চীনা জিডিপির ৮.১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিল এডিবি
2021-09-23 15:20:11

গতকাল (বুধবার) এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চীনা নাগরিকদের ক্রয় ক্ষমতা পুনরুদ্ধার হতে আরো কিছু সময় লাগবে, তবে চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে দেশটির রপ্তানি ও আর্থিক সমর্থন আরো বাড়বে এবং অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার ৮.১ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে।

এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক প্রকাশিত ‘২০২১ এশিয়ার উন্নয়ন সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি বড় চাপের সম্মুখীন হয়েছে, তবে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির আশাব্যাঞ্জক অনুমাণ পরিবর্তন হয়নি। চীনে নিযুক্ত এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থনীতি পরিকল্পনা ও কৌশল গবেষণা বিভাগের অর্থনৈতিক তথ্য বিশ্লেষক ছি ওয়েন বলেন,

‘মোদ্দাকথা হল ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতি অব্যাহতভাবে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। এর প্রধান চালিকাশক্তি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ও শক্তিশালী রপ্তানি। চীনের নাগরিকদের ক্রয় চাহিদা পুনরুদ্ধারে আরো কিছু সময় লাগবে, তবে রপ্তানির দ্রুত উন্নয়ন ও সুবিধাজনক আর্থিক নীতির কারণে চীনের জিডিপির বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ৮.১ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৫.৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা যায়।’

তিনি বলেন, চলতি বছরের প্রথমার্ধে চীনের অর্থনীতির গতিবিধি বিবেচনায় বলা যায়, নাগরিকদের ক্রয় ও সামাজিক পণ্যদ্রব্যের বিক্রির পরিমাণ ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হয়েছে, যা চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির মূল কারণ। পাশাপাশি, রপ্তানির পরিমাণ পরিকল্পনার চেয়ে অনেক বেড়েছে, পুঁজি বিনিয়োগ পরিমাণও পরিকল্পনার চেয়ে বেশি রয়েছে। বিশেষ করে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও রিয়েল এস্টেটের উন্নয়নে চীনের স্থাবর সম্পদ বিনিয়োগের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০.৩ শতাংশ বেড়েছে।

মুদ্রাস্ফীতির ব্যাপার নিয়ে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থনৈতিক বিভাগের পরিচালক দোমিনিক পেসকেল বলেন, শিল্প উত্পাদনকারীদের বিক্রয় দাম এবং ভোগ্যপণ্যের দামের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, তা থেকে বোঝা যায়, পণ্যদ্রব্যের দামের দ্রুত প্রবৃদ্ধির প্রবণতা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। ফলে চলতি বছরে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ ১.৩ শতাংশে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

‘এখন পণ্যদ্রব্যের দাম একটু বেশি, তবে ভোগ্যপণ্যের দাম হাতের নাগালেই রয়েছে। তাই আমরা দেখেছি, কারখানা পণ্যদ্রব্যের দাম একটু বেড়েছে, তবে ভোগ্যদ্রব্যের দাম বেশি বাড়েনি। বিশেষ করে, অ-খাদ্য ভোগ্যপণ্যের দাম অল্প বেড়েছে, তাই বলা যায়, পণ্যদ্রব্যের দামের প্রবৃদ্ধি সরবরাহ চেইনের মধ্যে প্রশমিত হয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি ব্যবসায়ীদের সরাসরি পুঁজি বিনিয়োগও স্থিতিশীলভাবে বেড়েছে। চীনের জিডিপিতে এর পরিমাণ গত বছরের ০.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে চলতি বছর ১.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তা থেকে বোঝা যায়, বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগকারীরা চীনের অর্থনীতির প্রতি আশাবাদী ও আস্থাশীল। এ সম্পর্কে ছি ওয়েন বলেন,

‘চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিদেশি ব্যবসায়ীদের পুঁজি চীনে এসেছে। এর মূল কারণ ২০২০ সালে চীনের অর্থনীতির শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতির উন্নয়নের ভালো প্রবণতা। তাই বিদেশি ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশাও অনেক বেড়েছে। তা ছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারী চীনে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।  কিছু কিছু এলাকায় সাময়িক সময়ের জন্য মহামারী ঘটলেও অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে। এটিও বিদেশি ব্যবসায়ীদের উত্সাহিত করেছে। সব মিলিয়ে ২০২১ সালে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার ৮.১ শতাংশ হবে বলে অনুমাণ করা যায়, তা এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি।’ (সুবর্ণা/এনাম/শুয়ে ফেই ফেই)