জীববৈচিত্র্য পরিবেশের সৌন্দর্য বাড়ায়
2021-10-11 18:35:57

জীববৈচিত্র্য পরিবেশের সৌন্দর্য বাড়ায়_fororder_QQ圖片20211011183510

অক্টোবর ১১: আজ (সোমবার) ‘জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন’-এর স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলোর পঞ্চদশ সম্মেলন (সিওপি১৫) চীনের ইউননান প্রদেশের রাজধানী খুনমিংয়ে শুরু হয়েছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য: ‘পরিবেশগত সভ্যতা: যৌথভাবে পৃথিবীতে প্রাণের একটি সম্প্রদায় গড়ে তোলা’। এবারের সম্মেলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হবে ‘২০২০ সাল-পরবর্তী পৃথিবীর জীববৈচিত্র্য কাঠামো’ স্বাক্ষর। এটি আগামী দশ বছরে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিবে। আন্তর্জাতিক সমাজ এটিকে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য সমস্যা সমাধানের ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে দেখছে।

জীববৈচিত্র্য মানবজাতির বেঁচে থাকার ও উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে। চীন হলো পৃথিবীর অন্যতম সেরা জীববৈচিত্র্যসম্পন্ন দেশ। ২৯০০-এরও বেশি স্থলজ মেরুদণ্ডী প্রাণীর অস্তিত্ব রেকর্ড করা হয়েছে চীনে, যা বিশ্বের মোট সংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি। তা ছাড়া, উচ্চতর উদ্ভিদের ৩৬ হাজারেরও বেশি প্রজাতি রয়েছে চীনে, যা বিশ্বের তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

বর্তমানে বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন। এক্ষেত্রে পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি ঘটছে। চীনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার ব্যাপারটিও গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। বৈশ্বিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতি রোধ করার জন্য ১৯৯৩ সালের ২৯ ডিসেম্বরে ‘জীববৈচিত্র্য সংক্রান্ত কনভেনশন’ আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। চীন হলো কনভেনশনে প্রথম দফায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে একটি।

জীববৈচিত্র্যর ক্ষতি হলো বিশ্বব্যাপী অভিন্ন সমস্যা। জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করা বিভিন্ন দেশের সরকার, প্রতিষ্ঠান ও সমাজের অভিন্ন দায়িত্ব। মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে সহাবস্থানের ধারণাকে সম্মান করলে এবং অর্থনীতি, সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার যৌথ উন্নয়ন ঘটালে মানবজাতির টেকসই উন্নয়নও বাস্তবায়িত হবে।

চীন জীববৈচিত্র্য রক্ষার ওপর খুবই গুরুত্ব দেয়। চীন ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে চলেছে। জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার কাজে চীন অনেক অগ্রগতি অর্জন করেছে।

 চীন বন্যপ্রাণী সুরক্ষা ও বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে। ফলে চীনে ৯০ শতাংশেরও বেশি গাছপালা, ৬৫ শতাংশ উচ্চ পর্যায়ের উদ্ভিদ, এবং ৮৫ শতাংশ বন্যপ্রাণী সুরক্ষিত হয়েছে।  

চীন ‘ন্যাশনাল পার্ক’ কেন্দ্রিক প্রাকৃতিক সংরক্ষণব্যবস্থা গড়ে তুলেছে। চীনে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রাকৃতিক সংরক্ষণস্থল নির্মিত হয়েছে ১১ হাজার ৮০০টি, যার মোট আয়তন চীনের স্থল আয়তনের ১৮ শতাংশ এবং সমুদ্রের ৪.১ শতাংশ।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনে সামাজিক অংশগ্রহণ এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে জনসচেতনতা ক্রমশ বেড়েছে। ইন্টারনেট সবুজ জনকল্যাণ প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে প্রায় ৫৫ কোটি ব্যবহারকার। এ প্রকল্পের আওতায় ইনার মঙ্গোলিয়া ও কানসুসহ বিভিন্ন মরুভূমি এলাকায় ২২ কোটি ৩০ লাখ গাছ রোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। তা ছাড়া, প্রতিটি ৪২০ বর্গকিলোমিটারের ১৩টি জনকল্যাণ সংরক্ষণ এলাকা নির্মিত হয়েছে।

জীববৈচিত্র্য পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। প্রকৃতিকে সম্মান, অনুসরণ ও সুরক্ষা করতে হবে। আমাদেরকে যৌথভাবে মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে একটি সুরেলা সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। যৌথভাবে সমৃদ্ধ, পরিষ্কার ও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে। যৌথভাবে মানবজাতির পৃথিবী রক্ষা করতে হবে। (ছাই/আলিম)