রোববারের আলাপন-191222
  2019-12-27 10:05:12  cri

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন 'রোববারের আলাপন'। আপনাদের সঙ্গে আছি এনামুল হক টুটুল এবং শিয়েনান আকাশ।

আকাশ: ভাই, আজ একটি বিশেষ দিন?

টুটুল: কি দিন ভাই?

আকাশ: আজ হচ্ছে 'তং চি'

টুটুল: 'তং চি'?

আকাশ: হ্যাঁ। আজ হলো বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ রাত, আর বছরের সবচেয়ে ছোট দিন। আজকের পর রাতের সময় ধীরে ধীরে কমে যাবে, আর দিন ধীরে ধীরে দীর্ঘ বা লম্বা হবে।

টুটুল: তাই নাকি? তাহলে সত্যি এটি একটি বিশেষ দিন। তাহলে ভাই, চীনে 'তং চি'র কি বিশেষ রীতিনীতি আছে?

আকাশ: ভাই, চীনের উত্তরাঞ্চলে, যেমন ধর আমার জন্মস্থান হানতানে, 'তং চি'র দিনে সবাইকে চাও চি অর্থাত্ ডাম্পলিং খেতে হয়।

টুটুল: বন্ধুরা, চাও চি হচ্ছে.... ভাই, তাহলে কেন এদিন চাও চি খেতে হয়?

আকাশ: কারণ এ দিন চাও চি না খেলে, শীতকালে অনেক ঠাণ্ডার কারণে কান জমাটবদ্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবে, এমনকি কান পড়েও যেতে পারে।

টুটুল: তাই নাকি? তাহলে আমি এ অনুষ্ঠান শেষে তাড়াতাড়ি চাও চি খাবো।

আকাশ:হাহা

টুটুল: ভাই, কিন্তু চীনের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের রীতিনীতি কি?

আকাশ: চীনের দক্ষিণাঞ্চলের কোন জায়গা তোমার সবচেয়ে পছন্দ?

টুটুল: অবশ্যই ইউ নান প্রদেশ।...

আকাশ: আচ্ছা, তাহলে আমরা ইউ নান প্রদেশের রীতিনীতি শুনবো, কেমন? মিস কান লু ঠি, তার বাংলা নাম শিশির, তিনি হচ্ছেন ইউ নান মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষার শিক্ষক। তিনি এখন ভারতে পিএইচডি করছেন। আমি উইচ্যাটের মাধ্যমে তার সাক্ষাত্কার নিয়েছি। আমরা এখন শুনবো, ইউ নান প্রদেশে 'তং চি'তে মানুষ কি কি খায়।

শিশির(টুটুল): 'তং চি' এসেছে, ইউ নান প্রদেশের মানুষ কিভাবে তা উদযাপন করে? ইউ নান প্রদেশে আসলে অনেক সংখ্যালঘু জাতি রয়েছে, এজন্য বিভিন্ন জায়গার রীতিনীতি ভিন্ন। ফলে 'তং চি'তে আমাদের অনেক ভিন্ন ভিন্ন রীতিনীতি রয়েছে। আমি এখন শুধু বলবো আমাদের বাড়িতে আমরা কি করি 'তং চি'তে। আমরা বিশেষ করে তং মিয়ান থাং ইয়ান খাই, তং মিয়ান থাং ইয়ান সম্পর্কে হয়তো সবাই বেশি কিছু জানে না, আসলে এটা হচ্ছে আটাময়দা থেকে তৈরি এক ধরনের খাবার। এ খাবার খেতে বেশ মিষ্টি। এছাড়া আমরা ছি পাও খাই, ছি পা হচ্ছে ভাত থেকে তৈরি এক ধরনের খাবার। এ ধরনের খাবার রান্নার পর সবাই মিলে একসাথে খাই এবং 'তং চি' উদযাপন করি।

আকাশ: ভাই, শুনতে কেমন লাগছে? বাংলাদেশে এদিন অথবা অনেক ঠাণ্ডার সময়, কি কি খেতে হয় অথবা কোনো বিশেষ রীতিনীতি বা দিবস আছে নাকি ভাই?

সংগীত

আকাশ: বন্ধুরা, সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস অক্টোবর মাসে চীনের উ হান শহরে আয়োজিত হয়। এ উপলক্ষে আমি উ হানে গিয়ে আপনাদের জন্য সংশ্লিষ্ট খবর ও প্রতিবেদন লিখেছি। আমরা আমাদের অনুষ্ঠানে অব্যাহতভাবে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?

টুটুল: বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এবারের বিশ্ব মিলিটারি গেমসে অংশগ্রহণকারীদের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?

২৭ অক্টোবর সপ্তম বিশ্ব মিলিটারি গেমস চীনের উ হান শহরে সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয়। বিশ্ব মিলিটারি গেমসের মশাল ইতোমধ্যে নিভে গেছে। কিন্তু যারা মিলিটারি গেমসে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করেছেন, তারা হয়তো কখনোই এই গেমসের স্মৃতি ভুলবেন না।

উহানে বিশ্ব মিলিটারি গেমস উপলক্ষে একটি 'অ্যাথলেটস ভিলেজ' স্থাপন করা হয়। এখানে একটি বিশেষ লন্ড্রি রয়েছে। এতে যারা কাজ করেন তারা সবাই চীনের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন। তারা সবাই ভ্যাটেরেন।

লন্ড্রির মালিকের নাম ওয়াং চি তোং, এ বছর তার বয়স ৫৬ বছর। তিনি আগে চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের সশস্ত্র পুলিশ ছিলেন। তিনি প্রায় ত্রিশ বছর আগে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন।

এ লন্ড্রিতে তিনি ও তার বিশ জনেরও বেশি সহকর্মী বিশ্ব মিলিটারি গেমসে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা, সেনাদের ইউনিফর্ম ও খেলোয়াড়দের জার্সি পরিষ্কার করেন।

বিশ্ব মিলিটারি গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দু'দিন আগে, তারা সহস্রাধিক সেনাদের ইউনিফর্ম ও বিশ্ব মিলিটারি গেমসের তিন শতাধিক পতাকা ও জাতীয় পতাকা ইস্ত্রি করেন।

লন্ড্রি খাতে ওয়াং চি তোং দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন, তারপরও তিনি প্রতিটি মুহূর্ত মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন। প্রতিবার সেনাদের বিভিন্ন ধরনের ইউনিফর্ম হাতে পাওয়ার সময়, তিনি সব কিছুর প্রতি গভীর নজর রাখেন। তিনি বলেন,

আকাশ: সেনা ইউনিফর্মের অর্থ অসাধারণ। তার মানে হলো দায়িত্ব, মিশনের চেতনা। তা হচ্ছে পবিত্র।

তিনি এবং তার অংশীদারের আরেকটি সম্মানের দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন দেশের জাতীয় পতাকা ইস্ত্রি করা। তিনি বলেন,

আকাশ: আমরা এ বিষয়ে অনেক সতর্ক এবং যত্নশীল। আমাদেরকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, খেলার মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় তা যেন পরিষ্কার এবং মসৃণ থাকে। এটি কেবল আমাদের দায়িত্ব-ই নয়, একজন ভ্যাটেরেন হিসেবে, বিশ্ব মিলিটারি গেমসে অংশ নিতে অনেক গৌরব বোধ করি।

আকাশ: ভাই, আসলে বিশ্ব মিলিটারি গেমসে ওখানে থাকার সময়, এরকম অনেক গল্প শুনে আমি অনেক মুগ্ধ হয়েছি।

বিশ্ব মিলিটারি গেমসের 'অ্যাথলেট ভিলেজ'- এর ভেতরে একটা ফায়ার স্টেশন আছে। আমি সেখানে গিয়ে দেখেছি, দমকলবাহিনী সবসময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে প্রস্তুত হয়ে বসে আছেন। আমি জিজ্ঞাস করি, কেন? সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আমাকে জানান, যাতে কোনো বিলম্ব না করেই ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলতে পারি।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040