প্রতিদিন সকাল ১০টায় ৬২ বছর বয়সী ম্যানুয়েলা দোকানে আসেন এবং দোকানের বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তার এই দোকানের নাম হলো 'কুল থিংজ পর্তুগিজ স্পট' (Cool-ThingzZ PortugueseSpot)।
দোকানের বৈচিত্র্যময় স্কিন কেয়ার, কারুশিল্প, রেড-ওয়াইন ও মসলাসহ বিভিন্ন পণ্য পর্তুগাল থেকে এসেছে। বেশিরভাগ জিনিসই ম্যাকাওয়ের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। ম্যানুয়েলা বলেন, দোকানটি মাত্র এক বছরেরও কিছু বেশি সময় চালু হয়েছে। তারপরও এটি অনেক ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
ম্যানুয়েলা বলেন,
'দোকানের প্রধান ক্রেতারা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মানুষ। তবে চীনের মুলভূভাগের ক্রেতার সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তারা রেড-ওয়াইনের বিভিন্ন বিষয় জানতে চান। আর এক্ষেত্রে আমি খুব দক্ষ।'
ম্যানুয়েলা স্বামীর সঙ্গে ম্যাকাওয়ে ৩৬ বছর ধরে রয়েছেন। এখানে তার তিনটি মেয়ে ও একটি ছেলে আছে। খুব সুখী একটি বড় পরিবার। ম্যানুয়েলার বড় মেয়ে আন্না সালেমা ম্যাকাওয়ের সরকারি বিভাগে কাজ করেন। সময় পেলে তিনি দোকানে মাকে সাহায্য করেন। আন্না ম্যাকাওয়ে বড় হয়েছেন এবং বেইজিংয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন। পর্তুগিজ ভাষা ও ইংরেজি ভাষা ছাড়াও, আন্না সালেমা ম্যান্ডারিন ও ক্যান্টোনিজ বলতে পারেন। আন্না বলেন,
'মাত্র ৯ মাস বয়সে আমি ম্যাকাওয়ে আসি। আমার ছোট বোন ও ভাই ম্যাকাওয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। ম্যাকাও আমার বাসা। আমি ম্যাকাওয়ে বড় হয়েছি।'
২০১৯ সালে চীনের কোলে ম্যাকাওয়ের ফিরে আসার ২০তম বার্ষিকী এবং ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ২০তম বার্ষিকী। চীনের অধীনে ফিরে আসার পর ম্যাকাওয়ের পরিবর্তনকে 'বিস্ময়কর' বলে মূল্যায়ন করেন ম্যানুয়েলা। গণ-স্থাপনা আরও পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে, রেস্তোরাঁর সংখ্যা বেড়েছে এবং পর্যটকও বেশি হয়েছে। ম্যাকাওয়ের ভবিষ্যত আরও উজ্জ্বল হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তিনি বলেন,
'আমি মনে করি, ম্যাকাওয়ের ভবিষ্যত আরও ভালো হবে। যারা এখানে ঘুরতে আসেন, তারা এখানে থাকতে চান। পর্যটকদের সংখ্যা বাড়লে আমার জন্য ভালো। বিভিন্ন সংস্কৃতি মিশ্রণের ফলে ম্যাকাও অনেক আকর্ষণীয় শহর হয়ে উঠেছে। মানুষ একে অপরের কাছ থেকে শিখতে পারে এবং সবাই সহাবস্থান করছে। এটিই হলো আমার এখানে বসবাস ও দোকান খোলার কারণ।'
এক বছর চেষ্টার পর ম্যানুয়েলার দোকান খুব ভালোভাবে চলছে। মেয়ের সাহায্যে তিনি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও নানা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে জিনিসপত্র বিক্রির পথ সম্প্রসারণ করছেন।
ম্যাকাও বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকার এবং চীন-পর্তুগালের বাণিজ্যিক সহযোগিতার সেবাসহ বিভিন্ন সংস্থার সমর্থনে ম্যানুয়েলার দোকানের পণ্য 'দ্বিতীয় চীন আমদানি মেলায়' প্রদর্শিত হয়। ২০২০ সালে তিনি নিজ উদ্যোগে আমদানি মেলায় অংশ নেবেন। মেলায় পর্তুগালের বৈশিষ্ট্যময় বিভিন্ন পণ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরার প্রত্যাশা করেন তিনি। ভবিষ্যতে চীন ও পর্তুগালের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশা করেন ম্যানুয়েলা।
লিলি/তৌহিদ