Web bengali.cri.cn   
চীনা সংস্কৃতি:太(tài)極(jí)拳(quán)
  2014-08-20 15:29:46  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, যারা পেইচিংয়ে থাকেন তারা দেখবেন যে, সকালে অনেক চীনা মানুষ বিভিন্ন পার্কে গিয়ে শরীর চর্চা করে। আর শরীর চর্চার মধ্যে একটি হল 'থাই চি ছুয়ান', অনেক চীনা কুংফু চলচ্চিত্রেও এমন মার্শাল আর্ট দেখা যায়। আজকে 'স্বর্ণার সাথে শিখুন' আসরে চীনের এ মার্শাল আর্ট-থাই চি ছুয়ানের কথা জানাবো আমি ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক চীনা এবং বিদেশী মানুষরা চীনের সুদীর্ঘ ইতিহাসের এক ধরনের মার্শাল আর্ট-থাই চি ছুয়ানের ওপরে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এর কারণ কী?

থাই চি ছুয়ান আসলে এক ধরনের বক্সিং চর্চা, মার্শাল আর্ট, বা শরীর চর্চার এক ধরনের ব্যবস্থা। এর চর্চা খুব ধীর, নম্র এবং সুন্দর। তা দীর্ঘদিন চর্চা করলে শুধু মানুষের শরীর শক্তিশালী করে তুলতে পারে তা নয়, মানুষের চিন্তাশক্তি এবং স্বাস্থ্যের অবস্থাও উন্নত হতে পারে।

এ থাই চি বক্সিং চীনের ইন ইয়াং দর্শনের ভিত্তিতে গঠিত হয়। ইন এবং ইয়াং যেন একটি কয়েনের দু'পাশ। সব জিনিসের মধ্যে ইন এবং ইয়াং দুই চরম শক্তি থাকে এবং এ দুই শক্তি'র সমন্বয়ের মাধ্যমে সব জিনিসের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে। যেমন থাই চি ছুয়ান চর্চার সময়, স্থীর ও গতিময়তা দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। আর গতির সময় গতিবেগ ও ধীরে চলা দুটোই এক্ষেত্রে সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। থাই চি ছুয়ানের সময় অঙ্গ প্রতঙ্গের নড়াচড়া বেশ শান্তশীষ্ঠ এবং খুব ধীর গতির হয়, কিন্তু আসলে তা দ্রুত গতিতেও করা যায়। ধীর গতিতে করা হলো শক্তি সঞ্চয় করা এবং প্রচণ্ড গতিতে আক্রমনের প্রস্তুতি নেয়া। তাই থাই চি হলো এ দু'ধরনের বিপরীতমুখী শক্তি সমন্বয়ের এক মহান শিল্প।

থাই চি ছুয়ানের আরেকটি নিয়ম হল আক্রমণকারী প্রতিপক্ষকে শক্তি দিয়ে আঘাত দেয়া। থাই চি ছুয়ান বক্সিং করার সময় সব মুভমেন্ট প্রতিপক্ষের চেয়ে একটু ধীর হয়, কারণ এভাবে প্রতিপক্ষের পরবর্তী মুভমেন্ট দেখে বুঝে তাকে পাল্টা আক্রমন করা যায়। প্রতিপক্ষের খুব শক্তিশালী আক্রমন মোকাবেলায় মাঝে মাঝে শুধু একটু নম্র মুভমেন্ট দিয়ে এড়িয়ে দিয়ে নিজেকে বাঁচানো যায়। তারপর যখন তার আক্রমনের শক্তি দুর্বল হয়, সঙ্গে সঙ্গে তাকে কার্যকর আঘাত হানতে হয়। তাই থাই চি হল কম শক্তি দিয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা এবং আত্মরক্ষা থেকে আক্রমণ চালানোর একটি শিল্প।

তাছাড়া থাই চি ছুয়ান চর্চা চীনের ঐতিহ্যবাহী চিকিত্সা তন্ত্র মেনে শরীরের শক্তি দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করা যায়। শরীরের মাংসপেশিগুলো শ্লথ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রসারিতও করা যায়। এভাবে শরীরের রক্তসঞ্চালন বেড়ে যায় আর শরীর এবং মনের সমন্বয় করা যায়।

তাই থাই চি এখন শুধু চীনে নয় সারা বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি মানুষের শরীর চর্চার একটি ভাল পদ্ধতি। এতে সুস্থ শরীর ও মনের শান্তি পাওয়া যায়।

সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের কনফুসিয়াস ক্লাসরুম এ পর্যন্তই। আপনারা ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন। জাই চিয়ান।

(ইয়াং ওয়েই মিং/তৌহিদ)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক