বুধবার বিকালে বেইজিংয়ে গণমহাভবনে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সুরিনামের প্রেসিডেন্ট ডিজায়ার বাউটারসের জন্য স্বাগত অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। বৈঠকে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নের ইতিবাচক মূল্যায়ন করে প্রেসিডেন্ট সি আশা করেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো উচ্চ মানে উন্নীত হবে। তিনি বলেন,
'সুরিনাম হল নয়াচীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রথম দফা ক্যারিবীয় দেশের অন্যতম। দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪৩ বছরে সবসময় পরস্পরকে সমর্থন করে, উপলব্ধি করে এবং নির্ভর করে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বড় এবং ছোট দেশের সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত হিসেবেও বটে। চীন সুরিনামের সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে উন্নীত করতে ইচ্ছুক'।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চীন ও সুরিনামের উচিত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পঞ্চশীল নীতি মেনে নেয়া, পরস্পরের কেন্দ্রীয় স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরস্পরকে সমর্থন করা। চীন সরকার ও জনগণ দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা রক্ষা এবং দেশের ঐক্য বাস্তবায়নে দৃঢ়ভাবে অবিচল থাকবে। এই বিষয়ে সুরিনামের কঠোর সমর্থনের ধন্যবাদ জানায় চীন। চীন বরাবরের মত সুরিনামের দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং অর্থনীতি ও সমাজের উন্নয়নের চেষ্টাকে সমর্থন করবে। দু'পক্ষের উচিত অবকাঠামো নির্মাণ সম্প্রসারণ করা, মত্স্য শিল্প, টেলিযোগাযোগ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খাতের সহযোগিতা বাড়ানো। চীন চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সুরিনামে পুঁজি বিনিয়োগের উত্সাহ দেয়। চীন সুরিনামে চিকিত্সা বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবে। দু'দেশের উচিত বিশ্বব্যাপী সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখা, বহুপক্ষবাদকে সমর্থন করা, উন্মুক্ত ধরনের বিশ্ব অর্থনীতি গড়ে তোলা, দু'দেশ এবং ব্যাপক উন্নয়নশীল দেশের অভিন্ন স্বার্থকে রক্ষা করা।
সি চিন পিং বলেন, চীন ও ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় দেশ সবই উন্নয়নশীল দেশ এবং আন্তর্জাতিক নতুন অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর অন্যতম। চীন ও ল্যাটিন আমেরিকান দেশের সম্পর্কের বিরাট উন্নতি হয়েছে। তা দু'পক্ষের জন্য কল্যাণও বয়ে এনেছে। চীন ল্যাটিন আমেরিকান দেশের সঙ্গে সমান ও সমতার ভিত্তিতে দু'পক্ষের সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক।
বাউটারস গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, প্রেসিডেন্ট সি'র নেতৃত্বে, নতুন যুগে চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্র নিশ্চয় সফল হবে এবং চীনা জনগণ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। তিনি বলেন,
'আমার এবার চীন সফর খুব তাত্পর্যপূর্ণ। আমরা 'এক অঞ্চল এক পথ' আওতায় দু'দেশের সহযোগিতার ওপর অত্যন্ত গুরুত্ব দেই। তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। সুরিনাম 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্কের কৌশলগত মান বাড়াতে ইচ্ছুক।
তিনি আরো বলেন, হংকং ইস্যু পুরোপুরি চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সুরিনাম 'এক চীন নীতি'তে অবিচল থাকবে, চীনের একীকরণের সমর্থন করে। সুরিনাম চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের আচরণের বিরোধিতা করে।
(শুয়েই/টুটুল)