চীনের কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো অনেক উন্নত হয়েছে; বেড়েছে প্রযুক্তিকর্মীদের কদর ও সম্মান
2021-09-18 17:00:35

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে উচ্চশিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোর শিক্ষাও অনেক উন্নত হয়েছে; শিক্ষার্থীরা আজকাল কারিগরি শিক্ষার প্রতিও ঝুঁকছে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের সাথে সাথে দক্ষ প্রযুক্তিবিদের চাহিদা অনেক বেড়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের পক্ষে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে স্নাতক হওয়ার পর ভালো চাকরি পাওয়া আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। এ ধরনের কর্মীর বেতনও অনেক বেড়েছে। আজকের আসরে চীনের চেচিয়াং প্রদেশের প্রযুক্তিবিদদের গল্প তুলে ধরবো।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চীনের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদের মান আগের চেয়ে বেড়েছে। এখন থেকে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রি নেওয়ার পর সংশ্লিস্ট শিক্ষার্থীরা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের মতো সমান বেতন পেতে পারেন। মে মাসে চীনের চেচিয়াং প্রদেশের ওয়েনচৌ শহরের একটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান দক্ষ প্রযুক্তিকর্মীদের বার্ষিক বেতন ১০ লক্ষাধিক ইউয়ান অফার করেছে এবং জুলাই মাসে চেচিয়াং প্রদেশে প্রথম সিনিয়র প্রযুক্তিকর্মীর পদ সৃষ্টি হয়েছে। আর অগাস্টে চেচিয়াং প্রদেশের সরকারের অনুমোদনে দুটি প্রযুক্তিগত একাডেমি আর ৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

আসলে, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ চীনের চেচিয়াং প্রদেশের প্রযুক্তিগত কর্মীর সংখ্যা ১ কোটি ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি ছিল, যাদের মধ্যে দক্ষ কর্মী ৩১.৭ শতাংশ, যা গত ১০ বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। দক্ষ প্রযুক্তিকর্মীর সংখ্যা দ্রুত প্রবৃদ্ধির সাথে  সরকারের সমর্থন আর সুবিধাজনক নীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

চীনের চেচিয়াং প্রদেশের শাওশিং ক্যছিয়াও জল গ্রুপের নিষ্কাশন কোম্পানির বয়স্ক ওয়েল্ডার তিং ওয়ে সুং চলতি বছরের জুলাই মাসে সিনিয়র কর্মী হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং তিনি চেচিয়াং প্রদেশের প্রথম সিনিয়র প্রযুক্তিকর্মী।

গত ৩০ বছর ধরে তিনি ওয়েল্ডারের কাজ করছেন এবং তাঁর কাজ খুবই ভালো। তাঁর নেতৃত্বে ৭০ জনেরও বেশি উচ্চ প্রযুক্তির কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তিনিও এ কারণে সিনিয়র প্রযুক্তিকর্মীর পদ লাভ করেছেন। এ যোগ্যতা অর্জন জনাব তিংয়ের জন্য বড় মর্যাদা ও গর্বের ব্যাপার। কারণ, এখন সবাই তাকে অধ্যাপক তিং বলে ডাকে। তিনি নিজের প্রযুক্তিগত দক্ষতা চর্চা করার সাথে সাথে তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জনের চেষ্টাও করছেন।

জনাব তিং সিনিয়র টেকনিশিয়ান পদ অর্জনের পর থেকে তাঁর অনেক পুরনো বন্ধু যারা বিভিন্ন খাতের প্রযুক্তিকর্মী ও দক্ষ—তারাও তিং’র কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য জানার আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা জানতে চান: তিনি কিভাবে এ পদ পেয়েছেন? এ পদ অর্জনের জন্য কী কী দক্ষতা থাকা প্রয়োজন? ইত্যাদি।

আসলে তিং ওয়ে সুং’র মতো আরও অনেক ভালো কর্মী রয়েছেন, যারা দীর্ঘকাল ধরে উত্পাদনকাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে এবং তারা অনেক দক্ষও বটে। তবে, অতীতে কেবল থিসিস ও স্নাতকপত্রসহ সিনিয়র হওয়ার জন্য আবেদন করা যেতো। তবে, ২০২০ সালে এ নিয়ম পুরোপুরি পরিবর্তন করা হয়েছে। বিভিন্ন মহলের কর্মীরা সিনিয়র হওয়ার জন্য আবেদন করতে শুরু করেছেন। চেচিয়াং প্রদেশে এদের সংখ্যা ১০৩৬ জন এবং তাদের মধ্যে ৫৫৫ জন প্রকৌশল খাতের সিনিয়র পদ পেয়েছেন। দক্ষ ব্যক্তি ও পেশাদার প্রযুক্তিকর্মী—সবাই এখন সিনিয়র হবার জন্য আবেদন করতে পারেন।

জনাব তিংয়ের দৃষ্টিতে পেশাগত যোগ্যতাপত্রের মূল্যায়নব্যবস্থা যুব দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রেখে থাকে। কয়েক দিন আগে তিনি কয়েকটি প্রযুক্তি একাডেমিতে যান এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সেমিস্টারের প্রথম ক্লাস নেন। তিনি বলেন, সর্বপ্রথমে বিভিন্ন পেশার প্রতি আগে থেকে যেসব ধারণা-অনুমান সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো বাদ দিতে হবে। তবে, প্রযুক্তি বা কারিগরি স্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার পর এখন শুধু সাধারণ কর্মী নয়, বরং সিনিয়র ও দক্ষ কর্মী হিসেবে পদোন্নতিও পাওয়া সম্ভব।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের চেচিয়াং প্রদেশে নতুন যুগে প্রযুক্তি কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রকল্প বিষয়ক প্রস্তাব গৃহীত হয়ে। তা থেকে বোঝা যায়, কারিগরি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মতো সমান সুযোগ পেতে পারেন। তারা সরকারি কর্মীদের পরীক্ষা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির চাকরির আবেদন, সংশ্লিষ্ট পেশার যোগ্যতার পরীক্ষা ও বেতন মানদন্ডের নির্ধারণে সমান সুযোগও পাবেন।

একজন প্রযুক্তি একাডেমির ছাত্র হিসেবে সংশ্লিষ্ট যোগ্যতাপত্র পেয়ে সরকারি কর্মীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে সক্ষম বলে খুবই উত্সাহিত চেচিয়াং রাস্তা প্রযুক্তি একাডেমির রাস্তা মেরামত বিভাগের ছাত্র ছিউ ওয়ে ছি। তিনি বলেন, অতীতে দক্ষ শ্রমিকদের স্নাতকপত্র স্বীকৃতি পেতো না। তবে, এখন সংশ্লিষ্ট নীতিমালার সমর্থনে ভবিষ্যতের কর্মসংস্থানের জন্য তিনি আশাবাদী।

বিভিন্ন প্রযুক্তি একাডেমির ছাত্রছাত্রী ভর্তি বিভাগ নতুন নীতিমালা চালুর পর ব্যাপক পরিবর্তন অনুভব করছে। চেচিয়া নির্মাণ দক্ষ শ্রমিক একাডেমির শিক্ষক ইয়ে হুং চেন বলেন, ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত একাডেমিতে প্রতি বছর নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি বেড়েছে ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে ‘ডিজিটাল কর্মী’ প্রশিক্ষণসহ স্থাপত্যবিদের বিম ডিজাইন ও প্রয়োগ এবং স্থাপত্য প্রকল্পের তথ্যায়ন প্রশাসনসহ বিভিন্ন বিভাগের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যঅ সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও বেশি। যদিও অধিকাংশ পিতামাতা চান তাদের বাচ্চারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী অর্জন করুক, তবে অনেকেই নিজেদের সন্তানদের সেরা শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

চলতি বছরের মে মাসে হুয়াফেং রাসায়নিক লিমিডেট কোম্পানির দক্ষ কর্মীদের বার্ষিক আয় ১০ লক্ষাধিক ইউয়ানে দাঁড়িয়েছে—এ খবর জেনে অনেকেই অবাক হয়েছেন। তবে, এ সম্পর্কে হুয়াফেং গ্রুপের কার্যালয়ের পরিচালক ওয়াং শেং বলেন, সেটি কোম্পানির শিল্প রূপান্তরের ফল। একজন দক্ষ ও সেরা শ্রমিকের কাজের মূল্য ১০ লাখ রেনমিনপি’র চেয়ে অনেক বেশি। তাদের বার্ষিক আয় দ্রুত বাড়াটা খুবই যুক্তিসঙ্গত।

চেচিয়াং প্রদেশের অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সিইও একই ধারণা পোষণ করেন। সিজি কোম্পানির প্রধান ওয়াং শুই ফু বলেন, উন্নত দেশগুলোর নির্মাণশিল্পের ইতিহাস বিবেচনা করে বোঝা যায়, দক্ষ শ্রমিকরা নির্মাণশিল্পের প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণতায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকেন। যেমন, জার্মানিতে কাঁচামালের ব্যাপক অভাব; তাদের রপ্তানিকৃত ৩০ শতাংশ পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এর মূল কারণ হল, জার্মানিতে দক্ষ শ্রমিক আছে, তাদের কাজের মান অনেক ভালো।

৪০ বছরেরও বেশি সময়ের উন্নয়নের পর এখন চেচিয়াং প্রদেশের নির্মাণশিল্পও বুদ্ধিমান নির্মাণশিল্পে রূপান্তরিত হয়েছে। হাল্কা শিল্প থেকে হাইটেক প্রযুক্তির শিল্পে রূপান্তরিত হয়েছে এখানকার নির্মাণশিল্প। বর্তমানে চেচিয়াং প্রদেশের নির্মাণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সরঞ্জামের মান, কর্ম পরিবেশ আর প্রশাসনিক মান ব্যাপক উন্নত হয়েছে। তবে আধুনিক শিল্পব্যবস্থার মূল ভিত্তি দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ও মান ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে সেখানে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্মাণ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দক্ষ কর্মীর অভাব এবং চাহিদার ভারসাম্যহীনতা দিন দিন গুরুতর আকার ধারণ করেছে।

এ সম্পর্কে ওয়াং শুই ফু বলেন, গত শতাব্দীর ৫০-এর দশকে চীনে বেতনব্যবস্থায় ৮ শ্রেণীর শ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।  দক্ষ শ্রমিকদের যোগ্যতার সঙ্গে তাদের বেতনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যাদের দক্ষতা ভালো তারা ৮ শ্রেণীর শ্রমিকের তালিকায় স্থান পেতেন। তখন ৮ শ্রেণীর শ্রমিকদের কেউ কেউ কারখানার প্রধানের চেয়েও বেশি বেতন পেতেন। অনেক যুবক স্কুল থেকে স্নাতক হওয়ার পর কারখানায় প্রবেশ করতে চাইত এবং দক্ষ শ্রমিক হওয়ার জন্য অনেক আগ্রহ দেখাতো।

এখন নতুন যুগে দক্ষ শ্রমিকদের মর্যাদা ও অবস্থানও দিন দিন বাড়ছে। এ সম্পর্কে চেচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গবেষণাগারের উপ-প্রধান উ আই ছি বলেন, চেচিয়াং প্রদেশের নির্মাণশিল্পের শ্রেষ্ঠ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষ, স্থিতিশীল ও কার্যকর শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেয়; বিভিন্ন পদ্ধতি ও সুবিধাজনক ব্যবস্থা নিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের পথ তৈরি করে। বেতন বাড়িয়ে দেওয়া, পদোন্নতি ও পুরস্কার বিতরণসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে দক্ষ শ্রমিকদের উত্সাহ দেয় তারা।

২০১৮ সালে চিউলি গ্রুপ প্রথমবারের মতো দক্ষ শ্রমিকদের জন্য শেয়ার প্রণোদনা ব্যবস্থা চালু করে। কোম্পানির ৮০০ জনেরও বেশি কর্মী শেয়ার প্রণোদনা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হন। তাদের মধ্যে দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা ৩০০ জনেরও বেশি। এ সম্পর্কে কোম্পানির সিইও চৌ জি চিয়াং বলেন, “আমি জার্মানি ও জাপান সফর করেছি। সেখানে দক্ষ শ্রমিকদের বেতন অনেক বেশি। আমিও আমার কোম্পানির দক্ষ শ্রমিকদের জন্য সুবিধাজনক নীতি চালু করেছি।”

হুয়াফেং রাসায়নিক লিমিডেট কোম্পানির যুবকর্মী হুয়াং চাং সুন আগের মতো কারখানায় এসে সরঞ্জাম চেক করেন এবং সরঞ্জামের দুর্বলতা খুঁজে বের করে সম্ভাব্য কমম সময়ের মধ্যে তা মেরামত করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমার কোম্পানিতে এখন পুনরায় ৮ শ্রেণীর বেতন ব্যবস্থা চালু হয়েছে।  সবাই চেষ্টা করে ৮ শ্রেণীর দক্ষ শ্রমিক হতে। তারা আশা করে, তাদের বেতনও বছরে ১০ লাখ ইউয়ানের বেশি হবে।”

একজন দক্ষ শ্রমিক হতে চাইলে কমপক্ষে ৫ বছরেরও বেশি সময় লাগে। সেই সময়ের মধ্যে কঠোর কর্ম পরিবেশ ও ক্লান্তি সহ্য করতে হবে, সাথে বেতনও কম। তবে ৮ শ্রেণীর শ্রমিক যাচাই ব্যবস্থার মাধ্যমে সবাই পদোন্নতির জন্য চেষ্টা করতে পারে এবং নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে পারে। অবসর সময়ে তারা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির নিয়ন্ত্রণ কোর্সে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে কর্মদক্ষতা উন্নত করতে পারে।

গত বছর শাওশিং জল মোকাবিলা কোম্পানির সরঞ্জাম বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাই চি পিন দক্ষ শ্রমিক হিসেবে চেচিয়াং প্রদেশের হাইটেক নেতৃত্ব ব্যক্তির মর্যাদা পেয়েছেন। তখন থেকে তিনি চীন সরকারের বিশেষ ভর্তুকিও পাচ্ছেন।  চলতি বছর তিনি সিনিয়র প্রকৌশলীর যোগ্যতাপত্র লাভ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে দক্ষ শ্রমিক বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি বছর পৌর সরকার বা অন্যান্য পর্যায়ের সরকার থেকে ১০ লক্ষাধিক ইউয়ান বরাদ্দ পেয়ে থাকেন তিনি, যাতে দক্ষ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত বিনিময়ে তা কাজে লাগানো যায়।

এ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এখনকার বিভিন্ন নীতিমালা দক্ষ শ্রমিকদের জন্য কল্যাণকর। যুবক দক্ষ শ্রমিকরা কেবল বিভিন্ন দক্ষতার প্রতিযোগিতায় জয়ী হলে সমাজের ব্যাপক স্বীকৃতি ও সম্মান পেতে পারেন। হাংচৌ দক্ষ শ্রমিক একাডেমিক শিক্ষক ইয়াং চিন লুং মাত্র ২৭ বছর বয়স, অথচ আন্তর্জাতিক দক্ষতা প্রতিযোগিতায় তিনি গাড়ী রং করা প্রতিযোগিতার স্বর্ণপদক লাভ করেছেন।”

কেবল দক্ষ শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের কাজের আগ্রহ বাড়িয়ে দেওয়া নয়, বরং তাদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন প্রয়োজনও বিবেচনা করা হয়। সর্বপ্রথমে তাদের বাচ্চাদের শিক্ষার চাহিদা মেটানোর প্রশ্ন আসে। এ সম্পর্কে নিংপো ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি কোম্পানির কর্মী ছেন ইয়ু লিয়ান বলেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে তিনি চেচিয়াং সরকারের পরিষেবা ওয়েবসাইটে বাচ্চাদের কিন্ডারগার্ডেনে ভর্তির আবেদন করেন এবং কম সময়ের মধ্যে উত্তর পান। তিনি বাচ্চাকে বাড়ি থেকে ১০ মিনিটের দূরত্বের একটি কিন্ডারগার্ডেনে ভর্তি করান। কাজের সময় বাচ্চার যত্ন নেওয়ার উদ্বেগ তার দূর হয়েছে।

বর্তমানে নিংপো শহরে ৩০ লাখেরও বেশি শ্রমিক রয়েছে। এদের অনেক স্বামী বা স্ত্রী আছেন, যারা শ্রমিক হিসেবে অন্য জায়গা থেকে নিংপোতে এসেছে। শহর তাদের শুধু কর্মসংস্থানেরই ব্যবস্থা করেনি, বরং তাদের বাচ্চাদের শিক্ষার চাহিদাও পূরণ করেছে। ফলে এই শহর দক্ষ শ্রমিকদের সহজে আকৃষ্ট করতে পারছে।

বর্তমানে চেচিয়াং প্রদেশে বিভিন্ন ধরনের দক্ষ শ্রমিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮৮টি। আগামী ৫ বছরের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক একাডেমির সংখ্যা আরো ৪০টি বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দক্ষ শ্রমিকদের ব্যাপক উন্নয়ন চেচিয়াং প্রদেশসহ চীনের হাইটেক প্রযুক্তির নির্মাণশিল্পের উন্নয়নে নতুন অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস করা যায়।

সুপ্রিয় বন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, আজকের বিদ্যাবার্তা এখানে শেষ হয়ে এলো। আমাদের অনুষ্ঠান যারা মিস করেছেন, তারা আমাদের ওয়েবসাইটে তা শুনতে পারেন। ওয়েবসাইট ঠিকানা www.bengali.cri.cn,ফেসবুকে CRIbangla মাধ্যমে চীন ও বিশ্ব সম্পর্কে আরও অনেককিছু জানতে পারেন। তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন, আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে,যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/আলিম/মুক্তা)