গত সোমবার জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন কনভেনশন সংক্রান্ত স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর ২৫তম সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও সংশ্লিষ্ট আলোচনা ইতোমধ্যেই এক সপ্তাহ আগে চালানো হয়েছে। এবারের সম্মেলনের কাঠামোতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর ২৫তম সম্মেলন ছাড়া, আরও ৪টি সংশ্লিষ্ট সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে অবদান , অর্থ, প্রযুক্তি, স্বচ্ছলতা, মোকাবিলামূলক ব্যবস্থা, সামর্থ্য প্রতিষ্ঠা ও কৃষিসহ ৮০টি আলোচ্য বিষয়। সম্মেলনের সচিবালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭টি স্বাক্ষরকারী দেশ ও পর্যবেক্ষক সদস্য দেশের ২৬ হাজার প্রতিনিধি এবারের সম্মেলনে অংশ নিতে নিবন্ধিত হন। এর মধ্য দিয়ে এবারের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক সমাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
গেল বছর স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর ২৪তম সম্মেলনে বিভিন্ন পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে 'প্যারিস চুক্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ বিস্তারিত বিষয়' গৃহীত হয়। এবারের সম্মেলন হচ্ছে 'প্যারিস চুক্তি' আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়নের আগে চূড়ান্ত একবার স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর সম্মেলন। সুতরাং, 'প্যারিস চুক্তির সংখ্যাগরিষ্ঠ বিস্তারিত বিষয়' সম্পন্ন করা হচ্ছে এবারের সম্মেলনের প্রধান দায়িত্ব এবং কঠিন বিষয়। চীনা প্রতিনিধিদলের উপ-সচিব এবং চীনের প্রাকৃতিক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু বিভাগের উপ-মহাপরিচালক লু সিন মিং বলেন,
'অনেক দেশ মনে করে, 'প্যারিস চুক্তির' ষষ্ঠ ধারা বহুপক্ষবাদের কার্যকারিতার সঙ্গে জড়িত। বর্তমান এই বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের আরও বেশি মতভেদ রয়েছে। সম্মেলনের চলমান অবস্থা থেকে দেখা যায়, দায়িত্ব সময়মতো সম্পন্ন না হবার সম্ভাবনাও রয়েছে'।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান উন্নত দেশগুলো ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতভেদ প্রধানত চুক্তির ষষ্ঠ ধারা, চতুর্থ ও অষ্টম ধারার সঙ্গে জড়িত। সুতরাং, আলোচনা বেশি কঠিন হয়ে উঠেছে।
এ ছাড়া, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক সমাজে এমন আওয়াজ দেখানো হয়েছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা প্রক্রিয়ায় লক্ষ্যটি পুনরায় নির্ধারণ করবে।
চীন মনে করে, বর্তমান সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে ইতোমধ্যেই নির্ধারিত লক্ষ্যটি কার্যকরভাবে কাজে লাগানো। বিশেষ করে ২০২০ সালের আগে উন্নত দেশগুলোর কার্যকারিতা সচেতন হওয়া উচিত। এ সম্পর্কে লু সিন মিং বলেন,
'প্যারিস চুক্তিতে ইতোমধ্যেই নির্ধারিত লক্ষ্যটি হচ্ছে এই শতাব্দীর শেষ দিকে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ২ সেলসিয়াসের মধ্যে , ভাল হলে ১.৫ সেলসিয়াসের মধ্যে নিয়ন্ত্রণ করা। ২০২০ সালের আগে উন্নত দেশগুলো যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে সকল উন্নত দেশগুলোর প্রতি আরেকবার আহ্বান জানায় চীন'।
চীন কেবল যে সর্বোচ্চ উন্নয়নশীল দেশ তা নয়, তা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত বহুপক্ষীয় প্রক্রিয়ায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে এসেছে। চীনের প্রতিনিধিদলের উপ-প্রধান এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত আলোচনা বিভাগের বিশেষ প্রতিনিধি সুন চিন বলেন,
'চীন সবসময় মনোযোগ দিয়ে 'প্যারিস চুক্তির' বিষয় মেনে চলছে। নিজের আওতায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব বহণ করতে চীন আগ্রহী'। (ওয়াং হাইমান/টুটুল/তুহিনা)