রেডিও শুনেছি কিন্তু সিআরআই শুনিনি এমন দিনের কথা আমি ভাবতেই পারিনা
2010-03-02 14:47:06 cri
ভারতের পশ্চিম বঙ্গের নদী জেলার পার্থ দত্ত তাঁর রচনার শুরুতে আমাদেরকে তাঁর নিজের একটি খুবই মজা গল্প জানিয়েছেন। এখন আমি এ মজা গল্প সবাই শ্রোতাকে বলবো। তিনি লিখেছেন, আমার রেডিও শোনার শুরু খুব ছোট বেলায়। তখন নিজে রেডিও চালাতে পারতাম না। অন্যকেউ রেডিও চালালে আমি বসে শুনতাম। লোকজন কাউকেউ দেখা যায় না, কিন্তু গান শোনা যায় কথা শোনা যায়। এটা ছিল আমার কাছে খুব কৌতুহলের বিষয়। এ প্রসঙ্গে আমার একটি মজার স্মৃতি না বলে পারছিনা। আমাদের বাড়িতে সেই সময় অনেকেই রেডিও শুনতে আসতো। তাদের মধ্যে একজন আমাকে বলেছিল তুই রোজ গান শুনিস, খবর শুনিস, রেডিও'র লোকেদের তুই কি কি খেতে দিস। আমি বলেছিলাম কিছুই খেতে দেইনা। সে বলেছিল তোদের রেডিও বেশি দিন চলবে না। কারণ তুই রেডিও'র লোকেদের কিছুই খেতে দিসনা। না খেয়ে কত দিন আর তারা অনুষ্ঠান শোনাবে? এবার থেকে তুই রেডিও'র লোকেদের খেতে দিবি। আমি বলেছিরাম বেশ তাই দেবো। আমি আমার সবজেয়ে প্রিয় খাদ্য রেডিওর লোকেদের খেতে দেবো। সেই সময় আমার সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য ছিল দুধভাত। একদিন দুধভাত মেখে নিয়েছি। আশেপাশে দেখে নিলাম কেউ নেই। মা ঘরের বাইরে কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এটাই হচ্ছে সুযোগ। তাড়াতাড়ি দুধভাত মাখা ভাতের মালা নিয়ে সোজা চলে গেলাম রেডিও'র কাছে। চুপিচুপি বললাম এই যে তোমরা শুনছো তোমাদের জন্য দুধভাত নিয়ে এসেছি। তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও। কিন্তু আমার সাদর আমন্ত্রণে কেউ সাড়া দিল না। আমি ভাবলাম তাইলে রেডিও'র মধ্যে দুধভাত দিলে তবে খাবে। রেডিও'র মধ্যে কিভাবে দুধভাত দেয়া যায়। সেই রাস্তা খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু রেডিও'র মধ্যে দুধভাত দেয়ার মতো কোনো রাস্তা খুঁজে পেলাম না। শেষে ঠিক করলাম রেডিও'র ওপর দুধভাত চেলে দেবো। মালা কাত করে দুধভাত চেলে দিতে যাবো হঠাত্ এমন সময় মা ঘরে চুকে পড়েছে। রেডিও'র লোকেদের দুধভাত দেয়া আর হল না। মা বলল দুধভাত না খেয়ে রেডিও'র মধ্যে চেলে দিতে যাচ্ছিনি কেন? আমি বলেছিলাম রেডিওর লোকেদের দুধভাত খেতে দিচ্ছিলাম। মা বলেছিল রেডিও'র মধ্যে কোনো লোকজন থাকে না। ওদের দুধভাত দিতে হবেনা। আমার বিশ্ময় তবে যে ওরা রোজ গান করে, কথা হলে। আমার বিশ্ময়ের ঘোর যখন কেটেছিল ততদিনে আমি নিজে রেডিও চালাতে শিখে গিয়েছি। শ্রোতা বন্ধুরা, একটি খুবই মজা গল্প না? তিনি আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে লিখেছেন, রেডিও পিকিংয়ের অনুষ্ঠান শুনতে খুব মহা লাগতো। চীনাদের মুখে বাংলা শোনার একটা আলাদা আকর্ষণ অনুভব করতাম। তখন আমার সবচেয়ে ভাললাগতো চীনের রূপকথার গল্প শুনতে। চীনাদের মুখে বাংলা আর চীনের বৈচিত্রময় রূপকথা, উপকথার, গল্পের আকর্ষনে আমি বিগত শতাব্দির আশির দশকের গোড়ার দিক থেকেই সিআরআই'র বাংলা অনুষ্ঠানের নিয়মিত শ্রোতা হয়ে গেলাম। প্রত্যহিক জীবনে আর পাঁঠটা কাজের মতোই রেডিও শোনাও আমার কাছে অন্যতম প্রধান কাজ। রেডিও শুনেছি কিন্তু সিআরআই শুনিনি এমন দিনের কথা আমি ভাবতেই পারিনা। চীন আন্তর্জাতিক বেতার থেকে প্রচারিত সকল অনুষ্ঠানই আমার খুব ভাললাগে। প্রতিটি অনুষ্ঠান থেকে চীন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারি। চীনের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, অর্থনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে জানার আমার কাছে সবচেয়ে সহজ উপায় হল সিআরআই'র অনুষ্ঠান। আগের তুলনায় বর্তমানের বাংলা অনুষ্ঠানের গুনগত মান অনেক উন্নত হয়েছে। ৮০টি বসন্ত পেরোনো চীন অন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান ভবিষ্যতে আরো উন্নত হবে এবং শততম বসন্তের দিকে এগিয়ে যাবে-একজন হিসাবে এটাই আমার প্রত্যাশ্যা। পার্থ দত্ত, আপনাকে আমাদের সঙ্গে আপনার এত মজা গল্প উপভগ করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া, আপনার প্রত্যাশ্যা আমারও। আমরা আশা করি, আপনি চিরদিনে আমাদের বন্ধুর মত আমাদের অনুষ্ঠান নিয়মিতভাবে শুনবেন এবং মতামত দেবেন।
সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা