ছবি: অনুজপ্রতীম কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামালের হাতে জেমকন সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩) তুলে দেন কালজয়ী কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক
এক.
হাসান আজিজুল হক আমাদের ইতিহাসের নানা পর্বে বিভিন্ন ঘটনাসমূহকে এমনভাবে তাঁর গল্পে ধারন করেছেন যে, তাঁর গল্প পড়লে বাংলাদেশকে চেনা যায়, বাঙালি জাতিকে চেনা যায়; বাঙালির সংস্কৃতি, তার আচার, সংস্কার-কুসংস্কার, তার প্রেম-ভালোবাসা, আনন্দ-বেদনা, তার ঘৃণা-বিদ্বেষ, তার সমস্ত কিছুকে জানা যায়। এটাই তাঁর বিশিষ্টতা।
দেশ বিভাগকালে দুই বাংলার কান্নাকে তিনি ধরেছেন একটি মাত্র গল্পে (আত্মজা ও একটি করবী গাছ)। একটা জাতির কান্নাকে যখন একজন লেখক একটি গল্পের মধ্যে ধরতে পারেন- সে লেখক কতটা শক্তিশালী সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁকে নিয়ে বলতে গেলে তাঁর গল্প নিয়েই বলতে হয়। গল্প দিয়েই তিনি রাজত্ব করে গেছেন।
দুই.
হাসান আজিজুল হক স্মরিত হবেন অত্যন্ত শক্তিশালী গল্পকার হিসেবে; শক্তিশালী প্রাবন্ধিক হিসেবে। উপন্যাসের বিচারের ভার আমি পাঠকদের কাছে, সময়ের কাছে রেখে দিলাম। তবে, শক্তিমান ঔপন্যাসিক হিসেবেও তিনি গৃহীত হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
সবচেয়ে বড় কথা তিনি গৃহীত বা স্মরিত হবেন- একটা দীর্ঘ সময়ের ভাষ্যকার হিসেবে। তিনি তো তার লেখার মাধ্যমে আমাদের সময়েরই ভাষ্য রচনা করেছেন। স্থানিক বাস্তবতা নিয়ে লিখলেও তিনি স্থানিকতাকে আন্তর্জাতিকতায় নিয়ে যেতে পেরেছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। একইভাবে তিনি সমকালীন গল্পকে মহাকালে পৌঁছে দিতে পেরেছেন। তাই তিনি সমকালের ভাষ্যকার হলেও স্মরিত হবেন কালজয়ী একজন মহান গদ্যশিল্পী হিসেবে।
কথাশিল্পী হাসান আজিজুলক হকের প্রয়াণে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এভাবে তাঁর স্মৃতিতর্পণ করলেন তারই অনুজপ্রতীম কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।
অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া