চলতি বছর 'সূর্য গ্রাম' নিজের কাজের পরিসর বাড়িয়েছে। গ্রামে 'জুরাসিক পার্ক ডাইনোসর প্রদর্শনী' স্থাপিত হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে সি'আন, নান ছাং ও সিন সিয়াং শহর থেকে সূর্য গ্রামের শাখা থেকে শিশুরা পেইচিংতে আসে এবং পেইচিংয়ের শিশুদের সাথে ছুটি কাটায়। শিশুদের জন্য এসময় বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শিশুরা পরস্পরের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। শিশুরা দ্রুত নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে এবং ডাইনোসর প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা ড্রাম বাজিয়ে উপস্থিত অতিথিদের প্রশংসা পেয়েছে।
সূর্য গ্রামে এখন নিয়মিত ডাইনোসর বিষয়ক সিনেমার প্রদশর্নী হয় এবং এ বিষয়ে বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। সূর্য গ্রামের উপদেষ্টা, চীনা তরুণ পত্রিকার প্রচার বিভাগের প্রধান ওয়াং কুও ছি মনে করেন, এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সূর্য গ্রাম এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, যেখানে শিশুরা ভালবাসা ও যত্ন পাওয়ার পাশাপাশি জ্ঞানও অর্জন করতে পারে। তিনি বলেন- "আশা করি সবাই এসব প্রদর্শনীর মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। সূর্য গ্রামে সামাজিক উষ্ণতা আছে, আছে শেখার পরিবেশ।"
সূর্য গ্রামের শিশুরা গ্রামে উৎপাদিত ফলমূল দিয়ে বিভিন্ন বৈশিষ্টপূর্ণ খাবার রান্না করতে শিখছে। সূর্য গ্রামে আসা প্রত্যেকেই তাদের সেই রান্না খেতে পারেন। এখানে ছোট ছোট দোকানে এসব খাবার বিক্রি হয়। এসব অর্থ শিশুদের হিসেবেই জমা থাকছে। এভাবেই তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি, নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর দিক্ষা নিচ্ছে।
একজন মা তার তিন বছর বয়সী সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন। সূর্য গ্রামের শিশুদের দেখে তিনি অভিভূত হয়েছেন। বাবা-মা কাছে নেই বলে তাদের জীবন অনেক কঠিন ও দুঃখের হলেও, তাদের স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠা তার মনে গভীর ছাপ ফেলে। তিনি আশা করেন তার নিজের শিশু-সন্তানটিও সূর্য গ্রামের শিশুদের মতো স্বাধীন হতে পারবে। তিনি বলেন- "আমার শিশু-সন্তানটিও যদি এদের মতো স্বাবলম্বী হয়ে গড়ে উঠতে পারে, তবে ভালো হয়।"
তবে এতোকিছুর পরও একথা বলতেই হবে যে, সূর্য গ্রামের ব্যবস্থাপনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে গ্রামের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি অর্থ ও লোকবল লাগবে। আশা করি, সমাজের অনেকেই কয়েদিদের শিশু-সন্তানদের জীবন গড়ার এ মহান কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন।