Web bengali.cri.cn   
হাংচৌ-এর সিহু হ্রদ
  2012-09-26 16:59:19  cri

ক. প্রিয় বন্ধুরা, গান শোনা হল। এবার রূপকথা প্রসঙ্গ। অনুষ্ঠানের শুরুতে আমরা বলেছি, সিহু হ্রদের কাছে দুটি কজওয়ে আছে, এর মধ্যে একটার নাম বাইদি। বাইদি'র পূর্ব দিকে তুয়ানছিয়াও নামে পাথরের একটি ছোট সেতু আছে। চীনের রূপকথা অনুসারে, প্রাচীনকালে এখানে একটি সুন্দর ও দুঃখের প্রেমের ঘটনা ঘটেছিল। এ রূপকথার নাম 'সাতা সাপের কাহিনী'।

খ. হ্যাঁ, আমাদের ছোটবেলায় বারবার এ কাহিনী শুনেছি। চীনের বিভিন্ন অপেরায় এ-কাহিনী ব্যবহার করা হয় এবং আধুনিকালে এ কাহিনী অনুযায়ী অনেক টেলিপ্লেও চিত্রায়িত হয়েছে। তো, রূপকথাটি মোটামুটি এমন: প্রাচীনকালে চীনের সোং রাজবংশে এক সাদা সাপদেবী ১০০০ বছর সাধনা করার পর, সাপ থেকে একজন সুন্দরী নারীতে পরিণত হন। তখন তার নাম হয় 'বাই সু চেন'। তার ছোটবেলায় তাকে এক কালো ইগল ছো মেরে ধরে খেয়ে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু হাংচৌ শহরের কাছে একটি গ্রামের এক শিশু তাকে উদ্ধার করে চিকিত্সা করে এবং বনে রেখে যায়। ১০০০ বছর পর বাই সু চেন সুন্দরী নারী হবার পর সেই ছেলেকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য হাংচৌতে ফিরে আসে। তার তখন একজন পরিসেবিকাও আছে। সেই সেবিকাও সবুজ সাপদেবী থেকে সুন্দরী নারীতে রূপান্তরিত হয়েছিল। দু'জন একসঙ্গে সিহু হ্রদের কাছে এসে তাদের বিশেষ চোখ দিয়ে এ ছেলেকে খুঁজে বের করতে চাইল।

ক. কারণ তারা সাপদেবী। তারা চোখ দিয়ে মানুষের চেহারা দেখে তার পূর্বজীবন দেখতে সক্ষম। হাংচৌ শহরের সিহু হ্রদের কাছে এ ছেলেকে তার শেষ পর্যন্ত খুঁজে পেল। ছেলেটি তখন ভদ্র যুবকে পরিণত হয়েছে। তার নাম স্যু সিয়ান। সাদা সাপদেবী স্যু সিয়ানের প্রেম পড়ে যায় এবং তাকে বিয়ে করে। তবে তাদের সুখী জীবন স্থায়ী হয়নি। ১০০০ বছরের আগের সেই কালো ঈগল ততোদিনে পূনর্জন্ম নিয়েছে এক সন্ন্যাসী হয়ে। সন্ন্যাসী স্যু সিয়ানকে ধরে মন্দিরে আটক করে রাখে। সাদা সাপদেবী নিজের স্বামীকে উদ্ধার করার জন্য রাগ করে সমুদ্রের পানি দিয়ে বন্যা সৃষ্টি করে মন্দিরটি প্লাবিত করে। ফলে অনেক নিরীহ সন্ন্যাসী বন্যায় প্রাণ হারায়। তখন সাদা সাপদেবী গর্ভবর্তী ছিল, কয়েক মাস পর দেবী একটি ছেলে-শিশুর জন্ম দেয়। তারপর স্বর্গের দেবতারা নিরীহ লোকদের হত্যা করার জন্য শাস্তিস্বরূপ সাদা সাপদেবীকে সিহু হ্রদের লেইফেং প্যাগোডায় আটক করে রাখে।

খ. ততোদিনে দেবীর স্বামীও মন্দিরে থেকে সন্ন্যাসীতে পরিণত হয়। ১৮ বছর পর সাদা সাপদেবীর ছেলে রাজপ্রাসাদের পরীক্ষায় সবচেয়ে ভালো ফলাফল করে রাজপ্রাসাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পায়। একদিন সে মা-বাবার গল্প শুনে, লেইফেং প্যাগোডায় এসে মাকে দেখে। অবশেষে স্বর্গের দেবতারা মা-ছেলের ভালোবাসায় মুগ্ধ হন; তারা সাদা সাপদেবীকে প্যাগোডা থেকে মুক্তি দেন।

কাহিনীটি ভারি সুন্দর, তাই না?

ক. হ্যাঁ, কাহিনীটি সুন্দর। তাহলে এবার এ-সম্পর্কিত একটা সুন্দর গান শোনা যাক। গানের নাম 'হাজার বছর পর আবার দেখার জন্য অপেক্ষা করি'। গানের কথা মোটামুটি এমন: হাজার বছরের পর আবার দেখা হবার পর আমি কোনো অনুতাপ করি না/ কে আমার কানের কাছে বলেছে, চিরদিন আমাকে ভালবাসে/ এ কথার কারণে আমি অপেক্ষা করার জন্য কোনো অনুতাপ করি না...

খ. শ্রোতাবন্ধুরা, আশা করি গানটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন সিহু হ্রদ ভ্রমনের কিছু টিপস জানিয়ে দিচ্ছি। বিদ্যুত্চালিত যানে চড়ে সবচে দ্রুত সিহু হ্রদে বেড়াতে যাওয়া যায়। এ ধরনের যান হ্রদের আশেপাশে সবসময় পাওয়া যাবে। আপনি চাইলেই যানের চালক আপনাকে নিয়ে হ্রদের চারপাশ ঘুরিয়ে দেখাবে। যানে পথনির্দেশও থাকে।

ক. প্রতিদিন সকাল ৮:৩০ থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুতচালিত এসব যান পাওয়া যায়। আর গ্রীষ্মকালে ৮:৩০ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পাওয়া যায় এ-ধরনের যান। সিহু হ্রদ এলাকা ঘুরে দেখতে মোটামুটি ৭০ মিনিট এবং ৪০ ইউয়ান লাগবে। এখানে বলে রাখি, চীনের ১ ইউয়ান বাংলাদেশের প্রায় ১৪ টাকার সমান। সিহু হ্রদের কাছে বেশকিছু ভালো হোটেল পাওয়া যায়। প্রতিদিন হোটেলের ভাড়া প্রায় ২০০ ইউয়ান।

খ. অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আমরা এক শ্রোতাবন্ধুর চিঠি পড়তে চাই। বাংলাদেশের জেলা:- চুয়াডাঙ্গা গ্রাম:- কামালপুর ইয়ং রেডিও লিসেনার্স ক্লাবের সভাপতি মো: নাঈমুর রহমান তাঁর চিঠিতে লিখেছেন,

"চলুন বেড়িয়ে আসি অনুষ্ঠানে আপনারা চীনের যে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের বর্ণনা করেন, তার কিছু ছবি ও ভিডিও চিত্র যদি আপনাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেন তাহলে খুব ভাল হবে বলে আমি মনে করি। কারণ আমরা অনুষ্ঠান শোনার পাশাপাশি আপনাদের ওয়েবসাইটে তা দেখতে পারব।"

ক. জনাব রহমান আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করেন, তাহলে নতুন ওয়েব পৃষ্ঠা দেখতে পাবেন। আমাদের পর্যটন অনুষ্ঠান সম্পর্কে একটি পৃষ্ঠাও রয়েছে, সেখানে আমাদের অনুষ্ঠানের ওডিও ও ছবি খুঁজে পাবেন।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এখন এ সপ্তাহের কুইজ প্রতিযোগিতার প্রশ্ন জানিয়ে দিচ্ছি। প্রশ্নটি হচ্ছে: কোন সালে সিহু হ্রদ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব উত্তরাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে?

খ. প্রশ্নটি আবার বলছি: কোন সালে সিহু হ্রদ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব উত্তরাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে?

আজকের অনুষ্ঠান শেষ করার আগে আরেকটি সুন্দর গান প্রচার করবো।

ক. গানের নাম 'স্বপ্নের স্বর্গ'। এটি হাংচৌ শহরের গান।(সুবর্ণা/আলিম)


1 2
মন্তব্য
মন্তব্য
লিঙ্ক