'ব্রিক্স গ্রুপ' ব্যবস্থায় চীন ও ভারতের বহু ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করার প্রত্যাশায় রয়েছে ভারতের বিভিন্ন মহল
  2019-11-14 15:23:56  cri
প্রিয় শ্রোতা, 'ব্রিক্স গ্রুপের' শীর্ষনেতৃবৃন্দের ১১তম শীর্ষসম্মেলন ১৩-১৪ নভেম্বর ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুনরায় বৈঠক করেন। এটি গত অক্টোবর মাসে দু'নেতার চেন্নাই অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর এ বছরের দ্বিতীয়বারের বৈঠক। এবারের বৈঠকের প্রত্যাশায় রয়েছে ভারতের বিভিন্ন মহলের বিশেষজ্ঞরা। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

ভারতের বৈশ্বিক থিঙ্ক ট্যাংকের চীনা গবেষণালয়ের মহাপরিচালক প্রসুন শর্মা মনে করেন, এবারের বৈঠকে চীন ও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই শীর্ষনেতৃবৃন্দ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'বর্তমানে চীন ও ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়নে আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যার সমাধান করা দরকার। কারণ চীন ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এতে উদ্বিগ্ন ভারত'।

চীন ও ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি সম্পর্কে ভারতের নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক স্মরণ সিং নিজের বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি মনে করেন, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালুর বিগত ৪০ বছরে চীনে লক্ষ্যণীয় উন্নয়ন অর্জিত হয়েছে। চীনের উন্নয়ন বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি আমাদের সঠিকভাবে দেখা উচিত। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ভারতে চীনের পুঁজিবিনিয়োগের পরিমাণ অধিক থেকে অধিকতর হয়েছে। চীন থেকে ভারতের আমদানিকৃত পণ্য সত্যিকার ভারতে ছিল না। এই তথাকথিত 'ঘাটতি' ভারতের জন্য বাস্তব কল্যাণ বয়ে এনেছে। বিদ্যুত্, জলসেচ ও সড়ক নির্মাণ এবং নির্মাণ শিল্পসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা শিখেছে ভারত। দু'দেশের বাণিজ্য ঘাটতির নিষ্পত্তিতে দু'দেশ নতুন উপায় খুঁজে বের করতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি'।

শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত থাং ইয়ুংশেং বলেন, চীন ও ভারতের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিক বাণিজ্যিক চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি মনে করেন, চীন ও ভারতের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়নে অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েছে চীন সরকার। আমদানি মেলা ও ব্রিক্স গ্রুপসহ ধারাবাহিক সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে চীন ও ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা মজবুত হবে বলে তিনি আশাবাদী। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'আমি দেখেছি যে, সম্প্রতি ভারতের খাদ্য চীনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি মনে করি, ভবিষ্যতে খাদ্য আমদানি সহযোগিতা ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের বিশাল উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া, চিকিত্সা ও ওষুধ খাতেও চীন-ভারত সহযোগিতা এগিয়ে যাবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ব্রিক্স গ্রুপের বিভিন্ন সদস্য দেশের অর্থনীতি, অর্থ, বাণিজ্য ও উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাস্তব সহযোগিতা অব্যাহত গভীরতর হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিষয়ের যোগাযোগও অব্যাহতভাবে জোরদার হয়েছে। ব্রিক্স ব্যবস্থা হচ্ছে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংকট মোকাবিলা করা, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দেয়া এবং আন্তর্জাতিক গণতন্ত্রকরণকে এগিয়ে নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি।

চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক পরিপূরকতা প্রবল। চীন নির্মাণ শিল্পের বড় দেশ। ভারত সফ্টওয়্যার খাতের বড় দেশ। সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি, চীন ও ভারতের বৈজ্ঞানিক সহযোগিতাও অব্যাহতভাবে জোরদার হবে। আধুনিকায়ন উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জলবায়ু ও পরিবেশ দূষণ সমস্যা উল্লেখযোগ্য। চীন ও ভারতের উচিত ব্রিক্স ব্যবস্থায় এশিয়ার দুটো বড় দেশের দায়িত্ব পালন করে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা'।

(ওয়াং হাইমান/টুটুল/তুহিনা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040