আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫
2021-10-28 19:15:52

কী থাকছে এবারের পর্বে

১. সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিহত করতে হবে: সাক্ষাৎকার শেলী সেনগুপ্তা

২. এগিয়ে যাচ্ছেন তিব্বতের নারী

৩. তিব্বতের লোকজ সংগীত

৪. আশার আলো ছড়াচ্ছেন লিং ফং

৫. নারীদের ই-কমার্স মেলা

 

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হলো বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি অনভিপ্রেত ঘটনায় বাংলাদেশের কয়েক স্থানে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে কোন সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার প্রথম আঘাত পড়ে নারী ও শিশুর জীবনে। এই প্রসঙ্গে আজ আমরা কথা বলছি বিশিষ্ট লেখক এবং সমাজসেবী, রোটারি ক্লাব অব ঢাকা ড্রিমার্সের প্রেসিডেন্ট শেলী সেনগুপ্তার সঙ্গে। আমাদের অনুষ্ঠানে তাকে স্বাগত জানাই।

সাক্ষাৎকার

সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিহত করতে হবে: শেলী সেনগুপ্তা

কবি, কথাসাহিত্যিক শেলী সেনগুপ্তা মনে করেন, সাম্প্রদায়িকতাকে প্রতিহত করতে হলে প্রয়োজন গণমানসে সচেতনতা গড়ে তোলা। এ জন্য সচেতন ও মুক্তবুদ্ধির মানুষদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে কয়েকটি স্থানে যে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তা কতিপয় দুষ্টু বুদ্ধির মানুষের অপকর্মের ফল। ‘দুষ্টুবুদ্ধির মানুষের সংখ্যা কম, ভালো বুদ্ধির মানুষের সংখ্যা বেশি’, বললেন তিনি। সাম্প্রদায়িক যে কোন সংঘাতে বা যুদ্ধে বা যেকোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে নারী ও শিশু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারণ সমাজে নারী ও শিশুর অবস্থান অপেক্ষাকৃত দুর্বল।

শৈশবে তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছেন। তিনি দেখেছেন সকল সম্প্রদায়ের মিলিত একটি শান্তিময় পরিবেশ। তিনি কবিতার মাধ্যমে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।  শেলী সেনগুপ্তা মনে করেন এখন সমাজের সচেতন মানুষ বিশেষ করে লেখকদের এগিয়ে আসতে হবে তাদের লেখনীর মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সুখী ও সম্প্রীতিময় বাংলাদেশের প্রত্যাশা তার।

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian1

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian2

 

এগিয়ে যাচ্ছেন তিব্বতের নারী

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian4

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian3

চীনের স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল তিব্বতে নারীদের মর্যাদা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির সদস্য পেনপা লামো। বিস্তারিত রয়েছে প্রতিবেদনে।

তিব্বতের নারীদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। গত কয়েক দশকে নারীরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমানভাবে অংশ নিয়ে আসছে। প্রতিনিয়তই জীবনের সব ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টান্তমূলক কৃতিত্ব দেখিয়ে আসছে তারা। চাইনিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের জাতীয় কমিটির সদস্য এবং তিব্বতী একাডেমি অফ সোশ্যাল সায়েন্সের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের প্রধান পেনপা লামো সম্প্রতি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তিব্বতের শান্তিপূর্ণ মুক্তির ৭০ বছরে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে মানুষের জীবনযাত্রায়। শহুরে এবং গ্রামীন জীবন যাপনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আধুনিকতার পাশাপাশি শিক্ষা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পেনপা।

সুপ্রিয় শ্রোতা এখন শুনুন তিব্বতের একটি জনপ্রিয় লোকসংগীত।

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian6

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian5

 

আশার আলো ছড়াচ্ছেন লিং ফং

স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মহৎপ্রাণ নারী চিকিৎসক লিং ফং। তার কথা শুনুন একটি প্রতিবেদনে।

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian7

লিং ফং একজন প্রখ্যাত নিউরো সার্জন যিনি নতুন আশার আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন অসংখ্য মানুষের জীবনে। বেইজিংয়ে ক্যাপিটাল মেডিকেল ইউনিভারসিটির সংযুক্ত সুয়ানউ হাসপাতালের চিকিৎসক লিং ফং তার সেবামূলক কাজের মাধ্যমে সুস্থ করে তুলছেন অগণন মানুষকে।

২০১৭ সালে লিং তার স্বামীর অনুমতি নিয়ে নিজেদের অ্যাপার্টমেন্ট ২ মিলিয়ন ইউয়ানে বিক্রি করে দেন। সেই অর্থে গড়ে তোলেন বেইজিং লিং ফং ফাউন্ডেশন। এর উদ্দেশ্য হলো ভলানটেরি মেডিকেল সেবা দেয়ার জন্য আরও চিকিৎসককে সম্পৃক্ত করা। লিং ফং ২০১৭ সালের মার্চে চায়নিজ মেডিকেল ডক্টর অ্যাসেসিয়েশনকে উদ্বুদ্ধ করেন যেন স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়। তিনমাস পর চায়নিজ মেডিকেল ভলেনটিয়ার দল তাদের সেবামূলক কাজ শুরু করে।

এই দল গ্রামাঞ্চলে ১৯২টি কেন্দ্র স্থান করেছে। এখানে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়। চিকিৎসকদের তত্বাবধানে স্বেচ্ছাসেবকরাও এখানে চিকিৎসা দেন।

লিং ফংয়ের জন্ম ১৯৫১ সালে। ১৬ বছর বয়সে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শাংহাই মিলিটারি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালযে তিনি শিক্ষাগ্রহণ করেন। তিনি নানচিং জেনারেল হাসপাতালে কাজ করেছেন। ক্যাপিটাল মেডিকেল ইউনিভারসিটিতে তিনি নিউরোসার্জারি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেন। বিশেষ শিক্ষা নিয়েছেন ফ্রান্স থেকেও। নিওরো সার্জারিতে তিনি চীনে অনেক নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তন করেছেন।

গ্রামে গ্রামে তিনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন সেচ্ছাসেবী চিকিৎসার সেবামূলক কর্মকাণ্ড।

গত ৪৮ বছর ধরে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য লিং ফংকে তার অনন্য সেবামূলক কাজের জন্য বেইজিং মিউনিসিপাল সরকারের পক্ষ থেকে সিপিসির শতবর্ষে সম্মাননা দেয়া হয়।

নারীদের ই কমার্স মেলা

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian9

আকাশ ছুঁতে চাই ৪৫_fororder_banbian8

বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জনপ্রিয় সংগঠন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের আয়োজনে ‘উই সামিট ২০২১’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর হাজারো উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে শেষ হয় এই সামিট। এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫০ জন সফল নারী উদ্যোক্তাকে ‘জয়ী’ অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়। বিস্তারিত থাকছে প্রতিবেদনে

আমরা নারী, আমরাই পারি এ শ্লোগানে নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার সফল গল্প ছড়ানোর অঙ্গীকারে শেষ হলো বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জনপ্রিয় সংগঠন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামের ‘উই সামিট ২০২১’। চলতি সপ্তাহে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সারাদেশ থেকে উই’র সহস্রাধিক উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করে এ সামিটে। এতে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে আবদুল মোমেন, তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫০ জন সফল নারী উদ্যোক্তাকে ‘জয়ী’ অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করা হয়। নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে নারীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে আরো বেশি প্রান্তিক পর্যায়ে কার্যক্রম বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা।

 

 

প্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি আমরা। অনুষ্ঠানটি কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন, ঢাকায় এফ এম ১০২ এবং চট্টগ্রামে এফ এম ৯০ মেগাহার্টজে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

সার্বিক  সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: শান্তা মারিয়া

এগিয়ে যাচ্ছেন তিব্বতের নারী এবং নারীদের ই কমার্স মেলা বিষয়ক প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

আশার আলো ছড়াচ্ছেন লিং ফং বিষয়ক প্রতিবেদন : শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ