খাতে প্রধান ভূমিকা পালনকারী অর্থনৈতিক গোষ্ঠী। ইউরোপের শিল্পায়নের মান অনুযায়ী সর্বোন্নত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম চেক প্রজাতন্ত্র। আমরা স্থায়ীভাবে এক আরও একটি উন্মুক্ত বিশ্বকে স্বাগত জানাই'।
চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক সুন ছেং হাই বলেন, এ পর্যন্ত, 'তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায়' আবেদন করেছে ২৩০টিরও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বিশ্বের ৫শ' শক্তিশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮০টিরও বেশি।
(ওয়াং হাইমান/তৌহিদ/তুহিনা)