দারিদ্র্যবিমোচনের ক্ষেত্রে চীনের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের সহযোগিতা
2021-10-16 20:09:16

১৯৯৬ সালে চীনের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের দারিদ্র্যবিমোচনের সহযোগিতা পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ২৫ বছরে ‘পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের সুবিধা দিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের অসুবিধা দূর করার’ পদ্ধতিতে দুই অঞ্চল একসাথে উন্নত হয়েছে ও হচ্ছে।

চলতি বছরের বসন্ত উত্সবের আগে ফুচিয়ান প্রদেশের ফুচৌ শহরের মাওয়েই এলাকার এসসিইউডি বৈদ্যুতিক কোম্পানির কারখানায় উত্পাদন বন্ধ হয়নি। ২০১৮ সালে কোম্পানিটি নিংস্যিয়া হু জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়। ছেন মান খু হলেন তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি বলেন, কোম্পানিটিতে কাজ করার প্রথম বছরে তাঁর মাসিক বেতন ছিল প্রায় চার হাজার ইউয়ান আরএমবি। কিন্তু বর্তমানে তাঁর মাসিক বেতন ৮ হাজার ইউয়ানেরও বেশি। এ কয়েক বছরে তাঁদের বেতন দ্বিগুণ হয়েছে।

এ পর্যন্ত ফুচিয়ান প্রদেশে নিংস্যিয়ার কর্মীর সংখ্যা ৮০ হাজারেরও বেশি। এ ছাড়াও নিংস্যিয়ায় বিনিয়োগকারী ফুচিয়ানের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৭০০টিরও বেশি। এসব প্রতিষ্ঠান নিংস্যিয়ার  জন্য ১ লাখেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ সম্পর্কে নিংস্যিয়া হু জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-এর সম্পাদক ও গণকংগ্রেসের স্ট্যাডিং কমিটির পরিচালক ছেন রুন এর বলেন,

“ফুচিয়ান প্রদেশের তিনটি শহরের ৩০টিরও বেশি জেলা ও এলাকার ৮৫টি থানার ১৩৪টি গ্রাম পৃথক পৃথকভাবে নিংস্যিয়ার তিনটি শহরের ৯টি জেলার ১০৫ থানার ১২৯টি গ্রামের সঙ্গে সহায়তার সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। দু’টি অঞ্চলের যোগাযোগ ও সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে।”

এদিকে হুনান প্রদেশের স্যিয়াংস্যি থুচিয়া জাতি ও মিয়াও জাতির স্বায়ত্তশাসিত বান্নারের লংশান জেলা ছিল জাতীয় পর্যায়ের গভীর দরিদ্র জেলা। শানতুং প্রদেশের সমর্থনে লংশান জেলা থুচিয়া জাতির ঐতিহ্যগত ব্রান্ড ‘রেবামেই’ গড়ে তোলে। ২০২০ সালের শেষ দিক পর্যন্ত ‘রেবামে’ দারিদ্র্যবিমোচন কারখানা ২২২৫ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে। বার্ষিক গড় আয় ২০ হাজার ইউয়ানেরও বেশি। জিনান শহরের শিচং এলাকার কর্মকর্তা ইন স্যিয়াও মু লংশান জেলার উন্নয়ন ও সংস্কার ব্যুরোর উপপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন,

“রেবামেই দারিদ্র্যবিমোচন কারখানা হলো স্যিয়াংস্যি বান্নরের প্রথম দারিদ্র্যবিমোচন কারখানা। প্রমাণিত হয়েছে যে, এ ধরণের দারিদ্র্যবিমোচনের পদ্ধতি কার্যকর এবং এতে সাফল্য অর্জিত হয়েছে। চার বছরে লংশান জেলায় ৪৬টি এ ধরণের দারিদ্র্যবিমোচন কারখানা নির্মিত হয়েছে এবং এতে ২২৫৫টি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্ট হয়েছে।”

পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পূর্বাঞ্চলের নয়টি প্রদেশ ও শহর দরিদ্র অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ৪৯.৪৬ বিলিয়ন ইউয়ান এবং সামাজিক সহায়ক অর্থ সমর্থন করেছে ১৫.২৮ বিলিয়ন ইউয়ান। পূর্বাঞ্চলের ২০ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান দরিদ্র অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ৭২৩.৪ বিলিয়ান ইউয়ান।

বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের দরিদ্র এলাকা উন্নয়ন গবেষণা একাডেমির লেই মিং বলেন, পূর্বাঞ্চলের ৩৪২টি উন্নত জেলা পশ্চিমাঞ্চলের ৫৭০টি দরিদ্র জেলাকে সহায়তা করে। আসলে পূর্বাঞ্চল শুধু অর্থ দিয়ে নয়, বরং উন্নত প্রযুক্তি, প্রতিভাবান ব্যক্তি ও অভিজ্ঞতাও পশ্চিমাঞ্চলে পাঠিয়েছে। এটি দারিদ্র্যবিমোচন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিরাট ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।