নাইজেরিয়ার উত্পাদন শিল্পে অনেক বছর ধরে কাজ করছে হংকংয়ের প্রতিষ্ঠান লিসি গ্রুপ। এই গ্রুপটি নাইজেরিয়ার চীনা ব্যবসায়ী সমিতির প্রথম অবৈতনিক চেয়ারম্যান প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। আলোচনা সভায় লিসি গ্রুপের নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের জুতা শিল্পের ম্যানেজার লি কুও ওয়েই বলেন,
হংকংয়ের পরিস্থিতির অনেক অবনতি হয়েছে। যা আসলে কিছু পশ্চিমা দেশ নিজ স্বার্থে চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের বিরুদ্ধে তৈরি করা একটি আর্থ-রাজনৈতিক সংকট। হংকং চীনের মূল ভূভাগের কোলে ফিরে আসার ২০ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হংকংয়ে 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থা', 'উচ্চ মানের স্বায়ত্তশাসিত' নীতি কার্যকর করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার হংকংয়ে উচ্চ মানের স্বাধীনতা দিয়েছে এবং হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয় কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করে নি।
লি কুও ওয়েই বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সহিংসতা বন্ধ করা এবং দাঙ্গাহাঙ্গামা অবসান করলে হংকংয়ে কিছু সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন,
হংকংয়ে সত্যিই কিছু গভীর সমস্যা রয়েছে। যেমন, হংকংয়ে বাড়িঘরের দাম অনেক বেশি, অর্থনীতি অনেক সহজ, ধনী ও গরীবের মধ্যে পার্থক্য ইত্যাদি। তবে, শুধু সহিংসতা বন্ধ করা এবং দাঙ্গাহাঙ্গামা অবসানের পরই রাজনৈতিক পদ্ধতিতে এসব সমাধান করা যায়। আশা করছি, হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করবে। যেমন জরুরি আইন জারি করা। এ পদ্ধতিতে দ্রুত সহিংসতা বন্ধ করা যাবে; হংকং আবারও শান্তিপূর্ণ হবে। প্রবাসী চীনা হিসেবে, আমরা হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল সরকারের আইনের শাসন সমর্থন করি, হংকং পুলিশের কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগে সমর্থন দেই; যাতে পুলিশ সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারে এবং হংকংয়ের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পারে। আর শুধু এভাবেই হংকংয়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি পুনরুদ্ধার করা যায়।
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও মনে করেন, বর্তমানে হংকংয়ে সবচেয়ে জরুরি কাজ হলো সহিংসতা বন্ধ করা, দাঙ্গাহাঙ্গামা অবসান এবং শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সমাজও হংকংয়ে সহিংসতাও চায় না। তারা সহিংসতা বন্ধের কার্যক্রমকে সমর্থন করে।
জর্দানের চীন-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সামির আহমেদ মনে করেন, ব্রাসিলিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ব্রিক্স জোটের ১১তম শীর্ষসম্মেলনে হংকং পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। যা চীনের 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থা' নীতি রক্ষা করার ক্ষেত্রে দৃঢ়তার প্রতিফলন। তিনি মনে করেন, 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থায়' হংকং স্থিতিশীলভাবে উন্নত হচ্ছে এবং মূল ভূভাগের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করছে।
সার্বিয়ার আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও অর্থনীতি গবেষণাগারের 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণাকেন্দ্রের মহাপরিচালক মনে করেন, চীন বরাবরের মতো আইনের আওতায় দেশের নিরাপত্তা ও সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। চীন সরকার নিশ্চয়ই দৃঢ়ভাবে 'এক দেশ, দুই ব্যবস্থা' নীতি বাস্তবায়ন করবে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষা করবে।
(শুয়েই/তৌহিদ)