1211yin
|
চীনের দ্রুত গতির রেলপথ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট মূল প্রতিষ্ঠান চীনের দক্ষিণ রেলওয়ে সিএসআর কর্পোরেশন লিমিটিড-এর একটি শাখা কোম্পানি 'জুজৌ ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ কো. লিমিটেড জেডইএলসি'র একটি বিখ্যাত কারখানা আছে। গত বছরের জুলাই মাসে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং কারখানাটি পরিদর্শন করে চীনা নির্মাণ শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে দেশের বাইরে কাজ করার প্রতি উত্সাহ দিয়েছেন। এখন কারখানাটিতে দশ-বারটি বিভিন্ন ধরনের ট্রেন সুশৃঙ্খলভাবে সংযোজন করা হচ্ছে। জেডইএলসি'র সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান হান জুন জানালেন, এখানকার উত্পাদিত দশ-বারটি ট্রেন বিদেশে বিক্রি করা হবে। তিনি বলেন,
'আমরা বিভিন্ন জায়গার চাহিদা ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ট্রেন তৈরি করি। বর্তমানে দশটির বেশি দেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। এসব দেশের মধ্যে আছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইথিওপিয়া। চলতি বছর আমরা ম্যাসিডোনিয়ার কাছ থেকেও কার্যাদেশ পেয়েছি।'
আন্তর্জাতিক বাজারে জার্মানির সিমেন্স, ফ্রান্সের আলস্টম, জাপানের কাওয়াসাকি এবং কানাডার বোমবার্ডিয়ার সাথে তীব্র প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে চীনের শিল্প-প্রতিষ্ঠানকে। এ প্রসঙ্গে হান জুন বলেন,
'মালয়েশিয়া থেকে কার্যাদেশ পেতে আমাদের দশ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ কার্যাদেশের মূল্য ৩৮০ কোটি ইউয়ান। চীনের ট্র্যাক নির্ভর যানবাহন সাজ-সরঞ্জাম খাতে বিদেশ থেকে পাওয়া বৃহত্তম কার্যাদেশ এটি'।
এ পর্যন্ত জেডইএলসি মালয়েশিয়া থেকে পাঁচটি কার্যাদেশ পেয়েছে। মালয়েশিয়ার জন্য ট্রেনের বগি নির্মাণের সময় উচ্চমান বজায় রাখার পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় সংস্কৃতিকেও। এসব ট্রেনে নারীদের জন্য বিশেষ কোচ থাকবে, থাকবে মুসলমানদের নামাজ পড়ার জায়গা। বর্তমান জেডইএলসি ৮৪টি দেশ ও অঞ্চলে পণ্য রপ্তানি করেছে। এ ছাড়া তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া ও আর্জেটিনাসহ বিভিন্ন দেশে কারখানা নির্মাণ করেছে। এসব কোম্পানিতে ৫ হাজারেরও বেশি বিদেশি কর্মী কাজ করছে। এ ছাড়া, জেডইএলসি দ্রুতগতির রেলওয়ে সম্পর্কিত ৫৯টি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রণয়নে অংশ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, সিএসআর মালয়েশিয়ায় আন্তঃনগর দ্রুতগতির রেলপথ মেইনটেনিস-কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। এতে স্থানীয় কর্মীর সংখ্যা ৭০ শতাংশেরও বেশি। এ ধরনের পদক্ষেপ বিদেশে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এ সম্পর্কে জেডইএলসির কমিউনিস্ট পার্টি সম্পাদক ফু ছেংজুন বলেন,
'আসলে বিদেশে আমরা সব চীনা শিল্প-প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা পণ্য ও সেবার মান উন্নত করার চেষ্টা করছি। আমাদের নীতি হলো, সদিচ্ছার মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি পূরণ করা।'
তা ছাড়া সিএসআর অধিগ্রহন ও একত্রীকরণের মাধ্যমে বিদেশে বাজার সম্প্রসারণ করে। কোম্পানিটি ব্রিটেন, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে ৬টি শিল্প-প্রতিষ্ঠান কিনেছে। এ জন্য কোম্পানিটি ব্যয় করেছে ৪ বিলিয়নেরও বেশি রেনমিনপি। 'এক অঞ্চল, এক পথ' কৌশলে চীনা প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সম্পর্কে সিএসআরের মহাপরিচালক জেং ছাংহোং বলেন, এটি চীনা যন্ত্রপাতি উৎপাদন শিল্পের বিদেশে কাজের নতুন সুযোগ ডেকে আনবে। তিনি বলেন,
'এক অঞ্চল, এক পথ'-এ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অবকাঠামো নির্মাণ। সিএসআর 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর অনেক দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখে। দ্রুতগতির রেলপথ প্রকল্প দেশের বাইরে যাওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় দ্রুতগতির রেলপথ প্রকল্প সংক্রান্ত আলোচনা ইতিবাচকভাবে চলছে।
প্রেমা/তৌহিদ