চীন ও ভারতের উচিত ব্রিক্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিনিময় ও সহযোগিতা জোরদার করা: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ
  2019-11-15 14:35:04  cri
'ব্রিক্স গ্রুপের' শীর্ষনেতৃবৃন্দের ১১তম শীর্ষসম্মেলন ১৩-১৪ নভেম্বর ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিক্স গ্রুপের সদস্য হিসেবে ভারত এই ব্যবস্থায় যে ভূমিকা পালন করেছে, তা উপেক্ষা করা যায় না। ভারতের নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া গবেষণা কেন্দ্রের মহাপরিচালক অধ্যাপক বি.আর দিপক চীন আন্তর্জাতিক বেতার (সিআরআই)-কে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, আন্তর্জাতিক সমাজে একতরফাবাদ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ব্রিক্স ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্য রয়েছে। এই ব্যবস্থায় সহযোগিতা জোরদার করা দরকার ভারত ও চীনের। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমি এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

বর্তমান বিশ্বে একতরফাবাদ বাড়ানোর প্রবণতা দেখা দিয়েছে। নতুন অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ব্রিক্স গ্রুপের শীর্ষসম্মেলন এ সময় আয়োজন করা নিঃসন্দেহে বিশেষ তাত্পর্য রয়েছে। অধ্যাপক মনে করেন, বহু দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা যায়, ব্রিক্স ব্যবস্থার তাত্পর্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'বৈশ্বিক আওতায় ব্রিক্স গ্রুপ যে ভূমিকা পালন করেছে তা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিক্স গ্রুপের অর্থনৈতিক শক্তি, জনসংখ্যা, বাজার এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্রিক্স গ্রুপের অবদান'।

গত বুধবার এবারের ব্রিক্স শীর্ষসম্মেলনে বৈঠক করেছেন চীন ও ভারতের শীর্ষনেতৃবৃন্দ। বৈঠকে দু'দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যত্ উন্নয়ন, চেন্নাই অনানুষ্ঠানিক বৈঠক এবং সদ্য সমাপ্ত দ্বিতীয় চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়। অধ্যাপক মনে করেন, ব্রিক্স সহযোগিতামূলক ব্যবস্থায় আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন ভারত ও চীনের সহযোগিতা চালানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি দু'দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সম্পর্ক তিনি বলেন,

'চীন ও ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামো ভিন্ন। কিন্তু, এতে বিশাল পরিপূরকতাও রয়েছে। ভারতের জন্য এই সুযোগ ধরে রাখা উচিত। আমি মনে করি, চীন ও ভারতের উচিত ব্রিক্স সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়া'।

বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তন জোরদার করা হচ্ছে এবারের শীর্ষসম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। এই খাতে চীন ও ভারতের বিস্তারিত উদ্যোগ ও দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম রয়েছে। অধ্যাপক মনে করেন, বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তন খাতে দু'দেশের নিজেদের কিছু দুর্বলতাও আছে। দু'পক্ষ পরস্পরের অভিজ্ঞতা শিখলে, তা ভবিষ্যতে দু'পক্ষের পারস্পরিক সহযোগিতা ও কল্যাণ বয়ে আনবে।

অধ্যাপক বলেন, মানবিক বিনিময় হচ্ছে বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন দেশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের বন্ধন। ব্রিক্স গ্রুপের চলমান মানবিক বিনিময় ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়ের সহযোগিতা, চলচ্চিত্র শিল্পের সহযোগিতা ও প্রকাশনা শিল্পের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম। এতে আরও অনেক সুপ্তশক্তিও রয়েছে। তিনি মনে করেন, ব্রিক্স গ্রুপের দু'টো বড় সভ্যতার প্রাচীন দেশ হিসেবে চীন ও ভারতের উচিত মানবিক বিনিময় ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করা। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'চীন ও ভারতের সভ্যতা সংলাপ ব্রিক্স এই বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার জন্য এক অভিজ্ঞতা প্রদান করেছে। ব্রিক্স গ্রুপের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো এই ব্যবস্থাকে শিখতে পারে। চীন ও ভারতের শীর্ষনেতৃবৃন্দ উভয়েই জোর দিয়ে বলেন, সভ্যতার সংলাপ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ'।

অধ্যাপক আরও বলেন, আগামী দশ বছরে বিভিন্ন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে ব্রিক্স গ্রুপ। বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তন খাতে চীনের সাফল্য উল্লেখযোগ্য, বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা জোরদার করা উচিত।

(ওয়াং হাইমান/টুটুল/তুহিনা)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040