দ্য রেড স্টারস
2021-07-22 16:33:29

দ্য রেড স্টারস_fororder_1

দ্য রেড স্টারস_fororder_2

দ্য রেড স্টারস_fororder_3

দ্য রেড স্টারস_fororder_4

দ্য রেড স্টারস_fororder_5

দ্য রেড স্টারস_fororder_6

একশ বছর গোটা বিশ্বের দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ‘এক পলক’ মাত্র! তবে, এই একশ’ বছরে চীনে অভূতপূর্ব বিশাল উন্নয়ন ঘটেছে। আপনি বিশ্বাস করুন বা না-করুক, এসব কিন্তু একটি সহজ চিন্তাধারা থেকে উত্সারিত হয়েছে। আর তা হলো- উঠে দাঁড়ানো এবং বেঁচে থাকা।

শত শত বছর ধরে অনেক বিদেশি কৌতূহল ও সন্দেহ নিয়ে চীনে এসেছেন।

তারা কারা ছিলেন? তারা কি দেখেছেন? চীনের সঙ্গে তাদের ভাগ্যের কি সমন্বয় হয়েছিল?

 

পশ্চিমা ও পূর্ব দেশের চিন্তাভাবনার সমন্বয়ে তারা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শত বছরের দীর্ঘ অনুশীলন ও চীনের বিশাল পরিবর্তন রেকর্ড করেছেন বা এখনও করছেন।

এডগার স্নো ও ইসরায়েল এপস্টেইনসহ চীনে আসা প্রথম দফার পশ্চিমা সাংবাদিক। এক ভিডিও-বার্তায় সিপিসি প্রসঙ্গে তারা নতুন যুগে বিদেশি ইন্টারনেট ইনফ্লুয়েন্সারদের চিন্তাধারা তুলে ধরেন। বিভিন্ন যুগে বাস করা বিদেশিদের চোখে সিপিসি’র শত বছরের কাজকর্মের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পরিবর্তনগুলো উঠে এসেছে।

 

১০৬ বছর আগে ইসাবেল ক্রুক নামে এক কানাডিয়ান নৃতাত্ত্বিক চীনে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি চীনের দারিদ্র্য ও যুদ্ধের সময় কাটিয়েছেন এবং চীনা জনগণের কষ্ট স্বচক্ষে দেখেছেন। জীবনের এক পর্যায়ে তিনি সাম্যবাদ বেছে নেন এবং স্বামী ডেভিড ক্রুকের সঙ্গে ব্রিটেনের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান করেন।

 

তরুণ বয়সে ক্রুক দম্পতি, এডগার স্নো ও এপস্টেইন চীনে অনেক অবিস্মরণীয় সময় পার করেছেন। ২০২১ সালের এক বিকেলে অধ্যাপক ইসাবেল ক্রুক এডগার স্নোর লেখা ‘red star over china’ বইটি পড়ছিলেন। বইটি পড়তে গিয়ে তার মনে বিচিত্র অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

 

১৯৩৬ সালে প্রথম পশ্চিমা সাংবাদিক হিসেবে স্নো উত্তর শায়ানসি প্রদেশের সোভিয়েত অঞ্চলে পৌঁছান। তিনি দেখেন, কুওমিনতাং পার্টির নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলের তুলনায় সেখানকার পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন রকম। এসব দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। তিনি ক্যামেরা দিয়ে অনেক ছবি তোলেন। ধাপে ধাপে তিনি সিপিসি’র সঙ্গে পরিচিত হন এবং পরবর্তীতে চীনে বিভিন্ন পর্যায়ের সিপিসি’র লোকজনের সাক্ষাত্কার নেন। এরপর সার্বিক বিষয়টি তার সামনে উন্মোচিত হয়।

 

৮৫ বছর আগে স্নো ‘red star over china’ নামের বইটিতে পূর্বাভাস দেন যে, সিপিসি চীনকে যুদ্ধ, সংঘাত ও দরিদ্রতা থেকে উদ্ধার করতে পারবে। বহু বছর আগে তিনি কীভাবে এত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথাটি বলেছিলেন?

 

১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার সময় স্নো’র সেরা বন্ধু ও ছেলে, পোল্যান্ডের লেখক ইসরায়েল এপস্টেইন রেকর্ডার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে ‘The March of the volunteers’ সংগীতটি বাজিয়েছিলেন।

১৯৫১ সালে এপস্টেইন সামুদ্রিক পথে ৪০ দিনেরও বেশি যাত্রা করে অবশেষে তার পছন্দের ভূমিতে দাঁড়াতে সক্ষম হন। চোখের সামনে চীনের ভাবমূর্তি একদম বদলে যেতে দেখেছেন তিনি। এপস্টেইন স্মৃতিচারণ করে বলেন, বেইজিংয়ের সুপ্রাচীন মন্দির ও রাজপ্রাসাদ কেবল বিদেশি পর্যটকদের জন্যই উন্মুক্ত হয় নি, বরং প্রথমবারের মতো চীনা জনগণের জন্যও তা খুলে দেওয়া হয়।

 

সেই সময় থেকে এপস্টেইন চীনের ইংরেজি ভাষার ম্যাগাজিনের জন্য কাজ করা শুরু করেন। গোটা জীবনে তিনি চারবার তিব্বতে যান ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সাক্ষাত্কার নেন। এরপর তিনি ‘তিব্বতের পরিবর্তন’ নামের বইটি রচনা করেন। তার এ বইয়ের কারণে পশ্চিমা জগত্ প্রথমবারের মতো রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিব্বতের বিশাল পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জানতে পারে। তারপর এপস্টেইন চীনের নাগরিকত্ব পান এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন।

 

৪০ বছর আগে রিক নামে একজন মার্কিন উপস্থাপক হংকংয়ের বেতারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতেন। তিনি শেনচেনের একজন দর্শকের কাছ থেকে চিঠি পান। তারপর শেনচেনের বিভিন্ন পরিবর্তন সম্পর্কে তিনি কৌতূহলী হয়ে ওঠেন। গত শতাব্দীর ৯০ দশকে রিক বেইজিংয়ে চাকরি করতেন রিক। তার উপস্থাপনায় ‘জয় এফএম’ অনুষ্ঠানটি এক প্রজন্মের মানুষের সুন্দর স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। রিক চীনের সংস্কার, উন্মুক্তকরণ ও দ্রুত উন্নয়নের ইতিহাসের সাক্ষী।

৪০ বছর পর রিক প্রথমবার শেনচেনে যান। আগের একটি ছোট জেলেপল্লী এখন চোখ ধাঁধানো আধুনিক শহর হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

 

২০১২ সালে জেসেন লাইটফুট নামে এক ব্রিটিশ তরুণ চীনে আসেন। তিনি কুইচৌ প্রদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করার সিদ্ধান্ত নেন। আট বছরে তিনি দেখেছেন, গ্রামাঞ্চল ধীরে ধীরে শহরের মতো আধুনিক হয়ে উঠছে। জনগণের জীবন দিন দিন সুন্দর হচ্ছে। তিনি নিজের দেখা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভ্লগ তৈরি করেন। তার ভ্লগ বিদেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তার অনুসারীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

জেসেন দেখেছেন যে, ‘red star over china’ বইটি চীনের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের অবশ্য-পাঠ্য বইয়ের তালিকায় রয়েছে। স্নো’র দূরদর্শিতা ছিল সত্যিই আশ্চর্যজনক।

 

শত বছর ধরে স্নো, এপস্টেইন, ইসাবেল, রিক ও জেসেন এবং আরো লাখ লাখ আন্তর্জাতিক বন্ধু নিজ চোখে সিপিসি’র নেতৃত্বে চীনা জনগণের অর্জিত বিস্ময়কর সাফল্য প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা নিজেদের মতো করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও চীনা জনগণের চমত্কার গল্প তুলে ধরেছেন। তাদের অভিজ্ঞতা চীন ও বিশ্বের সম্পদ।

(লিলি/তৌহিদ/শুয়ে)