Web bengali.cri.cn   
চীনা সংস্কৃতি: চীনা ভাষার ক্যালিওগ্রাফি 中(zhōng)國(guó)書(shū)法(fǎ)
  2014-10-21 11:25:38  cri

সুপ্রিয় শ্রোতা, এখন শুরু হচ্ছে 'স্বর্ণার সাথে শিখুন' আসর। আজকের এ আসরে আপনাদের জানাবো চীনা ভাষার ক্যালিওগ্রাফি中(zhōng)國(guó)書(shū)法(fǎ)।

সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং তাঁর স্ত্রী ফেং লি ইউয়ান ভারত সফরকালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে সফর করতে গিয়েছেন। ফেং লি ইউয়ান সেখানকার চীনা ভাষা জানা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের চীনা ভাষার ক্যালিওগ্রাফির শিক্ষা দিয়েছেন।

ক্যালিওগ্রাফি চীনা ভাষায় বলা হয়書(shū)法(fǎ), মানে লেখার শিল্প। প্রাচীনকালে চীনে লেখার কলম ছিল ভেড়া বা নেক্রের লেজের লোম দিয়ে তৈরী ব্রাশ। চীনের ক্যালিওগ্রাফি চীনা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

প্রত্যেক চীনা অক্ষর একটি ছবি'র মতো। তাই ক্যালিওগ্রাফি লেখার সময়েও ছবি আঁকার মতো, লাইনগুলো কিভাবে লেখা হয়, বা বিভিন্ন লাইনের মধ্যে কত জায়গা রাখা হয় তার ওপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়। লেখার গঠন এবং সৌন্দর্য খুব গুরুত্বপূর্ণ চীনা ক্যালিওগ্রাফির মধ্যে।

চীনের ক্যালিওগ্রাফির ইতিহাস ৩ হাজারেরও বেশি বছরের। প্রাচীনকালে সুবিখ্যাত ক্যালিওগ্রাফি শিল্পীর মধ্যে ওয়াং শি জি, ওয়াং শিয়েন জি, জাং সুই এবং ইয়েন জেন ছিং রয়েছে। ক্যালিওগ্রাফি সংক্রান্ত তাদের অনেক মজার মজার গল্পও রয়েছে।

ওয়াং শিয়েন জি ছিলেন ওয়াং শি জি'র সন্তান। তিনি যখন মাত্র সাত বছর ছিল তখন তার বাবা ওয়া শি জি'র কাছ থেকে ক্যালিওগ্রাফি শিখতে শুরু করেছে। ক্যালিওগ্রাফি চর্চায় তার বাবা'কে ছাড়িয়ে যাবার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু তার মা তাকে বলেছে, ভাল ক্যালিওগ্রাফার হতে চাইলে অনেক কঠিন চর্চা দরকার। এরপর ওয়া শিয়েন জি পাঁচ বছর ধরে ক্যালিওগ্রাফি সাধনা শুরু করেন। একদিন তিনি তার লেখা大 অক্ষরটি গর্বের সঙ্গে তার বাবা'কে দেখিয়ে দিয়েছে। তার বাবা ছেলে'র লেখা দেখে কোন কথা না বলে, শুধু তার লেখার নিচে এক ফোটা চিহ্ন যোগ দিয়েছে। তারপর ওয়াং শিয়েন জি তার মা'কে লেখাটি দেখাতে দিয়েছে। তারপর গর্বের সঙ্গে তার মা'কে বলল, 'মা, আমি পাঁচ বছর চর্চা করেছি। দেখো তো, আমার লেখা কি বাবা'র মতো কিছু হয়েছে?' তার মা অক্ষরটি দেখার পর বলল, 'তোমার লেখার এ ফোটাটি দেখতে তোমার বাবার মতো'। মা'য়ের কথা শুনে ওয়াং শিয়ে জি খুব লজ্জা পান এবং তখন থেকে ক্যালিওগ্রাফি শেখার জন্য আরো পরিশ্রম করা শুরু করেন। আস্তে আস্তে তার সুনাম সত্যি তার বাবা'কে ছাড়িয়ে যায়।

আসলে জীবনে শুধু ক্যালিওগ্রাফি নয়, সব কাজে মনোযোগ দিয়ে বা চর্চা বা সাধনা করলে অবশেষে সাফল্য অর্জন করা যায়। শ্রোতাবন্ধুরা, এটিই হল চীনের ক্যালিওগ্রাফির কিছু কথা। আজকের কনফুসিয়াস ক্লাসরুম এ পর্যন্তই। আপনারা ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়ান।

(ইয়াং ওয়েই মিং/তৌহিদ)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক