Web bengali.cri.cn   
চীনা ভাষার সেঁতু—থাইল্যান্ডে প্রাথমিক স্কুলের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা
  2010-07-23 19:05:14  cri

চীন ও থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছর বার্ষিকী উপলক্ষে থাইল্যান্ডে তৃতীয় চীনা ভাষা সেঁতু মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা ১৩ জুলাই ব্যাংককে শুরু হয়েছে। থাইল্যান্ডের মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চমত্কার চীনা ভাষার মান থাইল্যান্ডে চীনা ভাষা শেখার আগ্রহের যে প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তা অবশ্যই চীন-থাইল্যান্ড মৈত্রী সম্প্রসারণ করবে।

বন্ধুরা, থাইল্যান্ডের উবোন রাচাথানি'র প্রবাসী চীনা স্কুলের লুও চুন ইয়ুং নামে একজন ছাত্র অনুষ্ঠানে চীনের রেশমি অপেরা পোশাক পরে মুখে বিভিন্ন রংয়ের সাজে সবাইকে চীনের ঐতিহ্য এবং বৈশিষ্টময় পেইচিং অপেরার অভিনয় করেছেন। এখন আমরা তার কন্ঠে পেইচিং অপেরার পরিবেশনা শুনবো:

এবারের "চীনা ভাষা সেঁতু" মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতা চীনের রাষ্ট্রীয় চীনা ভাষা কার্যালযের থাইল্যান্ড শাখা এবং থাইল্যান্ডের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক শিক্ষা কমিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়। থাইল্যান্ডের বিভিন্ন এলাকার মোট ১৭ জন ছাত্রছাত্রী চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। তারা সবাই বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিযোগিতার পর চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। যদি এবার তাদের মধ্যে কেউ এ প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পায়, তাহলে তারা চীনের ছুং ছিং-এ গিয়ে বিশ্বের মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের চীনা ভাষা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে এবং চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার বৃত্তি পাবে।

এবার চীনা ভাষা প্রতিযোগিতার প্রতিবাদ্য হল "আনন্দময় চীনা ভাষা, সুস্বাস্থ্যে বড় হওয়া"। প্রার্থীরা সাবলীল চীনা ভাষায় নিজের চীনা ভাষা শেখার আনন্দ এবং দুঃখের কথা বলেছে এবং ভবিষ্যতে চীনে লেখাপড়া করা, চীনা ভাষা শিক্ষক হওয়ার আকাংখার কথা প্রকাশ করেছে। শিল্পকলা সম্পর্কিত মেধার ওপর প্রতিযোগিতার অংশ প্রার্থীদের অভিনয় সবার মনে গভীর দাগ কেটেছে। কেউ কেউ চীনের ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র বাজায়, কেউ কেউ চীনের অপেরা পরিবেশন করে। কেউ কেউ চীনের প্রাচীনকালের নৃত্য প্রদর্শন করে, কেউ কেউ সিংহ নৃত্য করে, আর কয়েক জন প্রার্থী চীনের কুংফু সবাইকে দেখিয়েছে। তাদের অভিনয় দেখে বোঝা যায় চীনা ভাষা শেখার ব্যাপারে তাদের দৃঢ়তা।

এসব প্রার্থীর মধ্যে একজন মেয়ে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সে পায়ে আখাত পেয়েছে। প্রতিযোগিতার আগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে সে প্রতিযোগিতা ছেড়ে দিতে চায় নি। তাই সে ক্রাচে ভর করে প্রতিযোগিতার মঞ্চে উঠেছে। এ মেয়ে হলো ১৫ বছর বয়সী কুও ইং ইং। সে বলে, এ প্রতিযোগিতা হলো তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের একটি সুযোগ। সে বলে:

এটা হলো আমার স্বপ্ন। সব কিছুই আমার স্বপ্ন। চীনা ভাষা হলো আমার স্বপ্ন, চীনে গিয়ে প্রতিযোগিতা করা হলো আমার স্বপ্ন এবং আমি বিমানবালা হতে চাই।

এ মেয়েটি একটি চীনা পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। যদিও তার পরিবারের কেউ চীনা ভাষায় কথা বলে না, তবে এ মেয়েটি ৫ বছর বয়স থেকে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করে। চীনা ভাষার প্রতি এতোই আকর্ষণ যে, সে এত বছর ধরে চীনা ভাষা শিখে আসছে। তাহলে আমরা জানতে চাই এ মেয়ের চীনা ভাষার মান কেমন? মঞ্চে কুও ইং ইং চীনের প্রাচীনকালে যুদ্ধের পোশাক পরে চীনের আঞ্চলিক অপেরা—হো নান প্রদেশের অপেরা পরিবেশন করে। আসুন আমরা একসাথে তা শুনি:

বক্তৃতার অংশ হোক, জ্ঞান প্রতিযোগিতার অংশ হোক, অথবা শিল্পকলা সম্পর্কিত মেধা প্রকাশের অংশ হোক, কুও ইং ইং চমত্কার করেছে। ব্যাংককের বিভিন্ন মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তার পরিবেশনা অনেক পছন্দ করেছে এবং সমর্থন দিয়েছে। বিচারক তাকেও অনেক ভালো নম্বর দিয়েছেন। অবশেষে কুও ইং ইংয়ের প্রাপ্ত মোট নম্বরে সে প্রথম স্থান অধিকার করেছে এবং প্রথম পুরস্কার পাওয়া তিন জনের মধ্যে তার ফলাফল সবচেয়ে ভালো।

থাইল্যান্ডে চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স লুই চিয়ান প্রথম পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন:

চীন ও থাইল্যান্ডের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমরা খুব আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে শিক্ষার ক্ষেত্রে চীন ও থাইল্যান্ডের সহযোগিতা ক্রমাগতভাবে দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশে পরিণত হচ্ছে। বর্তমানে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত , বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিন্ডারগার্টেন পর্যন্ত, লোকজনের চীনা ভাষা শিক্ষার আগ্রহ অনেক বেশি। এ থেকে বুঝা যায়, থাইল্যান্ডে চীনা ভাষা শেখা অনেক প্রাণচঞ্চল। তা চীন ও থাইল্যান্ডের মৈত্রীর গভীর উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।

লুই চিয়ান আরো বলেন, তিনি আশা করেন থাইল্যান্ডের মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা চীনা ভাষা শেখার জন্য চেষ্টা করবে। যাতে ভবিষ্যতে চীন ও থাইল্যান্ডের মৈত্রীর দূত হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বিশ্বাস করেন, চীন ও থাইল্যান্ডের শিক্ষা কর্মীদের যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দু'দেশের বেসরকারী মৈত্রী দূতের সংখ্যা আরো বেশি হবে। চীন ও থাইল্যান্ডের মৈত্রী আরো দৃঢ় হবে।

জানা গেছে, বর্তমানে থাইল্যান্ডে চীনা ভাষার কোর্স চালু করা স্কুলের সংখ্যা ১৬০০টিতে দাঁড়িয়েছে। চীনা ভাষা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি। চীন ও থাইল্যান্ডের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ১২টি কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট এবং ১১টি কনফুসিয়াস ক্লাসরুমের সুষ্ঠু উন্নয়ন হচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রীয় চীনা ভাষা কার্যালয় চলতি বছর থাইল্যান্ডে ১২০০ জন চীনা ভাষার স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছে। যাতে থাইল্যান্ডের চীনা ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে সাহায্য দিতে পারে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্যের পাতা
ভিডিও চিত্র
সাক্ষাত্কার
চিঠিপত্র
Play Stop
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040