হাতে হাত রেখে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করুন এবং ‘নীল পৃথিবী’ রক্ষা করুন
2021-10-22 14:55:28

অক্টোবর ২১: দায়িত্বশীল দেশ হিসেবে চীন সর্বদা বৈশ্বিক জলবায়ু মোকাবিলায় অবদানকারী, বৈশ্বিক পরিবেশগত সভ্যতা নির্মাণের নেতা এবং ‘প্যারিস চুক্তি’ বাস্তবায়নকারী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং সবুজ উন্নয়ন এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আন্তর্জাতিক মঞ্চে নানা প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন এবং বেশ কয়েকটি ব্যবস্থাও ঘোষণা করেছেন। এতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের সবুজ উন্নয়নের পথে চলা এবং একসঙ্গে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর বিশ্ব গঠন করার ইচ্ছা ও সংকল্প ফুটে উঠেছে। মানুষ ও প্রাকৃতিক জীবনের একটি সমাজ গঠনের জন্য নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়েছে চীন।

 

২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম সাধারণ বিতর্কে বিশ্বের প্রাকৃতিক সভ্যতা নির্মাণের পথ খুঁজে বের করতে হাতে হাত রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন,

 ‘প্রাকৃতিক সভ্যতা নির্মাণ করা মানবজাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বের প্রাকৃতিক সভ্যতার নির্মাণের পথ অনুসন্ধান করা উচিত্। তা ছাড়া, প্রকৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে ও প্রকৃতি সংরক্ষণের চেতনা নিয়ে সবুজ, নিম্ন-কার্বন, বৃত্তাকার ও টেকসই উন্নয়নের পথে অবিচল থাকা উচিত্। এ ক্ষেত্রে চীন দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নিজের অবদান রাখবে।’

 

আন্তর্জাতিক সমাজের একটি দায়িত্বশীল অংশ হিসেবে চীন নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে এবং অভিযানের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা প্রক্রিয়ায় চীন অব্যাহতভাবে নতুন পদক্ষেপ নেবে।

২০২০ সালের জুলাই মাসে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য দেওয়া এক ভিডিও বক্তৃতায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে চীনের শক্তিশালী ক্ষমতা ও নেতৃত্বের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেন,

 ‘বিগত ৫ বছরে চীনের তৈরি সৌর ও বায়ু দিয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদনের ক্ষমতা যে কোনো দেশের চেয়ে বেশি হয়েছে। বিশ্বের ৫০ শতাংশ বৈদ্যুতিক গাড়ি চীনে বিক্রি হচ্ছে। চীন বিশ্বের ৯৯ শতাংশ বৈদ্যুতিক বাস তৈরি করেছে। নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর মতো জলবায়ু পরিবর্তনের রাষ্ট্রীয় সীমানা নেই। নেতৃত্বের মাধ্যমে চীন এই পৃথিবীর সবাইকে সাহায্য করতে পারে।’

 

জাতিসংঘ পরিবেশ কার্যক্রম উত্তর-পশ্চিম, উত্তর, ও উত্তর-পূর্ব চীনের শেল্টারবেল্ট প্রকল্পকে বিশ্বব্যাপী মরুভূমির ‘ইকোলজিক্যাল ইকোনমি ডেমোনস্ট্রেশন জোন’ হিসেবে নির্ধারণ করেছে। সাইহানবা বন খামারের নির্মাতা ও চ্যচিয়াং প্রদেশের ‘হাজার গ্রামের দৃষ্টান্ত এবং ১০ হাজার গ্রাম সংস্কার’ প্রকল্প যথাক্রমে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিবেশগত সম্মাননা অর্থাত্ ‘গার্ডিয়ান অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছে। ‘সবুজ উন্নয়ন’ ও ‘প্রকৃতির সভ্যতা’সহ বিভিন্ন চিন্তাধারাও জাতিসংঘের দালিলপত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। চীনের প্রকৃতির সভ্যতার চিন্তাধারা ও অনুশীলন অধিক থেকে অধিকতরভাবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি ও প্রশংসাও পেয়েছে।

 

জাতিসংঘ পরিবেশ কার্যক্রমের কার্য-নির্বাহী পরিচালক ইনগার অ্যান্ডার্সন বলেন, চীনের অংশগ্রহণ হলো বৈশ্বিক প্রকৃতি ও পরিবেশ শাসন পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কিছু দিন আগে, ‘জীববৈচিত্র্য কনভেশনের’ ১৫তম শীর্ষসম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সি স্পষ্টভাবেই জানান যে, চীনের প্রকৃতির সভ্যতার নির্মাণে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ‘পৃথিবীর জীবনের সমাজ’ গঠনে শক্তি যোগাতে চীনের প্রকৃতির সভ্যতা এগিয়ে নেওয়ার বাস্তব পদক্ষেপও তুলে ধরেছেন তিনি। তিনি বলেন,

 ‘যখন মানবজাতি বন্ধুত্বপূর্ণভাবে প্রকৃতি রক্ষা করবে, প্রকৃতিও উদারভাবে প্রতিদান দেবে। প্রকৃতির সভ্যতা হলো মানব সভ্যতা উন্নয়নের ঐতিহাসিক প্রবণতা। হাতে হাত রেখে প্রকৃতির সভ্যতার চিন্তাধারা পোষণ করে দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পৃথিবীর জীবনের সমাজ গঠন করুন এবং সম্মিলিতভাবে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর জগত্ নির্মাণ করুন।’

(লিলি/তৌহিদ/শুয়েই)