Web bengali.cri.cn   
হ্যালো চায়না: ১১. কাগজ
  2016-03-18 14:31:03  cri

১৮০০ বছর আগে, চীনারা কাগজ আবিষ্কার করে। কিন্তু কাগজ আবিষ্কারের আগের দিনগুলো ছিল খুব কঠিন। কারণ, তখন কিছু লিখে রাখার প্রয়োজন হলে মানুষকে অনেক পরিশ্রম করতে হতো। তখন যদি চীনের কোনো পণ্ডিত বই লিখতে চাইতেন, তাকে একটি গোটা বাঁশবন কেটে ফেলতে হতো। ইউরোপে একটি বাইবেল রচনার জন্য তিনশ'রও বেশি ভেড়ার চামড়ার প্রয়োজন হয়েছিল।

ষষ্ঠ শতাব্দীতে কাগজ তৈরির পদ্ধতি উত্তর কোরিয়া ও জাপানে ছড়িয়ে পড়ে, তারপর আরব ও মিশর হয়ে ইউরোপে যায়। তখন থেকেই ইউরোপের মানুষ কাগজ তৈরি ও ব্যবহার শিখেছে।

বর্তমানে কাগজ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় উপাদানে পরিণত হয়েছে। কাগজ ছাড়া আমাদের একদিনও চলে না। প্রাচীনকালের কাগজ আর বর্তমানের কাগজ দেখতে কিছুটা ভিন্ন হলেও, এর কাঁচামাল মূলত একই। এর প্রধান কাঁচামাল হলো গাছ, কাঠ, ধানের খড় ইত্যাদি।

বর্তমানে কাগজ তৈরির পদ্ধতিতেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে হাতে তৈরি হতো কাগজ। বর্তমানে খুব সহজেই যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কাগজ তৈরি হচ্ছে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছুরই পরিবর্তন হচ্ছে। দিন দিন আধুনিক হয়ে উঠছে সবকিছু। কাগজের আবিষ্কার মানব সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে অনেকদূর এগিয়ে দিয়েছে।

এখানে একটা প্রশ্ন মনে জাগা স্বাভাবিক। প্রশ্নটা হচ্ছে: প্রাচীন চীনে কীভাবে কাগজ আবিষ্কৃত হয়েছিল। প্রাচীন চীনের মানুষ পশুর হাড় ও কচ্ছপের খোলে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি খোদাই করে রাখত। কিন্তু এ প্রক্রিয়া ছিল খুবই কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। তারপর মানুষ বাঁশ ও রেশমি কাপড়ে লিখে রাখা শুরু করল। কিন্তু বাঁশ খুব ভারি এবং রেশমি কাপড় খুবই দামি। এমনি এক প্রেক্ষাপটে হান রাজবংশ আমলে ছাই লুন নামক এক ব্যক্তি কাগজ তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।

তিনি একবার ভ্রমণে বের হয়ে ছোট একটি নদীর ওপর দেখতে পান যে, কিছু আবর্জনা পচে যাবার পর হালকা রেশমি পশমের মতো তৈরি হয়েছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরেই গাছের ছাল ও অন্যান্য জিনিস পানিতে ডুবে ছিল। এ থেকে তিনি একটি বুদ্ধি পান। তিনিও গাছের ছাল, সুতি কাপড়, মাছ ধরার পুরানো জাল কেটে পানিতে ডুবিয়ে রাখেন। তার কিছুদিন পর সেগুলো পচে এক ধরনের মণ্ড তৈরি হয়। এরপর এ মণ্ডকে বাষ্পীভূত করে মাদুরের ওপর বিছিয়ে রাখেন এবং রোদে শুকিয়ে নেন। নির্ধারিত সময় পর সেগুলো কাগজে পরিণত হয়। আর এভাবেই তৈরি হয় প্রথম কাগজ এবং চীনারা কাগজের ব্যবহারও শুরু করে তখন থেকে। (স্বর্ণা/আলিম)

সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন
মন্তব্য
লিঙ্ক